পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশনার পর কয়েক মাস হয়ে গেছে। কিন্তু রাজধানীর হাতিরঝিলে তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর ১৫ তলা ভবন ভাঙতে দরপত্র আহ্বান করা হলেও ৫ মাসেও কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। বিজিএমইএর অবৈধ ভবনটি ভাঙতে দুই কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে রাজউক। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ বিতর্কিত ওই ভবন ভাঙতে রাজউকের উদাসীনতা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত এপ্রিল মাসে রাজধানীর উত্তরায় ১১০ কাঠা জমির ওপর ১৩ তলা (পার্কিংয়ের জন্য ভূগর্ভস্থ দুই তলা ছাড়া) সংগঠন বিজিএমইএর নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেছেন। আগামী ২০২০ সাল নাগাদ মালিকানা বুঝিয়ে দেয়া হবে।
জানতে চাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ইনকিলাবকে বলেন, ভবনটি ভাঙতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর কাজ শেষ পর্যায়ের। এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়নি। হয়তো অল্পদিনের মধ্যে হয়ে যাবে। ১৫ তলা ভবনের ধ্বংসাবশেষ বিক্রি করেই এই অর্থ উঠে আসবে বলেও ধারণা করছেন তারা। তবে ধ্বংসাবশেষ বিক্রির টাকায় খরচ মেটাতে না পারলে বিজিএমইএর কাছ থেকে টাকা আদায় করা হবে। দরপত্রে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার আগে একটি চুক্তি করা হবে। চুক্তিতে নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ থাকবে।
জানা গেছে, রাজধানীর হাতিরঝিলে আড়াআড়িভাবে গড়ে ওঠা বিজিএমইএ ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় গত শতকের নব্বইয়ের দশকে। ২০০৬ সালের দিকে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। অবৈধভাবে হাতির ঝিলের জমি দখল করে ভবনটি নির্মাণ করায় শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছিলেন পরিবেশবাদীরা। পরে বিষয়টি আদালতে গড়ায়। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটিকে হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। রায়ে ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে বিজিএমইএকে নির্দেশ দেয়া হয়। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হয়। পরে ভবন ছাড়তে উচ্চ আদালতের কাছে সময় চায় বিজিএমইএ। প্রথমে ছয় মাস এবং পরে সাত মাস সময়ও পায় তারা। সর্বশেষ গত বছর নতুন করে এক বছর সময় পায় সংগঠনটি। সে সময় তারা মুচলেকা দেয়, ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না। মুচলেকা দিয়ে পাওয়া সময়ও গত ১২ এপ্রিল শেষ হয়। এরপর ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয় রাজউক।
রাজউকের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভবনটি ভাঙা হবে। এ জন্য চীনের একটি বিশেষজ্ঞ দল দিয়ে সমীক্ষাও করা হয়েছে। কিন্তু পরদিনই গণমাধ্যমে ভবনটি ভাঙার দরপত্র আহ্বান করে রাজউক। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভবনটি সনাতন পদ্ধতিতে ভাঙা হবে। ২৫ এপ্রিল দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ছিল। এ সময়ে পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। দরপত্র জমা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে পিঅ্যান্ডএস এন্টারপ্রাইজ, চন্দ্রপুরী এন্টারপ্রাইজ, সামিয়া এন্টারপ্রাইজ, সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স ও ফোরস্টার এন্টারপ্রাইজ। পরে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়। কিন্তু এরপর আর কোনো অগ্রগতি নেই। এমন অবস্থায় ভবনটি আদৌ ভাঙা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজউকেরই একাধিক কর্মকর্তা। তাদের একজন নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আদালতের নির্দেশনার কারণে বাধ্য হয়ে রাজউক ভবনটিতে তালা ঝুলিয়েছে। কিন্তু ভবনটি ভাঙতে এখনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেনি রাজউক। এখনো তালা ঝুলিয়ে আছে।
রাজউকের কমিটির প্রধান ও সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস ইনকিলাবকে বলেন, এখনো ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজউকের কোনো চুক্তি হয়নি। দরপত্র দেয়ার বিষয়টিও চূড়ান্ত করা হয়নি। ভবনটি না ভেঙ্গে অন্য কোনোভাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা রাজউকের আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্য কোনো পরিকল্পনা নেই। ভবনটি অবশ্যই ভাঙা হবে। শিগগিরই পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বলেন, এই ভবন ভাঙতে দুই কোটি টাকার মতো লাগতে পারে।
রাজধানীর উত্তরায় তৃতীয় প্রকল্পে ১৭ নং সেক্টরে ১১০ কাঠা জমি বাজার মূল্যের অর্ধেক মূল্যে বিজিএমইএকে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। নতুন ভবনে আন্তর্জাতিকমানের সব সুযোগ-সুবিধা রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে পোশাক খাতের গবেষণা ও উন্নয়ন, প্রদর্শনী কেন্দ্র, ক্রেতা এবং বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক উপযোগী হল, সুইমিং পুল ও অ্যাপারেল ক্লাব উল্লেখযোগ্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।