Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যায় ৩৩ কোটি টাকার ক্ষতি, ১৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৯, ২:১১ পিএম

ফারাক্কা বাঁধের সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে বাড়ছে বন্যার আশঙ্কা। বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যাও। বন্যায় ১৩ হাজার পরিবার দুর্ভোগে পড়েছে। এছাড়া প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল (মাসকলাই, শাকসবজি, হলুদ, কলা, কুল ও পেয়ারা বাগান) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে এসব জমির ফসল পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর সব মিলিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৩ কোটি টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত ২০ হাজার কৃষক। চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় গত ১৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার (বিপদসীমা ২০.৫০) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে মহানন্দায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদসীমার শূন্য দশমিক ২২ সেন্টিমিটার (বিপদসীমা ২১ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে সোমবার ফারাক্কা বাঁধের সবক’টি গেট খুলে দেওয়ার পর যে হারে পানি বাড়ছিলো, দুই দিন পর এখন পানি বাড়ার সেই হার কমতে শুরু করেছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানান, ‘বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪ অক্টোবর পর্যন্ত পদ্মায় পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার থেকেই পানি কমতে শুরু করবে বলে আমরা ধারণা করছি।’ এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের পৌর এলাকায় কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও নদীভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম জানান, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পৌর এলাকার চরমোহনপুর, নামোশংকরবাটি ও বড়িপাড়া এলাকার নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত বেশ কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’ পানি বাড়তে থাকায় গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের মহানন্দা নদী তীরবর্তী কাশিয়াবাড়ি, বাবুপুর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৌদুদ আলম জানান, এখন পর্যন্ত সদর উপজেলায় সাড়ে পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলায় এখন পর্যন্ত চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় আট হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে ২৬ মেট্রিক টন চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। তিনি আরও জানান, ‘অকাল এ বন্যায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্লাবিত এলাকার প্রায় ৫০ হাজার গবাদিপশুর জন্যও প্রতিদিন দুই কেজি হারে গো-খাদ্যের বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। ঋহস্পতিবার বিকাল নাগাদ শুকনো খাবার ও গো-খাদ্যের বরাদ্দ আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে এবং তা বিতরণ করা হবে।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা জানান, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে আরও প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ফসল ও বিভিন্ন ফলের বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম তাজকির-উজ-জামান জানান, ‘বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকালে জরুরি সভা হয়েছে। এছাড়া যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন সজাগ রয়েছে।’



 

Show all comments
  • Md. Aman Ullah Talukder ৩ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:০৬ পিএম says : 0
    Concerned authority of Bangladesh should seek some sorts of help (in cash or kind) to neighbor country.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা পরিস্থিতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ