Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনাধান-১৯ আবাদে প্রত্যাশিত ফলন

মো. আহেদুল হক, গোপালগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

পাঁচ জেলায় প্রথম পরীক্ষামূলক আবাদে খরা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের জাত বিনাধান-১৯ প্রত্যাশিত ফলন দিয়েছে। গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত এ জাতের ধান প্রতি হেক্টরে ৪.৯০ মেট্রিক টন উৎপাদিত হয়েছে। এ জাতের ধান প্রতি হেক্টরে ৩.৮৪ মে. টন থেকে ৫ মে. টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম বলে বিনা জানিয়েছে। কিন্তু গোপালগঞ্জে প্রত্যাশিত ফলন দিয়েছে এ জাতের ধান। 

কাশিয়ানী উপজেলার পশ্চিম মাঝিগাতী গ্রামের কৃষক হুমায়ন খোন্দকারের জমিতে উৎপাদিত বিনাধান-১৯ জাতের ধান কেটে পরিমাপ করে মাঠ দিবস থেকে বিনার বিজ্ঞানী ও কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
এ জাতের ধান চাষে সেচ খুব কম লাগে। সার ও বালাইনাশক সাশ্রয় হয়। খরা সহিষ্ণু স্বল্প জীবন কালের এ ধান পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবেলা করে বাম্পার ফলন দিয়েছে বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র জানিয়েছে, চলতি আউশ মৌসুমে গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরিয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুর জেলার ১২০ একর জমিতে ১২০টি প্রদর্শনী প্লটে এ ধানের আবাদ করে কৃষক। এ বছর তারা এ জাতের ধান আবাদ করে প্রত্যাশিত ফলন পেয়েছেন।
পশ্চিম মাঝিগাতী গ্রামের কৃষক হুমায়ন খোন্দকার বলেন, বিনা উপকেন্দ্র আমাকে বীজ, সার, বালাইনাশক বিনামূল্যে দিয়েছে। তাদের পরামর্শে এ জাতের ধান চাষে সেচসহ অন্যান্য খরচ খুব কম লেগেছে। গাছ হেলে পড়েনা। প্রচলিত আউশ ধানের তুলনায় এ ধান অনেকগুন বেশি ফলন দিয়েছে। এ জাতের ধান সরু। তাই বাজারে বেশি দাম পেয়ে আমি আরো বেশি লাভবান হবো বলে আশা করছি।
কৃষক রেজাউল খোন্দকার বলেন, ধানের উৎপাদন দেখে আমার প্রাণভরে গেছে। আমি আগামীতে হুমায়নের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে এ ধানের চাষাবাদ করবো। আমাদের এলাকায় লাভজনক এ ধানের চাষ সম্প্রসারিত হবে।
গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শেফাউর রহমান বলেন, আগামীতে আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকবেলা করা। সে জন্য আমাদের বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন ফসলের জাত উদ্ভাবন করছেন। এসব জাত কৃষকের হাতে তুলে দিয়ে তাদের পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে উপযোগী করে তুলেছি। এরই অংশ হিসেবে খরা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের জাত বিনাধান-১৯ আবাদ করে কৃষক প্রত্যাশা ছাপিয়ে ফলন পেয়েছে।
বিনাধান-১৯ এর উদ্ভাবক কৃষি বিজ্ঞানী ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ধান চষে পানির অবচয় রোধ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। তাই কম সেচে আউশ মৌসুমের এ ধানের আবাদ সম্প্রসারণ করতে হবে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক পরিচালক রমেশ চন্দ্র ব্রহ্ম বলেন, বোরো মৌসুমে সেচ কাজে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে পানির অপচয় হয়। ফলে পরিবেশে বিপর্যয় নেমে আশার আশংকা রয়েছে। পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় পানি সাশ্রয়ী আউশ ও আমন মৌসুমের বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ সম্প্রসারিত করতে সরকার কৃষককে উদ্ধুদ্ধ করছে। বিনাধান-১৯ জাতের ধান পরিবেশ বান্ধব। গোপালগঞ্জের মাটি বেশি উর্বর। তাই এ ধান এখানে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলেছে। এ ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেলে দেশে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।



 

Show all comments
  • mahabubur rahman ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৯:২৯ পিএম says : 0
    very good news.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ