পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে ৭নং আসামি করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দুইখন্ড চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার ওসি। মামলায় ১৪ জন আসামি শিশু ও মিন্নিসহ ১০ জন আসামি ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে থাকায় পৃথক দুটি চার্জশিট দাখিল করা হয়।
এদিকে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের আগে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন এবং মামলার কার্যক্রম সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন সমীচীন নয়, এ বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন হওয়া প্রয়োজন বলে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। বরগুনার রিফাত হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আদেশের পর্যবেক্ষণে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়। গতকাল রোববার জামিন আদেশের সইমুহুরি নকল (সার্টিফায়েড কপি) তোলা হয়। তাতে আদালতের পর্যবেক্ষণে এ অভিমত ব্যক্ত করেন। গত ২৯ আগস্ট বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ শর্ত সাপেক্ষে মিন্নিকে জামিন দেন।
জামিন আদেশে আদালত বলেন, ‘ইদানীং প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়, বিভিন্ন আলোচিত অপরাধের তদন্ত চলার সময় পুলিশ-র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করার আগেই গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা হয়, যা অনেক সময় মানবাধিকারের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অমর্যাদাকর এবং অ-অনুমোদনযোগ্য।’
আদালত বলেন, ‘আমাদের সবাইকে স্মরণ রাখতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত অভিযুক্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বলা যাবে না যে তিনি প্রকৃত অপরাধী বা তার দ্বারাই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। গণমাধ্যমের সামনে গ্রেফতার কোনো ব্যক্তিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা সঙ্গত নয় যে, তার মর্যাদা ও সম্মানহানি হয়। তদন্ত চলাকালে অর্থাৎ পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের আগে গণমাধ্যমে গ্রেফতার কোনো ব্যক্তি বা মামলার তদন্ত কার্যক্রম সম্পর্কে এমন কোনো বক্তব্য উপস্থাপন সমীচীন নয়, যা তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে বিতর্ক বা প্রশ্ন সৃষ্টি করতে পারে।’
মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে বরগুনার এসপির করা সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে আদালত বলেছেন, ‘একজন আসামি রিমান্ডে থাকাবস্থায় আইনের নির্ধারিত নিয়মে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেয়ার আগেই পুলিশ সুপারের এ ধরনের বক্তব্য তদন্ত সম্পর্কে জনমনে নানাবিধ প্রশ্ন ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তার বক্তব্যের বিষয় যদি ধরেও নেয়া হয় সত্য, তাহলেও গণমাধ্যমের সামনে এ পর্যায়ে প্রকাশ ছিল অযাচিত এবং ন্যায়নীতি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপন্থী। একজন দায়িত্বশীল অফিসারের কাছ থেকে এ ধররে কাজ প্রত্যাশিত ও কাম্য ছিল না।’ হাইকোর্ট বলেন, ‘এ মামলার তদন্ত যেহেতু চলমান, সে কারণে এ বিষয়ে আদালত এ মূহূর্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করা থেকে বিরত থাকছেন। তদন্ত শেষে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল হলে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ বিষয়ে সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।’
রায়ের একটি অংশে আদালত তার অভিমত দিয়ে বলেন, ‘গ্রেফতার ব্যক্তিদের আদালতে উপস্থাপনের আগে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন এবং কোনো মামলার তদন্ত চলার সময় তদন্ত বিষয়ে কতটুকু তথ্য গণমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করা সমীচীন হবে, সে সম্পর্কে একটি নীতিমালা অতি দ্রুততার সঙ্গে প্রণয়ন করা বাঞ্ছনীয়। এই নীতিমালা প্রণয়ন ও যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
মিন্নির জামিন স্থগিত চেয়েছে সরকার
বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় হাইকোর্টে জামিন পাওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন স্থগিত চেয়েছে সরকার। গতকাল সরকারপক্ষের অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সুফিয়া খাতুন এ বিষয়ক আবেদন ফাইল করেছেন। আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে শিগগিরই আবেদনের ওপর শুনানি হবে বলে জানান সরকারপক্ষীয় আইনজীবী সারোয়ার হোসেন বাপ্পি। এর আগে গত ২৯ আগস্ট বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন দুই শর্তে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় সরকারপক্ষের আইনজীবী সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেছিলেন, উই আর ভেরি শকড (আমরা মর্মাহত)। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।