রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
নরসিংদীকে বলা হয় মাদকের ট্রানজিট ক্যাম্প। আর এসব ট্রানজিট ক্যাম্পগুলোর বেশিরভাগই পরিচালিত হয় মহিলা মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে। নরসিংদী জেলা শহর এলাকাগুলোতে কয়েক শ’ মহিলা মাদক বিক্রিতে জড়িত। গত এক দশকে নরসিংদীর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বাস ট্রেন এবং নৌকা থেকে বহুসংখ্যক মহিলা মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু মাদক সরবরাহ বন্ধ হয়নি। এখন আর নরসিংদী মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী অভিযানের কোন খবর পাওয়া যায় না। কিন্তু মাদকের ব্যবসা চলছে মহাসমারোহে। দেশের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব জেলাগুলোর সড়ক, নৌ ও রেলপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ স্থলে অবস্থিত নরসিংদী জেলা। পূর্ব ভারতের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে নৌপথে কার্গো জাহাজ, রেলপথে আন্তঃনগর ট্রেন এবং সড়ক পথে বড় বড় বাস দিয়ে মাদক প্রবেশ করে নরসিংদী শহরে। এসব মাদকের ক্যারিয়ার বেশিরভাগই মহিলা।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, সিলেট এলাকা থেকে কার্গো জাহাজগুলো ঢাকার পথে যাতায়াত কালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সলিমগঞ্জ এলাকায় যাত্রা বিরতি দেয়। এ সময় নরসিংদীর চরাঞ্চলের আলোকবালী ইউনিয়নের মাধবপুর ও বাখরনগরসহ কয়েকটি এলাকা থেকে কিছু ইঞ্জিনচালিত নৌকা কার্গো জাহাজগুলো থেকে বিভিন্ন মাদক দ্রব্যাদি নৌকা ভর্তি করে গ্রামে নিয়ে যায়। পরে সেগুলো ও নরসিংদী মেঘনার বিভিন্ন শাখা দিয়ে নরসিংদী শহরে ঢুকিয়ে দেয়। একইভাবে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কসবা, ভৈরব এলাকা থেকে নারী ক্যারিয়াররা মাদক নিয়ে আন্তঃনগর ট্রেন দিয়ে নরসিংদী নিয়ে আসে। তারা খানাবাড়ি, আমিরগঞ্জ বাদুয়ারচর এসব এলাকায় ট্রেন থামিয়ে মাদকদ্রব্য বিভিন্ন ক্যারিয়ারদের কাছে হস্তান্তর করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকা থেকে সড়ক পথে বড় বড় বাসে করে মাদকের বড় চালান আসে নরসিংদী শহরে। এসব মাদকের ক্যারিয়ার বেশির ভাগই নারী। প্রাপ্ত তথ্য মতে নরসিংদী দত্তপাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের মাদকগুলো অত্যন্ত সুকৌশলে মেঘনার পানির নিচে লুকিয়ে রাখে। সেখান থেকে মহিলা ক্যারিয়াররা মাদকদ্রব্য এনে খুচরা বিক্রি করে। নরসিংদী জেলা শহরের দত্তপাড়া, কাউরিয়াপাড়া, ব্রাহ্মণপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েক শত নারী সরাসরি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। আগে প্রায়ই এই মহিলা মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হত নরসিংদীর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতে। এসব এলাকার মহিলা মাদক বিক্রেতারা এতই শক্তিশালী যে সেখানে রেল পুলিশও তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারে না। বছর কয়েক পূর্বে জামান নামে একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল। খবর পেয়ে কয়েক শত মহিলা মাদক ব্যবসায়ী লাঠি, ঝাড়ু নিয়ে রেল অবরুদ্ধ করে মাদক ব্যবসায়ী জামানকে ছিনিয়ে নেয়। এসব মহিলা মাদক ব্যবসায়ীরা মাদকের মূল ব্যবসায়ী নয়। তারা হচ্ছে মূল মাদক ব্যবসায়ীদের ডিফেন্ডার। মূল মাদক ব্যবসায়ীরা কখনোই ধরা পড়ে না। তবে পুলিশ ও র্যাবের হাতে নিহত হয়েছে বেশ কয়েকজন কোটিপতি মূল মাদক ব্যবসায়ী।
কিন্তু মহিলা মাদক ব্যবসায়ীদেরকে নিবৃত্ত করতে না পারায় নরসিংদীতে মাদকের রমরমা ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না। দত্তপাড়া, ব্রাহ্মণপাড়া, কাউরিয়াপাড়া, সাটিরপাড়া, তরুয়া, বিলাসদি, ভেলানগর, দাসপাড়া, টাওয়াদী, ঘোড়াদিয়া আমিরাবাদ ইত্যাদি গ্রাম ও মহল্লাসমূহে বহু সংখ্যক মহিলা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এদেরকে মাদক ব্যবসা থেকে নিবৃত্ত করতে না পারায় নরসিংদী মাদক ব্যবসা কমছে না।
নরসিংদী থানার ওসি সৈয়দুজ্জামান মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। পুলিশি অভিযানের মুখে নরসিংদী শহরের কাউরিয়াপাড়ার মাদক ব্যবসায়ী আলেয়া বেগম এবং ঘোষপাড়ার বকুল বেগম আর ভাবির সাথে মাদক ব্যবসা করবে না বলে অঙ্গীকার করেছে। তারা নরসিংদীর পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার ও সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দুজ্জামানের এই মর্মে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে যে তারা আর কখনো মাদক ব্যবসা করবে না। মহিলাদেরকে নিবৃত করতে নরসিংদী সদর মডেল থানা কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন নরসিংদীর সচেতন জনগণ। তারা বলছেন, নারীদেরকে মাদক ব্যবসা থেকে নিবৃত্ত করা গেলে নরসিংদীর ৮০ ভাগ মাদক ব্যবসা কমে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।