Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে খালেদা জিয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন--- রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:২৪ এএম

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সমস্যা সমাধান করতে হলে বেগম খালেদা জিয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। কারণ ১৯৯১ এর পরে বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে কূটনৈতিক সফলতায় দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। সফলভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা করার অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে। এজন্য অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। এখনো সময় আছে অবিলম্বে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনের জন্য সর্বদলীয় বৈঠকের ব্যবস্থা করুন। যেখানে বেগম জিয়াসহ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ছাড়াও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধি, দেশে-বিদেশে উচ্চপর্যায়ে কর্মরত বাংলাদেশী নাগরিকদের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। তাহলে এ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত সারাবিশ্ব গুরুত্ব সহকারে দেখবে। মিয়ানমারও গুরুত্ব দিতে বাধ্য হবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দুর্বোধ্য ধাঁধাঁর মধ্যে ফেলে রেখেছে জনগণকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাড়তি ও থিতানো বিবৃতি ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় কিছুই করতে পারেননি। এখনো সময় আছে অবিলম্বে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত করার। তারেক রহমান গত সোমবার রাতে লন্ডনে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের মাধ্যমে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার যে প্রস্তাব রেখেছেন তা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান। বিএনপির এই নেতা বলেন, তাঁর এই প্রস্তাবই কেবল রোহিঙ্গা নিয়ে দেশ ও জাতি মহাসংকট থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারবে। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি জাতীয় সংকটে রূপ নিয়েছে। গত দুই বছরে সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি। রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে নতুন শিশু। এদের নাগরিকত্ব পরিচয় কি হবে? কোন দেশের পরিচয়ে এরা বেড়ে উঠবে? এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আবার নতুন খবর হলো-ভারতের আসামে নাগরিকত্বহীন করা হয়েছে ১৯ লাখের বেশী মানুষকে। শোনা যাচ্ছে-এদেরকে ঠেলে দেয়া হবে বাংলাদেশে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য আরো একটি বড় বিপদের আশংকা। ফলে, দলীয় স্বার্থ নয়, দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি বাংলাদেশীকে এক কাতারে আসা এখন সময়ের দাবি। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সর্বাগ্রে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়েছেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে ব্যথিত, বঞ্চিত ও অপমানিত জনগণ ঘর ছেড়ে রাজপথে নেমে এসেছিল উল্লেখ করে রিজভী বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে সারাদেশে মানুষের মধ্যে দলের প্রতি যে আবেগ-উচ্ছাস পরিলক্ষিত হয়েছে তা অভাবনীয় এবং সেই সাথে অবৈধ সরকারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ধ্বণিত হয়েছে তা অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর উপলব্ধির জন্য সতর্কবার্তা। তাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি বানচাল করার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শাসকদলের গুন্ডা বাহিনী এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী হামলা-মামলা ও নির্যাতন চালিয়েছে অবিরামভাবে। এতে গ্রেফতার ও আহত হয়েছে অনেক নেতাকর্মী। কিন্তু সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে দেশের প্রতিটি জনপদ প্রকম্পিত করে ভোটহীন সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে দিয়েছেন জনগণ। ৫৭২ দিন যাবত শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার রোষে কারাবন্দী জনগণের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির শ্লোগানে মুখরিত হয়েছে আকাশ-বাতাস এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে, তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। মানুষের জোয়ারে ঢাকা শহর প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। লাখ লাখ মানুষ রাজপথ কাঁপানো শ্লোগানে শ্লোগানে সরকারের প্রতি স্বত:স্ফূর্ত অনাস্থা জানিয়েছে। তাই কালবিলম্ব না করে দেশনেত্রীকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দিন। এই অনির্বাচিত নিশি রাতের নির্বাচনের সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘোষণা করুন। তা না হলে রাজপথে এই জনবিস্ফোরণ রোধ করতে পারবেন না। তখন পালানোর গলিপথও খুঁজে পাবে না।
দলটির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালনে সারাদেশে পুলিশের বাধা, গ্রেফতার করারও অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা। এসময় তিনি রংপুর-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বিতরণ ও জমা নেয়ার বিষয়ে বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন আবেদন ফরম উত্তোলন করতে পারবেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ৬ সেপ্টেম্বর আবেদন ফরম জমা নেয়া হবে এবং ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় চেয়ারপারসনের গুলশানস্থ কার্যালয়ে সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ