Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চুনোপুটি নয়, দুর্নীতির রাজা-রাণীদের ধরুন

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

সত্যি সত্যি দুর্নীতিবাজদের ধরতে চাইলে চুনোপুটি নয়, দুর্নীতির সম্রাট, রাজা, রাণী, বাদশাহদের ধরার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, অবৈধ সরকার জনগণের মধ্যে ইলিউশন তৈরির জন্য কথিত ক্যাসিনো, জুয়া এবং মাদকবিরোধী শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছিল। ৬-৭ জনকে ধরার পর থলের বিড়াল বেরিয়ে আসলে লোক দেখানো অভিযান স্থান হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ-যুবলীগের মাঝারি নেতাদের ঘরে ঘরে অবৈধ টাকার সিন্দুক। ভল্ট, টাকশাল, কাড়িকাড়ি টাকা, সোনা-দানার খনি আবিস্কার হওয়ার পর বড় নেতারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। চারদিক থেকে যখন রাঘব-বোয়ালদের বিরুদ্ধে অভিযানের দাবি জোরালো হচ্ছে তখনই থামিয়ে দেয়া হয়েছে অভিযান। রাঘব বোয়াল ও দুর্নীতির রথি মহারথীদের সুতোর টানে এগুতে পারছে না অভিযান। গতকাল (রোববার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার যদি মনে করে, দুর্নীতির জন্য অন্যদল থেকে আওয়ামী লীগে যাওয়া লোকজন দায়ী তাহলে সরকারের উচিত এক সপ্তাহের মধ্যে সেসব দুর্নীতিবাজদেরকে তাদের দল থেকে জরুরি ভিত্তিতে খুঁজে বের করা। তিনি বলেন, সরকারের নেতারা বলছেন, সুশাসনের আমেজ দিতেই নাকি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। হাস্যকর এই চমক আর আমেজ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো চুনোপুটিদের অফিস বাড়িতে সিন্দুকে শত শত কোটি টাকার স্টক। সহজেই অনুধাবন করা যাচ্ছে- রাঘব বোয়ালদের কাছে রয়েছে রাষ্ট্রের লুট হওয়া লাখো কোটি টাকা। সরকার দেশকে হরিলুটের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে। খবরে বলা হচ্ছে- ক্যাসিনোর চেয়েও বড় দুর্নীতি হয় পরিবহন সেক্টরে-কেবল রাজধানীতেই প্রতিদিন ১০/১২ কোটি টাকার চাঁদা ওঠে। অথচ সংশ্লিষ্ট ক্ষমতাসীন নেতা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই দুর্নীতি, মাদক, জুয়া ও কালোটাকার মালিকদের বিরুদ্ধে কম্বিং অপারেশন চালাতে চাইলে বিনাভোটের অবৈধ দুর্নীতিবাজ সরকার যদি মাথার ওপর বসে থাকে তাহলে সেটি জনগণের কাছে নাটক ছাড়া অন্যকিছু মনে হবে না।
জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় আওয়ামী লীগ নানারকম মিথ্যাচার এবং ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, অভিযানের নামে কয়েকটা চুনোপুটি ধরার পর জনগণের সামনে দুর্নীতিবাজ সরকারের আসল চেহারা উন্মোচিত হয়ে পড়ায় সরকারের মন্ত্রীরা এখন স্বাভাবিক বোধবুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্বাস করে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অজানা ছিল না। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিজেদেরকে সরকারদলীয় বাহিনীতে পরিণত করায় এতদিন তারা কাসানোতে অভিযান চালাতে সাহস করেনি।
দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অপেক্ষা করা মানে প্রধানমন্ত্রীকেও দুর্নীতির অংশীদার বানিয়ে ফেলা। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া যায় তাহলে তো বলতেই হবে, গত এক যুগ প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, লালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুমতি দেননি বলে এই সুযোগে বাংলাদেশ থেকে ৬ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়ে গেছে, দেশের ব্যাংকগুলো খালি হয়েছে আর বেড়েছে সুইস ব্যাংকে শাসকগোষ্ঠীর জমা রাখা টাকার পরিমাণ। ঋণখেলাপির পরিমাণ বেড়ে এখন ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। অথচ রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ব্যাংকসহ ১১টি ব্যাংক এখন মূলধন সংকটে।
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, আপনাদের গায়ের পোশাকটি দলীয় পোশাক নয়। এটার সম্মান রক্ষা করুন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ