Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রবীর মিত্রের একাকী জীবন

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০২ এএম

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে ১৯৬৭ সালে একটি সিনেমা মুক্তি পায়। নবাব সিরাজকে নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম ছবির পরিচালক খান আতাউর রহমান। এর চিত্রনাট্যও করেছেন তিনি। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন মরহুম আনোয়ার হোসেন। সিনেমাটি তখন দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল। সেই সাফল্যের পর ১৯৮৯ সালে নির্মিত হয় রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। এর নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অভিনেতা প্রবীর মিত্র। ষাটের দশক থেকে প্রবীরমিত্র চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে নায়ক হিসেবে কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। এরপর চরিত্রাভিনেতা হিসেবে অভিনয় করে দর্শকপ্রিয়তা পান। তবে নবাব সিরাজউদ্দৌলা চরিত্রে অভিনয় করে তিনি সবচেয়ে বেশি সাড়া জাগিয়েছিলেন। তখন তাকে বাংলার রঙিন নবাব নামে অভিহিত করা হতো। প্রবীণ এই অভিনেতা এখন আর সিনেমায় অভিনয় করেন না। শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে তার অভিনয় থেমে গেছে। বাসায় একাকী জীবনযাপন করেন। নীরবে-নিভৃতে কাটে তার জীবন। অস্টিওপরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। এই রোগে তার হাড়ে ক্ষয় ধরেছে। ঠিকমত হাঁটতে পারেন না। প্রচন্ড ব্যথায় ভোগেন। প্রবীর মিত্র বলেন, আমি আর সিনেমায় কাজ করার মত পরিস্থিতিতে নেই। আদৌ কাজ করতে পারব কিনা জানি না। দিনরাত বাসায় থাকি। এ ঘর থেকে ও ঘরে যাই লাঠিতে ভর করে। সারাদিন বাসায় বই, পত্রপত্রিকা আর টেলিভিশন দেখে দিন কাটে। আগে সময় পেলে বিকেলে ছুটে যেতাম কাকরাইল ফিল্ম পাড়ায়। চা খেতাম, আড্ডা মারতাম। সেসব এখন স্মৃতি। কারো সঙ্গেই এখন আর দেখা হয় না। হঠাৎ কারো মনে পড়লে হয়তো আসেন আমাকে দেখতে। সে সংখ্যা খুবই কম। চিকিৎসার জন্য গত বছরের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনেতা প্রবীর মিত্রকে ২৫ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। সেই টাকায় চালিয়ে নিচ্ছেন চিকিৎসা। ১৯৪০ সালে পুরনো ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ডাকঘর নাটকে অভিনয় করেছিলেন। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে জলছবি নামে একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দুর্দান্ত একজন অভিনেতা হিসেবে। তিতাস একটি নদীর নাম, তীর ভাঙা ঢেউ, অভাগী, প্রতিজ্ঞা, বড় ভালো লোক ছিল, জন্ম থেকে জ্বলছি, নবাব সিরাজউদ্দৌলা থেকে শুরু করে চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। শারীরিক অসুস্থতা ও একাকীত্বকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাসায় চার দেয়ালের মাঝে দিন কাটছে ৭৯ বছর বয়সী এই অভিনেতার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার প্রাপ্ত এই অভিনেতার স্ত্রী অজন্তা মিত্র মারা গেছেন ১৫ বছরেরও বেশি সময় আগে।



 

Show all comments
  • বিল্লাল হোসেন ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৯:৪৯ এএম says : 0
    শেষ জীবনে এমনই হয়, এটা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফুল্লাহ ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৯:৫১ এএম says : 0
    একজন আল্লাহ ওয়ালার জন্য এই একাকিত্ব তৃপ্তির যখন সর্বক্ষণ মহান রবের সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়
    Total Reply(0) Reply
  • সাজেদা আক্তার ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৯:৫১ এএম says : 0
    প্রিয় একজন অভিনেতা ছিলেন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ