পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গুম-খুনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে একদিন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হবে। গুম হওয়া দলের সংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলীর পরিবারের সাথে গতকাল বনানীর বাসায় সাক্ষাতের পর বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এনফোর্স ডিজএপিয়ারেন্স- এটা সম্পূর্ণরূপে মানবতাবিরোধী একটা অপরাধ। জাতিসংঘের যে চাটার্ড আছে সেই চাটার্ডে পরিষ্কার করা হয়েছে- দিস ইজ এ ক্রাইম এগেনেস্ট হিউমেনেটি। আজকে এই সরকার অভিযুক্ত হবে এই ক্রাইম এগেনেস্ট হিউমিনেটির জন্য। আমরা একটা জিনিসে বিশ্বাস করি, একদিন না একদিন এই মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচার হবেই। আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্রহীনতা আছে, জনগণের প্রতিনিধি নেই। সত্যিকার অর্থে যেদিন জনগণের প্রতিনিধির সরকার গঠিত হবে সেইদিন এর বিচার অবশ্যই হবে।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসবে এরকম প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ইলিয়াস আলীর বাসায় এসছি তার ছোট মেয়ে আমাদের সামনে আসেনি। আসেনি এজন্য কারণ সে অত্যন্ত বিব্রতবোধ করে কষ্ট পায়। আমর মনে আছে ৬ বছর আগে যখন এখানে আসি আপনারা সবাই দেখেছেন ফুঁটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে প্রতিদিন বাবার জন্য অপেক্ষা করত। আজও সে তার বাবার প্রতীক্ষায় আছে। আমরাও তাদের পাশে আছি। আমরা আশা করব, ভবিষ্যতে এর একটা সুষ্ঠু বিচার হবে।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে মহাখালীর সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে থেকে সাদা পোশাকের সদস্যরা ইলিয়াস আলী ও তার গাড়ি চালককে তুলে নিয়ে যায়।
বিকালে বিএনপি মহাসচিব ইলিয়াস আলীর বাসায় যান। তিনি তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা ও তার বড় ছেলে আবরার ইলিয়াসের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।
ইলিয়াস আলীর দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে আবরার ইলিয়াস পশ্চিম ইংল্যান্ড থেকে ব্যারিস্টারি পাস করেছেন, ছোট ছেলে মো. লাবিব শারর ইংল্যান্ডের কভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ছোট মেয়ে সায়ারা নাওয়াল বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যায়ন করছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল পরামর্শ দিয়েছেন, আজকে যে, আমরা এই গুম দিবসে আমাদের দলের যারা গুম হয়েছেন যথা সম্ভব তাদের বাসায় যাওয়ার চেষ্টা যেন করি। আমি ইলিয়াস আলীর বাসাসহ চারটি বাসায় গিয়েছি। আমাদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ঢাকা শহরে যারা আছেন তাদের বাসায় গিয়েছেন। গুম হওয়া পরিবারের সাথে আমরা সবসময় যোগাযোগ রাখি, চেষ্টা করি তাদের পাশে দাঁড়ানোর। তাদের কষ্ট আমরা ভাগ করে নিতে পারি না কিন্তু তাদের কষ্টটা আমরা অনুভব করি।
গুম হওয়া পরিবারের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগে আমি দক্ষিণখানে গিয়েছিলাম ছাত্র নেতা তারিকুল ইসলাম ঝুন্টুর বাসায়। তার মা বলছিলেন, আমার এই ছেলেটা ছিলো সবচেয়ে ভালো ছেলে, অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিলো। মা বলছিলেন যে, তাকে সালাম না করে কোনোদিন ঘুমোতে যেতো না। সেই ছেলে গুম হয়ে গেছে। কিছুদিন পরে ছেলের বাবা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তাদের তৃতীয় সন্তান দুর্ঘটনায় পা ভেঙে গেছে- এই পরিবারটি অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় আছে।
নিজামুদ্দিন মুন্নার বাসায় গিয়েছিলাম। অনেক কষ্ট করে এই ছেলেটি বিএ পাস করেছিলো। তার বাবা এমন কোনো জায়গা নাই যাননি, ভারতেও গেছেন, বহু জায়গায় গিয়ে ছেলেকে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত অসুখ হয়ে বাবা মারা গেছেন। এমন অনেক পরিবার আছে যারা অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে আছেন। আমরা যথা সম্ভব চেষ্টা করছি তাদের পাশে দাঁড়ানোর। আজকে গুম দিবসে আমি এই মানবতাবিরোধী অপরাধের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
ইলিয়াস আলী, নিজামুদ্দিন মুন্না ও তারিকুল ইসলাম ঝন্টুর বাসা ছাড়াও নাখালপাড়ায় সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায়ও যান মহাসচিব। এ সময়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন, এসএম জাহাঙ্গীর, শায়রুল কবির খান, সাহাবুদ্দিন সাগর, আলী আকবর আলী, জুলহাস পারভেজ, মুনির হোসেন, আফাজউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিকালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বংশালে মো. সোহেল, জহিরুল ইসলাম জহির, পারভেজ হোসেন, মো. চঞ্চল, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সূত্রাপুরের খালিদ হোসেন সোহেল, সেলিম রেজা পিন্টু, সম্রাট মোল্লা এবং সেলিমা রহমান সবুজবাগে মাহবুব হাসান সুজন ও কাজী ফরহাদ হোসেনের বাসায় গিয়ে তাদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেন।
গুম হওয়া পরিবারদের জন্য নেতৃবৃন্দ তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফল নিয়ে যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।