দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
তথ্য পরিবেশেন করার ক্ষেত্রে ইসলামে বিধি-নিষেধ রয়েছে। সমাজের শান্তি-শৃংখলা বিঘিুত হয়, এ জাতীয় তথ্য পরিবেশন করা ইসলামী মূল্যবোধের পরিপন্থি কাজ। কারণ ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যকে সমর্থন করে। ভ‚য়া বা মিথ্যা তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে গুজব তৈরী করে, সমাজের শান্তি-শৃংখলা বিনষ্ট করা ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না। ভ‚য়া তথ্য দিয়ে গুজব তৈরীর ফলে মানুষের প্রাণহানি ঘটে, সম্পদের ক্ষতি হয়। যা কখনোই একজন নাগরিকের কাম্য হতে পারে না। ভ‚য়া তথ্য পরিবেশন করা হলো ফাসিক ব্যক্তির কাজ। এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হলো, মোমিন ব্যক্তির নিকট যখন কোন খবর বা তথ্য আসবে, সে তা পরিবেশন করার পূর্বে তথ্যের সত্যতা যাচাই বাছাই করে নিবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, যদি কোনো ফাসিক তোমাদের কাছে কোনো খবর নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা যাচাই করে নাও। এ আশংকায় যে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো কওমকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’ (সূরা হুজরাত: ৬)। গুজবকে কেন্দ্র করে সমাজে অস্থিরতা তৈরী হয়। যা মূলত; ভ‚ল তথ্য আদান প্রদান করা থেকে সৃষ্টি হয়। এছাড়া শুনা কথার মধ্যে তথ্য বিভ্রাটের সুযোগ থাকে। তথ্য বিভ্রাটের গুজবে সমাজের শান্তি, শৃংখলা ও সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়। হযরত মুহাম্মদ (সা) এর নওবুয়ত পরবর্তী সময়কালে মুনাফিকরা ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উদ্দেশ্যেমূলক ভাবে ক‚টকৌশল করতো। তারা সত্যের সঙ্গে মিথ্যাকে মিশিয়ে সমাজে গুজব রচনা করতো। ইহার মূল উদ্দেশ্যে ছিলো, আরবের আন্ত:গোত্রীয় সম্প্রীতি নষ্ট করা। হযরত মুহাম্মদ (সা) কে সত্য প্রচারের ক্ষেত্রে বিব্রত বা বাধাগ্রস্থ করা। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘মুনাফিক দল, যাদের অন্তরে কুফরীর ব্যাধি রয়েছে ও যারা মদীনায় গুজব রটনা করে বেড়ায়, তারা যদি বিরত না হয়, তাহলে আমি নিশ্চয়ই আপনাকে তাদের ওপর প্রবল করে দেবো, অতঃপর এরা সেখানে আপনার প্রতিবেশী হিসেবে সামান্য কিছ্ ুদিনই থাকতে পারবে।’ (সূরা আহযাব: ৬০)। সাম্প্রতিক কালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি অনাকাংখিত ঘটনা ঘটেছে। যার অধিকাংশই গুজবকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছে। সাধারণত গুজব রটানোর ক্ষেত্রে মুনাফিকরা উঠতি বয়সের তরুণদেরকে ব্যবহার করে থাকে। মোমিনদেরকে গুজব তৈরী করার বিষয়ে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘যে বিষয়ে তোমাদের কোনো জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না; কেননা কান, চোখ ও অন্তর, এ সব কয়টির (ব্যবহার) সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সূরা বনী ইসরাঈল: ৩৬)।
ইসলাম শান্তি ও ন্যায়ের ধর্ম। যূগ যূগ ধরে সকল সমাজ ব্যবস্থায় মুনাফিকদের চক্রান্ত অব্যাহত ছিলো। মুনাফিকদের প্রচেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে। গুজব রচনাকারীকে কেয়ামত দিবসে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘অতঃপর তার চাইতে বড় অত্যাচারী আর কে হতে পারে যে মানুষকে গোমরাহ করার জন্যে অজ্ঞতাবশত আল্লাহর নামে মিথ্যা রচনা করে; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সীমা লংঘনকারী জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করে না।’ (সূরা আন‘আম: ১৪৪)। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন, ‘প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার জিহ্বা এবং হাত থেকে সকল মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ (বোখারি:৯)। মোমিন বান্দাদেরকে ইসলামী মূল্যবোধ অনুযায়ী তথ্য যাচাই বাছাই করে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। গুজব তৈরীর মত্যে ঘৃন্য কাজ থেকে আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুক। আমীন।
উত্তর দিচ্ছেন ফিরোজ আহমাদ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।