Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত আশ্বস্ত করেছে, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই : ওবায়দুল কাদের

৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের চিঠি দেয়া হবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৯:২১ পিএম

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও পরিবহস সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আসামের নাগরিকপঞ্জিতে রাষ্ট্রহীন হয়ে যাওয়া ১৯ লাখ নাগরিকের ব্যাপারে বাংলাদেশের এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই। এ ব্যাপারে ভারত আশ্বস্ত করেছে। তাছাড়া এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। এটা নিয়ে এখনই আগ বাড়িয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
আসামের নাগরিকত্ব বাতিলকৃত ১৯ লাখকে বাংলাদেশি উল্লেখ করে তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানানো হবে আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার এই মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা এখানে আসাম দিয়ে বিবেচনা করবো না। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আমরা যা পেয়েছি সেটা হচ্ছে, আগামী চার মাসে নাগরিকত্ব বাতিলকৃতদের আপিলের সুযোগ আছে। আর আমরা সাধারণভাবে জানি, ১৯৭১ সালের পরে কোনো বাংলাদেশি ভারতে মাইগ্রেড করেনি। তবে এখন আমাদের নিজেদের ঘাড়ে নিজেদের দোষ চাপানোর কোনো কারণ নেই। এ নিয়ে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো বিষয় এখন পর্যন্ত নেই। এটা লিগ্যাল প্রসেসে শেষ করে সিদ্ধান্ত আকারে আসতে আরও সময় নেবে, কাজেই সেই পর্যন্ত কী দাঁড়ায় আমাদের চিন্তাভাবনা করে পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের নাগরিকত্ব বাতিলকৃতদের মধ্যে ৬০ ভাগই হিন্দু, মুসলামান হচ্ছে ৪০ ভাগ। কাজেই এটার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের এক করে দেখার বিষয় না। তারাতো ভারতেই বাস করছিল, ভারতেরই নাগরিক, আর তাদের এখনই দেশছাড়া করবে এমন সিদ্ধান্ত এখনই ভারত সরকার নেয়নি। কাজেই আমরা আগেভাগে কেন বিষয়টা নিয়ে অহেতুক উদ্বিগ্নের মধ্যে থাকবো। রোহিঙ্গাদের বিষয়টা হলো মিয়ানমার তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে, সেটাও আমরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে যাচ্ছি, আমরা মিয়নমার উপরের আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করার জন্য সব উপায় কাজ করছি। ডেট দিয়েও একবার রোহিঙ্গা যায়নি বলে সেটা স্থায়ী হয়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের কূটনৈতিক প্রয়াস আরও জোরদার হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। এই মাসে কিছু কিছু সিদ্ধান্ত আছে সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন স্থগিত রাখি। উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী এবং বিদ্রোহের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আগস্ট মাস থাকায় আমরা এটা স্থগিত রেখেছিলাম। সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে আমরা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করতে শুরু করবো। কাদের বলেন, ‘৮ তারিখের আগে আমরা সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যারা বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে আছেন তারা বৈঠক করবো। এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থাটা যাতে নিখুঁত উপায়ে এবং এটা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্যকর করা যায় সেই জন্যই আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ করছি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অতীতে জাতীয় নির্বাচনের কারণে তখন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে আমরা ডিসিপ্লিন ব্রেক হলে এই প্রবণতা চলতেই থাকবে এবং এটা দলের জন্য কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। সে কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিসিপ্লিন ভঙ্গ হলে আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
অক্টোবরে জাতীয় সম্মেলন হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটা ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা হতেই পারে। সাংগঠনিক কার্যক্রমের আমাদের এজেন্ডার মধ্যে আসতে পারে। আমরা সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুত। আমাদের নেত্রী যখনই সিদ্ধান্ত নেবেন তখনই আমরা প্রস্তুত। ওবায়দুল কাদের কলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দল চলে। আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত দল। ১৪ সেপ্টেম্বর দলের পরবর্তী নীতিনির্ধারণী সভায় সাংগঠনের সফরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মেয়াদ শেষ হওয়া কমিটিগুলোর সম্মেলনের বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সম্মেলনের তারিখ ঠিক করা হবে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় রংপুর-৩ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত হবে বলেও জানান তিনি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামিম, মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ