বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
উল্লাপাড়া সংবাদদাতা : সন্ত্রাসী হামলায়, একাধিক মিথ্যা মামলায় ৭ বছর ধরে জমি-জমা, ঘরবাড়ী এবং গ্রাম ছাড়া ১৩টি পরিবার অবশেষে এমপির হস্তক্ষেপে গ্রামে ফিরেছে। শনিবার প্রশাসনের সহযোগিতায় নিজ নিজ ঘরে উঠেছে তারা। সন্ত্রাসীদের কাছে দখলে থাকা এই পরিবার গুলোর প্রায় ৭০ বিঘা জমি-জমা উদ্ধারেও দেয়া হয়েছে আইনি প্রক্রিয়ার নির্দেশনা। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের খাদুলী গ্রামে গত ৭ বছর আগে সন্ত্রাসী হামলায় জমি-জমা,ঘরবাড়ী হারানো ১৩টি পরিবার স্থানীয় এমপি তানভীর ইমামের হস্তক্ষেপে আবার গ্রামে ফিরে এসেছে।
নির্যাতিত পরিবারগুলোর সুত্রে জানা যায়, গত ২০০৯ সালে উল্লাপাড়া উপজেলার খাদুলী গ্রামে মৃত সাইফুল ইসলাম গং দের ১৩ টি পরিবার স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান নজরুল ইসলাম গংয়ের হামলার শিকার হয়। বিএনপি সমর্থক বানিয়ে সন্ত্রাসীরা এই পরিবারগুলো বসতবাড়ীতে হামলা চালিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়। একই সাথে তাদের প্রায় ৭০ বিঘা চাষাবাদের জমিও জোড়পূর্বক দখল নিয়ে সস্ত্রাসীরা চাষাবাদ করছে। এরা যাতে গ্রামে ফিরতে না পারে সেজন্য পরিবারগুলোর সদস্যদের উপর খুন সহ একাধিক মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়। ওই সন্ত্রাসীদের হাতে ২০১০ সালে এই নির্যাতিত পরিবারের লাবু সরকার নামে এক সদস্য নৃশংসভাবে খুন হয়।
কথা হলে নির্যাতিত পরিবারের সদস্য মো সৈয়দ আলী আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে জানান, আমরা সন্ত্রাসী হামলায় সবকিছু হারিয়ে গত ৭ বছর ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে এলাকা ছাড়া হয়ে দিনমজুরী করে মানবেতর জীবন যাপন করেছি। ঘটনার পর পর আমার বাবা মারা গেলে তাকে গ্রামে দাফর করতে গেলেও সন্ত্রাসীরা দাফন করতে বাধা দেয়। পরে অন্যস্থানে জানাযা করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে লাশ দাফন করেছি। আমাদের পরিবারের লোকদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয়েছে। তিনি আরো অভিযোগ করেন,উল্লাপাড়ার সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের প্রত্যাক্ষ মদদে সস্ত্রাসীরা আমাদের বিএনপি সমর্থক বানিয়ে এমন কর্মকান্ড করেছে। আমার কলেজ পড়–য়া ভাইকে পরীক্ষার আগে পুলিশ দিয়ে ধরে রিমান্ডে এনে নির্যাতন করা হয়েছে। এ নিয়ে একাধিক পত্র-পত্রিকা এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হলেও প্রশাসন ছিল নির্বিকার। বিষয়টি আমার পরিবার পরিজন নিয়ে উল্লাপাড়ার বর্তমান সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের পুত্র তানভীর ইমামকে জানাই। তিনি আমাদের এই নির্যাতনের ঘটনা শুনে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশকে আমাদের গ্রামে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
শনিবার সকালে উল্লাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আকরাম আলীর নেতৃত্বে উল্লাপাড়া মডেল থানার অফিসার ইন চার্জ দেওয়ান কউশিক আহমেদ থানা পুলিশ নিয়ে ওই ১৩টি পরিবারের অন্তত ৫০জন সদস্যকে নিয়ে গ্রামে যায়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্থানীয় ইউপি সদস্য মো.জাহাঙ্গীর আলম এবং গ্রাম্য প্রধানদের উপসিস্থিতে পরিবারগুলোকে তাদের ঘরে তুলে দেন। দীর্ঘদিন পর নিজ বাড়ীতে ফিরে নির্যাতিত পরিবারগুলোর কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। প্রতিবেশীরাও তাদের পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এসময় এক আবেক ঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো.জামাল সর্দার বলেন,সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম এই নির্যাতিত পরিবারগুলোকে প্রশাসনের সহায়তায় এলাকায় ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার প্রতি মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। তার এই সময় উপযোগী মহৎ উদ্দ্যেগে আমরা দারুণ খুশি।
উল্লাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আকরাম আলী জানান,সংসদ সদস্য মহোদয়ের নির্দেশে ওই পরিবারগুলোকে পুলিশের সহায়তায় নিজ বাড়ীতে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের বলা হয়েছে এই পরিবারগুলোর উপর আর কোন নির্যাতন করা হলে তাদের বিরুদ্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। একই সাথে তাদের বে-দখল হয়ে যাওয়া জমি-জমাও আইনি প্রক্রিয়ায় উদ্ধার কর সহ তাদের নিরাপত্তায় কয়েকদিন পুলিশ প্রহরা দেয়া হবে।
জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ-৪, উল্লাপাড়ার সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম বলেন, নির্যাতিত পরিবারগুলোর কথা শুনে আমি মর্মাহত হয়েছি। তাদের এলাকায় ফেরা,জমি-জমা উদ্বার সহ সার্বিক আইনি সহায়তায় দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।