Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুই পদে ছাত্রদলের প্রার্থী ১১০

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৮:৫৯ পিএম

দীর্ঘ দিন পর ছাত্রদলের শীর্ষ দুই পদে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের আপত্তির কারণে প্রথম দফা কাউন্সিলের তফসিল ঘোষণার পর দিতে হয়েছে পুনঃতফসিল। তবুও নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসেননি তিনি। সেই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিতরণ করেছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। নির্ধারিত দুই দিনে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১১০জন প্রার্থী (সভাপতি পদে ৪২ ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৬৮)। এর মধ্যে প্রথমদিন শনিবার ১১টি ও শেষদিন রোববার ৯৯টি ফরম বিক্রি হয়।

মনোনয়ন ফরম বিক্রির শেষ দিনে রোববার সকাল থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফরম বিতরণ শুরু করেন ছাত্রদলের কাউন্সিল পরিচালনা কমিটি। এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকা ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। সকাল থেকেই খ- খ- মিছিলে মিছিল নিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে নেতাকর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে ভিড় করেন প্রার্থীরা। এসময় অনেকেই মিছিল সহকারে কার্যালয়ে প্রবেশ করেছেন। সম্মেলন সফলের পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিয়েছেন তারা। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সংখ্যক প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের কারণে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই ফরম সংকট দেখা দেয়। পরবর্তীতে আবারও নতুন ফরম এনে আগ্রহীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

ফরম বিতরণ শুরুর আগে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যে দেশে নির্বাচন বলে কিছু নেই, যে দেশে মানুষের অধিকার বলে কিছু নেই, যে দেশে একাত্তর সালে অর্জিত অধিকার ভূ-লুণ্ঠিত, যে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী মিথ্যা মামলায়, অবিচারে কারাগারে বন্দি, যে দেশে আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারেন নাই, যে দেশে বিএনপির হাজার, হাজার নেতাকর্মী হয় জেলে, না হয় গুমের শিকার, যে দেশের কৃষক ধানে আগুন দেয়, যে দেশে কোরবানির চামড়া রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়, যে দেশে নারীরা সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারে না, সেই দেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য উদ্যোগী হয়েছে। এটা ঐতিহাসিক ঘটনা।

ছাত্রদলের এ কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও স্বৈরতন্ত্র পতনে দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, সবকিছুর লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, সাংবিধানিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা।

ছাত্রদলের আরেক সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ছাত্রদল জন্মলগ্ন থেকেই কাউন্সিল এবং সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক কর্মকা- চালিয়ে এসেছে। এ দেশে অনেকবার গণতন্ত্রের পথচলা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, সামরিক শাসন এসেছে, এর মধ্যেও ছাত্রদল তাদের কর্মকা- পরিচালনা করেছে। হয়ত যথাসময়ে বা নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে কাউন্সিল করা যায়নি। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই অনন্য দায়িত্ব পালন করেছে ছাত্রদল। বৃহত্তর ছাত্রসংগঠন হিসেবে নব্বইয়ের গণআন্দোলনে অনমনীয় নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রদল।

তিনি বলেন, কাউন্সিল মানেই হচ্ছে তর্ক-বিতর্ক। এর মধ্যে দিয়েই কাউন্সিলরা ভোট দেবেন। যারা অংশগ্রহণ করছেন তাদের কথা, তাদের মনন, তাদের বিভিন্ন দিক সব কিছু মিলে ভোটাররা নির্ধারণ করবেন, তাদের উপযুক্ত নেতা কে হবেন। এটা আমরা আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর দেখতে পাবো।

ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক, ডাকসুর সাবেক জিএস ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, আমরা দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চা অব্যাহত রাখতে চাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আগামী দিনের নেতা নির্বাচন করতে চাই। এরাই আগামীতে গণতন্ত্রের ভ্যানগার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী ও খায়রুল কবির খোকন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম তুলে দেন।

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন যারা: ১৪ সেপ্টেম্বরের কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে সভাপতি পদে- আল মেহেদী তালুকদার, হাফিজুর রহমান হাফিজ, সাজিদ হাসান বাবু, সর্দার আমিরুল ইসলাম সাগর, মোঃ এরশাদ খান, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, আরাফাত বিল্লাহ খান, আরজ আলী শান্ত, ফজলুর রহমান খোকন, আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, মোঃ মামুন খান, আসাদুল আলম টিপু, তানভীর আহমদ খান ইকরাম, আমিনুল হাকিম মুন্সি, খলিলুর রহমান, আবু জাহান চৌধুরী হিমেল, আল আমিন কাউসার, রিয়াজ মো. তানভীর রেজা, মো. ফজলুল হক নিরব, মো. আব্বাস আলী, জসিম মোল্লা, মো. এহসান মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. জুয়েল মৃধা, মাসুদ রানা, মাহমুদুল হাসান বাপ্পী, এবিএম মাহমুদুল আলম সরদার, সোলায়মান হোসাইন, মোঃ সুরুজ মন্ডল, মোঃ ইলিয়াছ, মো. আজিম উদ্দিন মেরাজ, মাইনুল ইসলাম, মোঃ আবদুল মাজেদ, বিশ্বজিৎ ভদ্র, সিহাবুর রহমান, এস এম আল আমীন, আবদুল হান্নান, মোঃ আলী হাওলাদার, এসএম আমিনুল ইসলাম, শামীম হোসেন, মো. আল আমিন, নজরুল ইসলাম নাহিদ ও জসিম উদ্দিন।

সাধরণ সম্পাদক পদে- তানজিল হাসান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, আমিনুর রহমান আমিন, আবু তাহের, মহিউদ্দিন রাজু, শাহ নেওয়াজ, রাশেদ ইকবাল খান, মোস্তাফিজুর রহমান, জুবায়ের আল মাহমুদ রিজভী, ইকবাল হোসেন শ্যামল, নাদিয়া পাঠান পাপন, ডালিয়া রহমান, মো. আলাউদ্দিন খান, এম এ কাইয়ুম, মশিউর রহমান রনি, এমদাদুল হক মজুমদার, মানসুরা আলম, মোঃ হামিদ সাজ্জাদ হোসেন, মো. নাঈম হোসাইন, সিরাজুল ইসলাম, শেখ আবু তাহের, মো. তাবিবুর রহমান, এম সাখাওয়াত হোসাইন, মিজানুর রহমান সজীব, আজমীর হোসেন, মুন্সি আনিসুর রহমান, আবদুল মোমেন মিয়া, নাজমুল হক হাবিব, আনিসুর রহমান সুমন, এবিএম জহিরউদ্দিন সোহেল, এন রাকীব জুয়েল, মিজানুর রহমান শরীফ, মো. ওমর ফারুক হিমেল, রিয়াদ মো. ইকবাল হোসেইন, একরামুল হাই নাঈম, ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, মো. আবদুল মান্নান, মো. জামিল হোসেন, মো. আবুল হাসান চৌধুরী, এএএম ইয়াহিয়া, নুরুল ইমরান মজমুদার, রাকীবুল ইসলাম রাকিব, আরিফুল হক, আজিজুল হক সোহেল, সোহেল রানা, মাজেদুল ইসলাম রুম্মন, মাহমুদুল আলম শাহিন, মোঃ ইউসুফ কামাল জনি, বাবুল আখতার শান্ত, মোঃ মিজানুর রহমান, জাকিরুল ইসলাম জাকির, আশিকুর রহমান সুমন, মো. জহিরুল ইসলাম দিপু, মো. আল মামুন, মো. সাইদুর রহমান সোহেল, মাহতাব উদ্দিন জিমি, জুলহাস উদ্দিন, আতাউর রহমান, কেএমএস মুসাব্বির, কাজী মাজহারুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবুল বাশার, আসাদুজ্জামান, সাদেকুর রহমান সাদিক, আশরাফুল আলম, দেলোয়ার হোসেন, সুলায়মান হোসাইন।

তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুই পদের নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। যাতে সারাদেশের ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন। আজ সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে। জমাকৃত মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই করা হবে ২২ থেকে ২৬ আগস্ট, যাচাই-বাছাই শেষে খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৭ আগস্ট, খসড়া তালিকায় স্থান পাওয়া প্রার্থীদের বিষয়ে কোন আপত্তি থাকলে অভিযোগ করা যাবে ২৮ আগস্ট, প্রার্থীদের বিষয়ে আপত্তি থাকলে তা নিষ্পত্তি করা হবে ২৯ ও ৩০ আগস্ট, প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার পর কেউ সরে যেতে চাইলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ৩১ আগস্ট, এরপর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় স্থান পাওয়া প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রদল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ