Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৈয়দপুরে ঐতিহাসিক চিনি মসজিদ

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ভারতবর্ষ পীর আউলিয়াদের দেশ হিসেবে পরিচিত। ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে অনেক পীর, আউলিয়া ও বুজুর্গের আগমন ঘটেছিল এখানে। আর তাদের উৎসাহ, অনুপ্রেরণায় মুসলমান শাসক ও মোঘল আমলে অসংখ্য মসজিদ স্থাপিত হয় এই উপমহাদেশে। নীলফামারীর সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ শুধু উপসনালয় নয়, এই মসজিদ অতীত ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতীকও। এই মসজিদের নির্মাণ শৈলী ও সৌন্দর্য সবার নজর কাড়ে খুব সহজে। ইতোমধ্যে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটি এ অঞ্চলের অন্যতম মসজিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। তাই তো দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষ প্রতিদিন আসে এই মসজিদটি একনজর দেখার জন্য। 

সৈয়দপুর শহরের উত্তরে ইসলামবাগ এলাকায় ১৮৬৩ সালে চিনি মসজিদের নির্মাণ শুরু হয়। প্রথম দিকে এটি দোচালা ছোট টিনের ঘর ছিল। পরবর্তীতে ১৯২০ সালে হাজী হাফিজ আব্দুল করিমের উদ্যোগে ৩৯ ফুট বাই ৪০ ফুট আয়তন বিশিষ্ট মসজিদটির প্রথম অংশ পাকা করা হয়। হাজী আব্দুল করিম নিজেই মসজিদটির নকশা এঁকেছিলেন। পুনরায় ১৯৬৫ সালে মসজিদের দক্ষিণ দিকে ২৫ বাই ৪০ ফুট আয়তন বিশিষ্ট দ্বিতীয় অংশ পাকা করা হয়। সম্প্রতি এর আয়তন আরো বাড়ানো হয়েছে। এই চিনি মসজিদের অবয়ব রঙিন উজ্জ্বল চীনা মাটির পাথরের টুকরো দ্বারা আবৃত। ১৯৬৫ সালে বগুড়ার একটি গøাস ফ্যাক্টরি চিনি মসজিদের জন্য প্রায় ২৫ টনের মতো চীনা মাটির পাথর দান করে।
এছাড়া সেই সময় কোলকাতা থেকেও ২ শ’ ৪৩ খানা শংকর মর্মর পাথর এনে লাগানো হয় এই মসজিদে। ঐতিহ্যবাহী চিনি মসজিদের ৩৭ মিনারসহ ৪টি বড় গম্বুজ রয়েছে। মসজিদে প্রবেশের জন্য উত্তরে ও দক্ষিণে একটি করে দরজা রয়েছে। মসজিদের দোতলায় একটি ভবনসহ পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ দেখার জন্য বহু বিদেশি পর্যটকদের আগমনের ইতিহাস রয়েছে। স্থাপত্যের নিদর্শন এই চিনি মসজিদ দেশের ক’জন রাষ্ট্র প্রধানও পরিদর্শন করে গেছেন। ইসলামের মহিমা প্রচার যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি ইসলাম অনুসারীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সৈয়দপুর চিনি মসজিদে স্থান সংকুলানের অভাবসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। মসজিদটির ডানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বামে একটি ইমামবারা রয়েছে। আর পশ্চিমে খৃস্টান কবরস্থান।
মসজিদের নিজস্ব সম্পত্তি বলতে রয়েছে দক্ষিণে মসজিদের গাঁ ঘেঁষে ১২টির মত দোকানঘর। এইসব দোকানের ভাড়া ও মুসল্লীদের চাঁদায় মসজিদের আয়ের একমাত্র উৎস। যার উপর নির্ভর করে মসজিদের সকল ব্যয় ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড। তাই সৈয়দপুর শহরের অতীত ইতিহাসের প্রতীক ‘চিনি মসজিদ’ এর সংস্কার ও উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য সরকারি সাহায্য প্রয়োজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ