বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
‘ক্লাবগুলোতে তাস খেলা বন্ধ করলে ছেলেরা রাস্তায় ছিনতাই করবে’- এমন বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের মহাসচিব ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হুইপ শামশুল হক চৌধুরী। তার এই মন্তব্যে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করে। শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। হুইপের বক্তব্যকে কাণ্ডজ্ঞানহীন আখ্যা দিয়ে নানা মন্তব্য ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
রোববার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত একটি সমন্বয় সভায় যোগ দিতে এসে দেশের বিভিন্ন ক্লাবে চলমান অভিযানে ক্ষোভ প্রকাশ করে গণমাধ্যমের কাছে ওই মন্তব্য করেন হুইপ শামশুল। সোমবার দিনভর তার এই মন্তব্য ট্রোল হতে থাকে।
সভা শেষে শামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামে শতদল, ফ্রেন্ডস, আবাহনী, মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধাসহ ১২টি ক্লাব আছে। ক্লাবগুলো প্রিমিয়ার লিগে খেলে। ওদের তো ধ্বংস করা যাবে না। ওদের খেলাধুলা বন্ধ করা যাবে না। প্রশাসন কি খেলোয়াড়দের পাঁচ টাকা বেতন দেয়? ওরা কীভাবে খেলে, টাকা কোন জায়গা থেকে আসে, সরকার কি ওদের টাকা দেয়? দেয় না। এই ক্লাবগুলো তো পরিচালনা করতে হবে।’
শেখ জুয়েল সরদার সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘‘ক্লাবগুলোতে তাস খেলা বন্ধ করলে ছেলেরা কাজ করবে নিজের জন্যে, নিজের পরিবারের জন্য, দেশের জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে তাস খেলা বন্ধ হলে দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী-এমপি-আমলাদের বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ হয়ে যাবে এবং তাদের বিলাসী জীবন যাপনের উপর এক চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে। এই আওয়ামী হুইপ তাদেরই একজন তাইতো তার অনেক কষ্ট হচ্ছে।’’
‘‘ঘুষ দেয়া-নেয়া যেমন অপরাধ। ঠিক তেমনি অপকর্মের পক্ষে কথা বলাও অপরাধ। শুভ বুদ্ধির উদয় হউক’’ মন্তব্য রাজিক রহমান শাজুর।
এনামুল হক লিখেছেন, ‘‘উস্কানিমূলক কথা বলার জন্য উনাকে গ্রেফতার করা হোক। তারপর রিমান্ডে নিলেই সব বের হয়ে যাবে!’’
ফেইসবুকে ফরিদা হক লিখেছেন, ‘‘কার আমলে শুরু হয়েছে এবং কার আমলে শেষ হবে সেটা নয়। তাস থেকে জুয়া, মাদক নির্মূল করা জরুরি এবং কঠোর আইন প্রয়োগ করে যুব সমাজকে অপরাধ করা থেকে প্রতিরোধ করতে হবে। উস্কানিমূলক কথা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেন ছিনতাইয়ে নামবে? যারা এই যুব সমাজকে ধ্বংস করার জন্য মরণফাঁদ পাতছে আগে তাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে। একজন দ্বায়িত্ববানই পারে নতুন আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সোনার বাংলার সোনার ছেলেদের সোনার রাষ্ট্র উপহার দিতে।’’
‘‘তাস খেলার টাকা কোথায় পায়? ধিক্কার জানাই তোমাদের মতো দ্বায়িত্বহীন ব্যক্তিদের যারা দেশও জাতির অমঙ্গলের কথা বলে। আর শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড একথার সম্মানহানী করে ফেলেছে তোমাদের মতো কিছু বিবেকহীন শিক্ষিত লোক। ইসলামে যেগুলো হারাম করা হয়েছে তোমরা সেই গুলোর পক্ষে কথা বলো। তাও আবার ৯৬ ভাগ মুসলমানের দেশে এবং নিজেকে মুসলমানের পরিচয় দাও। আফসোস তোমাদের মতো মুনাফেকিদের জন্য। এখনও সময় আছে তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসো’’ লিখেছেন মো. সাইদুল ইসলাম।
হুইপ শামশুলের মন্তব্যের সমালোচনা করে এস এম মিলন লিখেছেন, ‘‘বোকা নাকি। জুয়া আর নেশার টাকা জোগাড় করতেই তারা ছিনতাই করে। ছিনতাই করে সেই টাকা দিয়ে কী আর বউ বাচ্চার জন্য খাবার আর জামাকাপড় কিনে। অসৎ পথে উপার্জিত অর্থ তো অসৎ পথেই খরচ করে। শুধু শুধু জুয়াড়িদের পক্ষে সাফাই গাইতে আসছেন?’’
হুমায়ুন কবির খান লিখেছেন, ‘‘আসলে এই অসুস্থ মানুষগুলো কী করে এতবড় দায়িত্ব পায়! সারাজীবন শুনলাম, দেখলাম জুয়ার টাকা যোগাড় করতে চুরি, ডাকাতি করে এখন তিনি বলছেন কি? তাহলে কি এই জুয়া হতে ছেলেরা লাখ লাখ টাকা ইনকাম করত?’’
মো. সবুজ লিখেছেন, ‘‘তাস খেলা টাকার জন্য রাস্তায় ছিনতাই করবে অতএব তাস খেলা বন্ধ করতে হবে তাস খেলার পেছনে সময় ব্যয় না করে কোনো কাজ করা উচিত। এতে পরিবার ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হবে, দেশের উন্নয়ন হবে।’’
‘‘নিজের স্বার্থে যুবকদের নিজের পিছনে পিছনে না ঘুরিয়ে তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিন। তারা জুয়া খেলে সবকিছু হারিয়ে আপনার মতো নেতাদের পেছনে ঘুরলে অবশ্যই ছিনতাই করার লাইসেন্স পাবে’’ ক্ষোভের সাথে লিখেছেন পরেশ গুপ্ত।
মো. আশাদুজ্জামান আশাদ লিখেছেন, ‘‘পরে বলবেন ক্লাবে মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করতে না পারলে, ছেলেরা বাড়ী বাড়ী যেয়ে মেয়ে নিয়ে টানাটানি করবে! এটাই কি মূল চরিত্র?’’
এস এম জহির টিপু লিখেছেন, ‘‘ক্লাবের মালিকের কাজ কি?- যদি জুয়া খেলে, ক্যাসিনোর মাধ্যমে টাকা আয় করে ফুটবল টিম, ক্রিকেট টিম গঠন করে চালাতে হয়।টিম চালানোর ক্ষমতা না থাকলে টিম নেয়ার কোনো দরকার নেই।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।