Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মঠবাড়িয়ায় গো-বসন্তে দুশ্চিন্তায় কৃষক

আব্দুল হালিম দুলাল মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় গত প্রায় ২ মাস ধরে গবাদি পশুর বা ‘গো-বসন্ত’ রোগ দেখা দেয়ায় কৃষকরা উদ্বিগ্ন। উপজেলা পশু সম্পদ অফিস এখন পর্যন্ত এ রোগে ৭/৮ টি গরুর মৃত্যুর কথা বললেও সংখ্যা আরও বেশি বলে জানাগেছে। রোগাক্রান্ত গরুর চিকিৎসায় বাজারে ঔষধ সরবরাহ কম থকায় অধিক মূল্যে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। চিকিৎসায় মোটা অংকের টাকা ব্যায় হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হওয়ার উপক্রম।

খুসঢ়যু ঝশরহ উরংবধংব (খঝউ) যার বাংলা অর্থ জীব দেহের বর্ণহীন রস চর্ম রোগ। কৃষকদের নিকট বাইরাস জনিত এই রোগটি গো-বসন্ত নামেই পরিচিত। উপজেলা প্রানী সম্পদপকপল জানা যায়, অনিয়মিত আবহাওয়া অর্থাৎ অতিরিক্ত তাপমাত্রা আবার ঠান্ডা এরকম আবহাওয়ায় এ রোগ দেখা দেয়। রোগের লক্ষণ হলো গরুর দেহে ১০৪-১০৫ ডিগ্রী পর্যন্ত তাপমাত্রা, সারা দেহে বড় বড় ফোসকা এবং বুকে নিচ পা ফুলে যাওয়া। ফোসকা গুলো এক সময়ে ফেটে গিয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত গরু খাওয়া-দাওয়া করতে পারে না।
গো-বসন্তে আক্রান্ত হলে গরু তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এসময়ে সঠিক চিকিৎসা এবং পরিচর্যা না হলে গরু ব্যাকটেরিয়ার কবলে পরে মারা যায়। এ রোগে এখন পর্যন্ত কতটি গরু মারা গেছে তার সঠিক তথ্য নেই উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরে।
তবে উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শ্যামল চন্দ্র দাস জানান, এখন পর্যন্ত ৭/৮ টি গরু মারা যেতে পারে। তবে মাঠের তথ্যে সংখ্যা আরও বেশী বলে জানা যায়।
সরেজমিনে জানা যায়, গো-বসন্তে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত এলাকা হলো সাপলেজা, গুলিশাখালী ও মিরুখালী ইউনিয়ন।
সাপলেজার খেতাছিরা গ্রামের ইউপি সদস্য আফজাল বেপারী জানান, হাজিগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক উপেন্দ্র নাথ গোমস্তার একটি বিদেশি গরু ৪/৫ পূর্বে গো-বসন্ত রোগে মারা গেছে। আফজাল বেপারীর নিজের ৬ টি গরু আক্রান্ত হলে চিকিৎসায় প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যায় হয়। চিকিৎসার ব্যায় মেটাবার জন্য ৪ টি গরু বিক্রি করে দেন আফজাল বেপারী।
ছোটহারজী গ্রামের মো. খোরশেদ হাওলাদারের ছেলে লাল মিয়া হাওলাদারের প্রায় ৫০ হাজার টাকার ১টি গরু এবং একই গ্রামের সবদের হাওলাদারের ছেলে মো. শহীদুলের প্রায় ৬৫ হাজার টাকার ১টি গাভী কিছু দিন পূর্বে মারা যায়। বড় শৌলা গ্রামের ব্রজনাথ মিস্ত্রির চেলে সন্তোষ মিস্ত্রির ২টি গরু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত তার প্রায় ৫ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে। ধার-দেন এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চিকিৎসা চালাতে কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মিরুখালী বাজারের তালুকদার মেডিকেল হলের মালিক কামাল তালুকদার জানান,ওষুধ কোম্পানিগুলোর সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করে ওষুধের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে।
ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ শ্যামল চন্দ্র দাস জানান, এ রোগের সরাসরি কোন চিকিৎসা নাই। গরু রোগ প্রতিরোধ শক্তি হারিয়ে অন্য কোন রোগে যাতে আক্রান্ত হয়ে মারা না যায় এজন্য ব্যাথা নাশক, এ্যান্টিবায়োটিক ও এ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ দেয়া হয়। এ রোগের লক্ষণ দেখা দিলে তিনি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহনের পরামর্শ দেন।
উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন জানান, তিনি ঢাকা ট্রেনিংয়ে ব্যাস্ত থাকায় কথা বলতে পারেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ