পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে, চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের (মোট দেশজ উৎপাদন) জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৮ শতাংশ। এ প্রবৃদ্ধিতে বড় ভ‚মিকা রাখবে শিল্প খাত। যদিও বাজেটে সরকারের পক্ষ থেকে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে। তবে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কারণে এ লক্ষ্য পূরণ হবে না। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট আউটলুকের হালনাগাদ প্রতিবেদন এ পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও-এ অবস্থিত এডিবির আবাসিক মিশন কার্যালয়ে এ প্রতবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। পরে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থাটির অর্থনীতিবিদ সন চ্যাং হং। এ সময় এডিবির বহি:সম্পর্ক বিভাগের প্রধান গোবিন্দবার উপস্থিত ছিলেন।
দূর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযানকে স্বাগত জানায় এডিবি। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কান্ট্রি ডিরক্টের মনমোহন প্রকাশ বলেন, বাংলদেশের উন্নয়নকে গতিশীল করতে হলে সুশাসন প্রয়োজন। এজন্য চলমান অভিযানকে স্বাগত জানাই। সুশাসনের জন্য এ উদ্যোগ ফলপ্রসু হবে। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়বে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে। তবে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। মনমোহন প্রকাশ বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ গুলোর মধ্যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অগ্রগামী। রেমিট্যান্সের প্রবাহ ভাল, মুদ্রানীতির প্রভাব, বেসরকারি বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে সংস্কার কার্যক্রম, অবকাঠামো খাতে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে, রপ্তানি বহুমুখীকরণ না হওয়া, শহর ও গ্রামের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ডুয়িং বিজনেস পরিবেশ উন্নত করা, মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং ভ্যাট আইনের কার্যকর প্রয়োগ ইত্যাদি। এক প্রশ্নের জবাবে মনমোহন প্রকাশ বলেন, পরিসংখ্যান বলে বাংলাদেশে কর্মসংস্থান হচ্ছে। তবে এখন যেমন অনেক মানুষ বিদেশে কাজ করে। তারা ১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে। কিন্তু তারা যদি দক্ষ শ্রমিক হতো যেমন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতো তাহলে এই রেমিটেন্স বেড়ে গিয়ে ১০০ বিলিয়ন হতে পারতো। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের যে বাণিজ্যযুদ্ধ তা থেকে সুফল পেতে হলে এদেশের মানুষের কর্মদক্ষতা বাড়াতে হবে। দক্ষ জনশক্তি ও কর্মমূখী শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।
অপরে এক প্রশ্নের জবাবে মনমোহন প্রকাশ বলেন, আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ডাবল ডিজিটে প্রবৃদ্ধি নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে এজন্য যেসব কাজ করতে হবে সেগুলো হচ্ছে, অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে রাস্তা, বন্দর এবং পদ্মা সেতুসহ বড় প্রকল্পগুলো এবং ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির যে উদ্যোগ সেগুলো যথাসময়ে শেষ করতে হবে। সেই সঙ্গে দক্ষ জন শক্তি তৈরি করা, আর্থিক খাতের উন্নয়ন এবং ব্যবসা করার পরিবেশ (ডুয়িং বিজনেস) সহজ করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শূল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রফতানী বাড়বে। উচ্চতর প্রবাসী আয়ের কারণে বাড়বে ভোগ ব্যয়। একই সঙ্গে একোমডেটিভ মুদ্রানীতির কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহও বাড়বে। ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করতে চলমান সংস্কার এবং অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সুবাদেও বাড়বে জিডিপি প্রবৃদ্ধি। অন্যদিকে একই সময়ে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন এবং ভ্যাটের আওতা বাড়ার কারণে পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করে সংস্থাটি। ফলে চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশি ও অন্যান্য দেশের প্রবৃদ্ধি নিম্মগামী ধারা লক্ষ্য করা গেলেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি উর্দ্ধমূখী রয়েছে। এক্ষেত্রে চলতি অর্থবছর ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ, যা গত এপ্রিল মাসে প্রকাশিত মূল এশিয়ান ডেভলপমেন্ট আউট লুকে বলা হয়েছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হবে। এছাড়া পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৪ শতাংশ, যা মূল পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হবে। আর বাংলাদেশের মূল পূর্বাভাসেও বলা হয়েছিল ৮ শতাংশ এখনও একই পূর্বভাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া আরও বলা হয়েছে, চীনের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যা মূল পূর্বাভাসে ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। কোরিয়ার প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৪ শতাংশ, যা মূল পূর্বাভাসে ছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ। সিঙ্গাপুরের প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৪ শতাংশ, যা মূল পূর্বাভাসে ছিল ২ দশমিক ৬ শতাংশ। সব মিলিয়ে এশিয়ার প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, যা মূল পূর্বাভাসে ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে তার মধ্যে কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর মূল্যস্ফীতি হবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ধরা হয়েছে সাড়ে ৫ শতাংশ। এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণভাবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি এবং ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের কারণে মূল্যস্ফীতি একটু উর্দ্ধমূখী থাকবে। আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর রফানী প্রবৃদ্ধি হবে ১০ শতাংশ। এক্ষেত্রে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে যে বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে তার থেকে সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। আমদানির ক্ষেত্রে চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধি হবে ৯ শতাংশ। কেননা সরকারের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে প্রচুর মূলধনী যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামাল আমদানী করতে হচ্ছে। এছাড়া এলএনজির আমদানি ও করতে হচ্ছে। তবে খাদ্য আমদানি কমতে পারে। কেননা শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আমদানি শূল্ক বাড়ায় এটা হতে পারে। বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমবে চলতি অর্থবছর। এক্ষেত্রে এ খাতে প্রবৃদ্ধি দাড়াবে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।