Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দাউদকান্দির গ্রামীণ সড়কে খানাখন্দ

যান চলাচলে ও এলাকাবাসীর দুর্ভোগ

সেলিম আহমেদ, দাউদকান্দি (কুমিল্লা) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার কানড়া-চারপাড়া-জায়গীর-দশপাড়া সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয়নি। সড়কটির পিচ উঠে বিভিন্ন স্থানে গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। তখন এই সড়কে যানবাহন চলাচল মুশকিল হয়ে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দাউদকান্দি কার্যালয় ১৯৯২ সালে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের তিন কিলোমিটার অংশ পাকা করে। এরপর থেকে আর সড়টির সংস্কার হয়নি। অথচ এই সড়ক দিয়ে উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের কানড়া, জায়গীর, চীপপাশা, রাঙ্গাশিমুলিয়া, চারপাড়া, সাতপাড়া, বেকীসাতপাড়া ও ইছাপুর গ্রামের ছয় হাজার মানুষ ছাড়াও জায়গীর কামিল মদরাসা, দশপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দলপুর উচ্চবিদ্যালয়, গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়, গৌরীপুর বিলকিস মোশাররফ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গৌরীপুর সরকারি কলেজ, গৌরীপুর আকবর আলী খান কারিগরি বাণিজ্যিক কলেজ, গৌরীপুর অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও চারপাড়া আল-আজহার স্ট্যান্ডার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত যাওয়া-আসা করেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক কানড়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি হলে এ সড়কের গর্তে পানি আটকে কাদা হয়ে যায়। তখন এই সড়কে অটোরিকশা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
চীপাশা গ্রামের দোকানদার আবদুর রশিদ, জায়গীর গ্রামের কবির হোসেন, কানড়া গ্রামের লোকমান হোসেন বলেন, ভাঙা ও কাদায় ভরা এই সড়ক দিয়ে তাঁদের দোকানের মালামাল আনতে গেলে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়। তারপরও অনেক সময় গাড়ি মেলে না। তখন কাঁধে ও পিঠে করেই মালামাল আনেন। জায়গীর গ্রামের ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম বলেন, সড়কের চারপাড়া থেকে জায়গীর পর্যন্ত এক কিলোমিটারের অবস্থা খুবই নাজুক। এই সড়কে শুষ্ক মৌসুমে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। তখন গ্রামবাসীর কষ্টের সীমা থাকে না। আশপাশে কোনো খাল না থাকায় নৌকাযোগেও যাতায়াতের ব্যবস্থা নেই। স্কুলছাত্র তাপস দেবনাথ ও ওমর ফারুক বলে, বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে কাদা জমে। তখন রিকশা কিংবা অটোরিকশার চালকেরা এ সড়ক দিয়ে যেতে চান না। গ্রামবাসী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাদাপানি পার হয়ে যাতায়াত করে।
বাসরা গ্রামের গৃহবধূ রিনা আক্তার বলেন, ‘চারপাড়া গ্রামে আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। সড়কের এ করুন অবস্থার কথা মনে হলে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি আসার সাহস পাই না।’ বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনির হোসেন তালুকদার বলেন, ১৯৯২ সালে নির্মিত সড়কটিতে এ পর্যন্ত সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হলে এই সড়কের ইছাপুর এবং কানড়া হয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, অটোরিকশা দাউদকান্দি টোল প্লাজা পর্যন্ত চলাচল করত। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়ে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে একটি মোটরসাইকেল পর্যন্ত চলাচল করতে পারে না। গর্তে ভরা সড়কটি সংস্কার ও পাকাকরণের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীকে ঢাকায় তালিকা পাঠিয়ে কাজ করার জন্য বারবার তাগাদা দিয়েছেন।
এলজিইডি দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহসান আলী বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে গত বছর তালিকা পাঠিয়েছেন। কিন্তু বরাদ্দের অভাবে কাজটি শুরু করা যাচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ