পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার থেকে ৪৮৩ টন পেঁয়াজ এসেছে। আরও ৪০০-৫০০ টন আজ আসবে। এতে কাল (বৃহস্পতিবার) বা পরশুর মধ্যে পেঁয়াজের দাম ৬০-৭০ টাকায় চলে আসবে। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ একথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। আমরা একটা কস্টিং পেয়েছি, অনেক কিছু ওয়েস্ট হতে পারে, প্লাস প্রফিট ধরে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
পেঁয়াজ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য নিজেদের পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, আমাদের এটা করতে হবে যাতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হই। এটাই একমাত্র স্থায়ী সমাধান। তিনি বলেন, সব ভোক্তা যদি একসঙ্গে কিছুদিন পেঁয়াজ না কেনে তাহলে এর একটা প্রভাব বাজারে পড়ে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় এর প্রভাব পড়তে দেরি হওয়ার কথা থাকলেও দেরি হয়নি। দ্রুতই দাম বেড়েছে। তবে দাম কমানোর সুযোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, পেঁয়াজ ভারত থেকেই বেশি আসত। ভারতেও দাম বেশি বর্তমানে। আজ (বুধবার) সকালে টেকনাফ বন্দরে ৪৮৩ টন পেঁয়াজ ঢুকেছে। আরও ৪০০ থেকে ৫০০ টন ঢুকবে। পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে এবং বেশি লাভ করলে ৬০ টাকার বেশি দাম হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণ পৃথক করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দুই রকম নির্ধারণ করা তো যাবে না, এক রকমই করতে হবে। হিসাব করে আলোচনা করতে হবে কী পরিমাণ দাম ফিক্সড আপ করে দিলে ভালো হয়।
তিনি বলেন, সবসময় বিদেশি পেঁয়াজের চেয়ে দেশি পেঁয়াজের দাম বেশি থাকে, ৫-৭ টাকা বেশি থাকে। আমাদের পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর কথা নয়, সেটা তো দেশেই থাকে। সব বিবেচনা করে একটি পয়েন্টে আসতে চাই, যাতে এ দামে সবাই নিতে পারে।
পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ দ্রুত আনা যায়। ল্যান্ডেড কস্ট ৪২-৪৩ টাকা, ঢাকায় আনার খরচ লাভ নিয়ে দাম ৫৫ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তারপরও বাজারে তো দাম বেশি। আমরা চেষ্টা করছি দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে।
টিপু মুনশি বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, বেশকিছু বাজারে জরিমানা করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আশা করছি দাম কমবে। দাম বাড়ার কারসাজিতে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন কমিটি করা হয়েছে, বিভিন্ন বাজারে যাচ্ছে তারা। আমরা নিজেরাও ৪৫ টাকা করে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করছি। দাম বেড়ে এ পর্যায়ে যাওয়া উচিত নয়। আজ-কালকের মধ্যে এর প্রভাব বাজারে পড়বে। তিনি বলেন, কার কাছে কী পরিমাণ স্টোর আছে তা দেখছি এবং পেঁয়াজ কিন্তু বেশি দিন রাখতে পারবে তাও না। টিসিবির কাছে কত স্টক আছে তার কিন্তু ভর্তুকি দিয়ে দেয়, ৬০ টাকায় কিনে তারা বিক্রি করছে যাতে সাধারণ মানুষ সুবিধা পায়।
টিসিবির বিক্রি বাড়ানো হবে কি না জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, এ বিষয়ে টিসিবির সঙ্গে কথা বলা হবে। দেশে উৎপাদিত হলেও ৭-৮ লাখ টন ঘাটতি থাকে। ভারতে এখন দাম ৯০ রুপির মতো। ভাগ্য ভালো যে মিয়ানমার থেকে কম দামে পাচ্ছি।
টিপু মুনশি বলেন, পেঁয়াজ আমদানির জন্য প্রচুর এলসি ওপেন হচ্ছে, মিয়ানমার থেকে আসায় খুব পজিটিভ হয়েছে। ভারত থেকে রফতানি বন্ধ হবে চিন্তাও করিনি, এটার ওপর তো কারও হাত নেই। আমাদের স্বাবলম্বী হতে হলে ৭-৮ লাখ টন বেশি উৎপাদন করতে হবে।
ভারত রফতানি বন্ধ ঘোষণার পর থেকে বাংলাদেশের বাজারে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। দেশের খুচরা বাজারে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। এ পরিপ্রেক্ষিতে আবারও আশ্বাসের বাণী শোনাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
এদিকে দাম বাড়তি হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের ক্রেতা কমে গেছে। বিক্রেতারাও বলছেন, তাদের বেচাকেনা অর্ধেকে নেমে এসেছে। কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা মো. দুলাল খান বলেন, দাম বাড়ায় সারাদিনে এক বস্তা পেঁয়াজও বিক্রি করতে পারিনি।
কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আনোয়ার বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আমরা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষেরা খুব কষ্টে আছি। বাইরের দেশে ঘাটতি পড়লে কোনো জিনিসের দাম বাড়ে। আর আমাদের দেশে শোনামাত্রই দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজারে তো কোনো পেঁয়াজের ঘাটতি দেখছি না। গোডাউনে হয়ত আরও বেশি আছে। কিন্তু পাবলিকের খাওয়াবে না। তিনি বলেন, আগে যেটুকু পেঁয়াজ লাগত এখন কেনার ক্ষেত্রে তার চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন তো পেঁয়াজ খাওয়া বাদ দিতে হবে।
পেঁয়াজ আমদানিতে সর্বোচ্চ সুদ ৯ শতাংশ
পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্রে সর্বোচ্চ সুদের হার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স¤প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারেও পেঁয়াজের মূল্যে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে পেঁয়াজ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত ও পেঁয়াজের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধকল্পে পেঁয়াজ আমদানির অর্থায়নের সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, পেঁয়াজ আমদানি ঋণপত্র (এলসি) স্থাপনের ক্ষেত্রে মার্জিনের হার ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্য ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেওয়া হলো। এ ছাড়াও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংকের এ নির্দেশনা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।