রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
চট্টগ্রামের পটিয়া শহরে শত কোটি টাকায় নির্মিত বাইপাস সড়ক যেন এখন মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১০ আগস্ট ঈদুল আজহার একদিন আগে জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী এমপি সড়কটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেন। সড়কটি খুলে দেয়ার পর গত ১৫ আগস্ট বিকেলে সিএনজি টেক্সি দুর্ঘটনায় আনোয়ারা রোড সংযোগ সড়কে ২ যাত্রী গুরুতর আহত হন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) কাজটি বাস্তবায়ন করলেও বাঁক ও ঠিকাদারের নানা ত্রæটির কারণে উদ্বোধনের আগে বেশ কয়েকটি দুঘর্টনা ঘটে যায়। ফলে জনগণ সড়কের মাঝখানে বাশেঁর খুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। গত ৪ মাস আগে রাস্তার কাজ সম্পন্ন হলেও এই পর্যন্ত প্রবাসী, শিশুসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অনন্ত ১০ জন যাত্রী। বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মোটরসাইকেল চালকসহ দুইজন।
প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটারের বাইপাসে ৬টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বাইপাসের কাজ সম্পন্ন করলেও একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে এটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি। পটিয়া ইন্দ্রপুল থেকে গিরিশ চৌধুরী বাজার পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে দুই দফায় একশ’ কোটি টাকার বাইপাস প্রকল্পের কাজ হয়। বর্তমানে বাইপাসের আনোয়ারা রাস্তার পয়েন্ট, বৈলতলী রোডের পয়েন্ট, ভাটিখাইনের পয়েন্ট, কচুয়াই ইউনিয়নের ফারুকীপাড়ার পয়েন্ট, পৌর সদর থেকে বাকখালী, করল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যাওয়ার পয়েন্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের পটিয়া শহরের ইন্দ্রপুল থেকে বাইপাস শুরু হয়েছে। বাইপাসের চারিদিকে বসতি ও সংযোগ সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ থাকার কারণে এই দুর্ঘটনা হচ্ছে। এছাড়াও সড়কে লাইটিং ব্যবস্থা না করায় সন্ধ্যার পর চুরি, ছিনতাই ঘটছে। যার ফলে দূরপাল্লার বাসগুলো এ সড়ক দিয়ে সন্ধ্যার পরে চলাচল করে না।
সওজ সূত্রে জানা যায়, বাইপাস সড়কের কাজ পেয়েছিল মেসার্স রিলাভেল বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। শুরুতে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার কাজ বরাদ্দ থাকলেও পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে প্রায় একশ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। পৌর সদর থেকে শুরু করে ভাটিখাইন ও কচুয়াই ইউনিয়নের কিছু এলাকা নিয়ে এই বাইপাসটি পুনরায় পৌর এলাকায় পৌঁছেছে। বসতি ও গ্রামীণ সড়ক এলাকা দিয়ে বাইপাসটি যাওয়ার কারণে শুরু হয়েছে দুর্ঘটনা। উদ্বোধনের আগেই পরীক্ষামূলক রাস্তাটি চালু করাতে গিয়ে প্রবাসী ও স্কুল শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছে ৪ জন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, কাজের ঠিকাদার বাইপাসের বিভিন্ন স্পটে উঁচু-নিচু, আঁকা-বাঁকা ছাড়াও ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ বুঝে দিয়ে চূড়ান্ত বিল নিতে তৎপর। কচুয়াই এলাকার কয়েকটি স্পটে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এই পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে পৌর সদরের সুচক্রদন্ডী গ্রামের উপেন্দ্র সর্দারের পুত্র নিতাই সর্দার (৩০), উপজেলার ভাটিখাইন গ্রামের নুরুল কবিরের পুত্র প্রবাসী আবদুর রহিম (৩৫), গাড়ি চালক বাদশা মিয়া (৫০) ও সর্বশেষ গত ২ আগস্ট দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছে কচুয়াই সিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র ও ফারুকীপাড়া এলাকার মোহাম্মদ নাছিরের পুত্র মোস্তাকিম ফারুকী (৬)।
দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) সদ্য বদলী হওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহিদ জানিয়েছেন, পটিয়া বাইপাস সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এপ্রিল মাসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা ছিলো। তবে ঈদের আগে যানবাহন চলাচলের জন্য হুইপ মহোদয় সড়কটি খুলে দিয়েছেন। যে সমস্ত স্পটে দুর্ঘটনা হচ্ছে সেখানে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রনের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।