পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মূল প্রজনন মৌসুমকে সামনে রেখে অসময়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলীয় এলাকায় ইলিশের বিচরণ ও আহরণ এর বংশ বিস্তারকে ব্যাহত করতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে মৎস্য বিভাগ। চলতি মৌশুমের মত গতবছরও ভরা বর্ষায় বৃষ্টির অভাবে সাগর ও উপক‚লীয় নদ-নদীতে তাপমাত্রার আধিক্য ইলিশের বিচরণকে ব্যাহত করে। ফলে আশ্বিনের পূর্ণিমার মূল প্রজননকালের আগেভাগেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ সাগর থেকে উপকূল হয়ে নদ-নদীতে উঠে এসেছিল।
গত সপ্তাহখানেক ধরে গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলীয় এলাকা ও উপক‚ল সংলগ্ন নদ-নদীতে ইলিশের আধিক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অসময়ে ইলিশের এ আধিক্য জেলেদের মুখে সাময়িক হাসি ফুটালেও তা সুদুরপ্রসারি বিপত্তি সৃষ্টি করতে পাড়ে, মনে করছে মৎস অধিদপ্তর। বরিশাল, পিরোজপুরের পাড়েরহাট, পটুয়াখালীর কলাপাড়া এবং আলীপুর-মহিপুর ও গলাচিপা, বরগুনার পাথরঘাটা ছাড়াও ভোলার চরফ্যাশনের মোকামগুলোও কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে ইলিশে। বাজারে ইলিশের আমদানি বাড়ায় দামও কিছুটা পড়তির দিকে। আমদানি বাড়ায় গত এক সপ্তাহে পাইকারি বাজারে ইলিশের দর ২৫% পর্যন্ত কমে গেছে। কিন্তু আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার সময়টিই ইলিশের মূল প্রজনন মৌসুম। এ সময় ২২দিন ইলিশের মূল প্রজননকাল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মৎস্য বিজ্ঞানীগন। উপকূলের ৪টি এলাকার ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার প্রজনন এলাকায় সব ধরনের মৎস্য আহরন, পরিবহন, বিপনন নিষিদ্ধ থাকবে।
কিন্তু মূল প্রজনন মৌশুমের আগের এ সময়ে সাগর থেকে ব্যাপকহারে যে ইলিশ উঠে আসছে তার ৯০ ভাগের পেটেই ডিম রয়েছে। আর একমাস পরেই আশ্বিনের পূর্ণিমার আগে থেকে পরের পনের দিন এসব মা ইলিশের উপকূলীয় এলাকায় ডিম ছাড়ার সময়। অথচ অসময়ে মা ইলিশের দল সাগর থেকে উপকূল হয়ে দক্ষিণের নদ-নদীতে উঠে আসায় উদ্বিগ্ন মৎস্য বিজ্ঞানীগন।
মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. অলিয়র রহমান জানান, এ সময়ে অধিকহারে ইলিশ সাগর থেকে উঠে আসা মোটেই ভাল লক্ষন নয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক গবেষণার ওপরও জোর দেন তিনি। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক জানান, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে গতবছর এবং এবারও বর্ষা মৌসুমে উপক‚লীয় এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমান স্বাভাবিকের কম। পাশাপাশি তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ফলে উপক‚লীয় এলাকার নদ-নদীর পানি যথেষ্ঠ উত্তপ্ত। একদিকে বৃষ্টির অভাব, অপরদিকে তাপমাত্রা আধিক্যে নদ-নদী ও উপক‚লের পানির উষ্ণতাও বেশি থাকায় ভরা বর্ষায় সাগর থেকে এবার সময়মত ইলিশ উজান ঠেলে নদ-নদীতে আসেনি।
মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, ইলিশ সারা বছর কমবেশি ডিম ছাড়লেও আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগে পড়ে উপক‚লের ৪টি এলাকায় ডিম ছেড়ে আবার সমুদ্রে ফিরে যায়। কিন্তু এবার ভাদ্রের শুরু থেকে নদ-নদীতে ইলিশের উপস্থিতি মৎস্য বিজ্ঞানীদের দুঃশ্চিন্তা কিছুটা বৃদ্ধি করছে।
আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে ইলিশের অবদান এখন ১%-এরও বেশি। আর মৎস্য খাতে এর অবদান প্রায় ১২-১৩%। আশ্বিনের পূর্ণিমার আগে পড়ে ২০১৫ সালের ইলিশ আহরন নিষিদ্ধকালিন ১৫ দিনের স্থলে ২০১৭ সালে ২২ দিনে উন্নীত করা হয়। ফলে এ সময়ে ইলিশের নিষিক্ত ডিমের পরিমান ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৫ কেজি থেকে ৩৭% বেশি, অর্থাৎ ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ কেজিতে উন্নীত হয়।
মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, সারা বিশ্বে যেখানে ইলিশের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রতি বছর তা গড়ে ৫-১০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দেড় দশকে দেশে ইলিশ উৎপাদন প্রায় তিনগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।