Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোপা আমন চাষে ব্যস্ত লালপুরের কৃষক

মো. আশিকুর রহমান টুটুল, লালপুর (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

নাটোরের লালপুরে রোপা আমন ধান চাষে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। শ্রাবণের শেষে বৃষ্টিতে জমি তৈরি, বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহ ও জমিতে ধান রোপনে ব্যাস্ত এই উপজেলার কৃষকরা। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে এই অঞ্চলের কৃষকরা রোপা আমন ধান চাষ করে থাকেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘আষাঢ়ের শেষে শ্রাবণের প্রথম থেকে রোপা আমন ধানের চাষ শুরু হলেও এ বছর মৌসুমের শুরু দিকে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ধান চাষের পূর্বপস্তুতি হিসেবে বীজতলা তৈরী করতে পরেনি এখানকার কৃষকরা। ফলে এবছর রোপা আমন চাষে অনেকটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালপুর উপজেলার কৃষকরা।’
সরেজমিনে গতকাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, দেরি হলেও মাঠ জুড়ে চলছে রোপা আমন ধান রোপানের প্রতিযোগিতা। শতব্যাস্ত দেখেও কয়েকজন চাষীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় রোপা আমন ধান চাষ নিয়ে হতাশায় রয়েছেন এই উপজেলার কৃষকরা। চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান চাষের খরচ অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি হওয়ায় অনেক কৃষকই তাদের লাখমাত্রা অনুযায়ী ধান চাষ করতে পারছেন না।’
লালপুর উপজেলার ধান চাষী শফিউল আলম বলছেন, ‘এবছর চারা সঙ্কট ও সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ধানের চাষের খরচ গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। যদি শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে না থাকে তবে এবছর ধান চাষীদের লোকসন গুনতে হবে।
ওয়ালিয়া গ্রামের ধান চাষী হাসিবুল ইসলাম, মজনু আলীসহ স্থানীয় কৃষকরা জানান, ‘গত ৩ বছর যাবত আশানুরূপ বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় এবং উৎপাদিত ধানের নায্য মূল্য না পাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে আখ ও ভুট্টাচাষ করেছেন।’
তারা আরও জানিয়েছেন, ‘আশনুরূপ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অনেক কৃষক এখনো জমিতে ধান রোপন করতে পারেনি। প্রায় কৃষকই সেচ দিয়ে জমিতে ধান লাগাচ্ছেন। এছাড়াও বৃষ্টি না হওয়ায় ধান লাগানো জমি গুলিও শুখিয়ে মাটি ফাঁটতে শুরু করেছে।’
চলতি মৌসুমে এই উপজেলার প্রায় কৃষকরাই দেশীয় জাতের পরিবর্তে (বিনা ধান-১৭, ৭, ২০, ব্রি-ধান ৪৯, ৬৬, ৭২, হাইব্রিড ধানী গোল্ড ও কেয়া) জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ করছেন। বিজ্ঞানের যুগেও অনেক কৃষক প্রয়োজনের তাগিদে গরু ও মহিষের নাঙ্গল ব্যবহার করছেন।’
ওয়ালিয়া গ্রামের রোপা আমন ধান চাষী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবছর আমি দুই বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছি যাতে পানি সেচ, জমি চাষ, বীজ, শ্রমিক, সারবাবদ প্রথম অবস্থায় খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা।’
এছাড়া পানি সেচ, নিড়ানী, কিটনাশক, ধান কাটা ও মাড়াই বাবদ আরও প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে জানান তিনি।’
লালপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘এবছর লালপুর উপজেলায় ৫ হাজার ৭শত হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লাখ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধান রোপনে দেরি হলেও আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবছর উপজেলায় ধান চাষের নির্ধারিত লাখমাত্রা অর্জিত হবে বলে মনে করছেন তিনি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ