পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী (পরবর্তীতে আসামি হিসেবে গ্রেফতার) আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন দেননি হাইকোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চে জামিনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত মিন্নিকে কেন জামিন দেয়া হবে না-এই মর্মে রুল নিশি জারি করতে চান। এ সময় মিন্নির পক্ষের কৌঁসুলিরা তাতে আপত্তি করেন। তারা কোনো ধরণের রুল নিশি ছাড়াই তার জামিন মঞ্জুরের আবেদন পুনর্ব্যক্ত করেন। কিন্তু আদালত জামিন না দিয়ে জামিন দেয়ার জন্য রুল নিশি জারির কথা বলেন। মিন্নির আইনজীবীরা তখন আবেদনটি প্রত্যাহার করে নেন। জামিন শুনানিকালে মিন্নির পক্ষের কৌঁসুলি জহিরুল ইসলাম খান পান্না বলেন, আসামি একজন ১৯ বছরের তরুণী। মেয়েটা অসুস্থ। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং এক নম্বর সাক্ষী। জীবন বাজি রেখে স্বামীকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। রিফাত হত্যার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দুইজন আসামির জবানবন্দির ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে বেআইনিভাবে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে পুলিশ লাইনে। গণমাধ্যমে এসেছে, পুলিশ তার মুখ চেপে রেখেছে। পরে ভুলভাবে ও জোরপূর্বক মিন্নির জবানবন্দি নিয়েছে পুলিশ। আপিল বিভাগের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে তাকে পাঁচদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
সরকারপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজউদ্দিন ফকির তার শুনানিতে রিফাত হত্যার সঙ্গে মিন্নির সম্পৃক্ততা রয়েছেÑ এমন তথ্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালান। এ প্রসঙ্গে তিনি অন্য আসামিদের জবানবন্দি, কলেজের সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ, মোবাইলে মিন্নি ও রিফাতের কথোপকথন এবং বরগুনার দায়রা আদালতের আদেশ পাঠ করেন। পুলিশ প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, মিনি রিফাত হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড। নয়ন বন্ডের সঙ্গে তার একাধিক কথোপকথন রয়েছে। হত্যাকাÐের আগেও মিন্নি নয়নের সঙ্গে কথা বলেছে। তার গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, বিচারিক আদালতে মিন্নির দেয়া জবানবন্দি নিয়ে আসেন। তখন পর্যালোচনা করে আদেশ দেবো। আমরা এখন রুল দিতে পারি। এ সময় মিন্নির আইনজীবী বলেন, মামলা তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। এখনো অভিযোগপত্র হয়নি। আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাইনি। আদালত জবানবন্দি তলবের আদেশ দিতে পারেন। তখন আদালত বলেন, আমরা রুল জারি করতে চাই। তখন মিন্নির আইনজীবী আবেদন প্রত্যাহার করেন।
আদালত থেকে বেরিয়ে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, রিমান্ডের পর মিন্নি কি জবানবন্দী দিয়েছেন আমরা সেটি হাতে পাইনি। এটি পেলে আমরা লিগ্যাল নোটিস দেবো।
অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির আদালত থেকে বেরিয়ে বলেন, মিন্নির কৌঁসুলিরা জামিন আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তারা চাইলে জামিনের আবেদন নিয়ে অন্য কোনো বেঞ্চে যেতে পারবেন।
প্রসঙ্গত: গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে রিফাত শরীফকে। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ১৬ জুলাই বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ১৭ জুলাই বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। শুনানি শেষে মিন্নির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত ২২ জুলাই বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রথমবার মিন্নির জামিনের আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। পরে ওইদিনই শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর ৩০ জুলাই ফের জামিন আবেদন করেন মিন্নি। আদালত সেটি নামঞ্জুর করেন। পরে আগস্ট হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।