পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুরোদমে চলছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু অগ্রগতি নেই চট্টগ্রাম শহর থেকে কর্ণফুলী নদী পার হতে নতুন সেতু নির্মাণ প্রকল্পের। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে কালুরঘাট রেলসেতুটিও। এ কারণে দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ শেষ হলেও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন চলাচল বিঘিœত হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩১ সালে নির্মিত ৮৮ বছরের পুরনো কালুরঘাট সেতু দিয়ে ট্রেনের পাশাপাশি ভারী যানবাহনও চলাচল করছে। এতে সেতুটির ঝুঁকি আরো বাড়ছে। গত এক যুগে কয়েক দফা মেরামত করার পরও সেতুটি এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রতি বছর এ সেতুতে দুর্ঘটনাও ঘটছে। এ অবস্থায় কালুরঘাটের বিকল্প সেতু না হলে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন চলাচল সম্ভব নাও হতে পারে।
সূত্র জানায়, কালুরঘাটে সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে নানা জটিলতায় ছিল রেলওয়ে। শুরুতে অর্থায়ন জটিলতায় আটকে ছিল কয়েক বছর। শেষ পর্যন্ত অর্থায়ন নিশ্চিত হলেও নতুন নির্দেশনার কারণে শুধু রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা হয়েছে। ফলে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ শেষেও কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন রেলসেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবে না। তখন সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেনও চালানো যাবে না।
আবার কালুরঘাট সেতু দিয়েও আন্তঃনগর ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। চট্টগ্রাম শহর থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ট্রেন সার্ভিস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, একসময় এ রেলপথে দৈনিক কয়েক জোড়া ট্রেন চলাচল করত। তবে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার পর ট্রেন সার্ভিস কমিয়ে দেয় রেলওয়ে। বর্তমানে দৈনিক দুই জোড়া ট্রেন চলাচল করে। প্রতিটি ট্রেনে মাত্র পাঁচটি বগি ও একটি পুরনো হালকা ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। এ রেললাইনে ট্রেনের গতিবেগ ৩০-৪০ কিলোমিটার হলেও সেতুতে ট্রেনের গতিবেগ ১০ কিলোমিটারেরও কম। এ অবস্থায় দোহাজারী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ শেষ হলেও শুধু সেতুর কারণে বহুপ্রতীক্ষিত এ রেলপথে ট্রেন চলাচল বিলম্বিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন রেলসংশ্লিষ্টরা।
এদিকে কালুরঘাট সেতুর বিকল্প সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা বাস্তবায়নের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। জানা গেছে, শুরুতে মেয়াদোত্তীর্ণ কালুরঘাট রেলসেতুর স্থলে নতুন একটি রেলওয়ে কাম সড়ক সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল রেলওয়ের। ২০১৩ সালে এর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবও (ডিপিপি) তৈরি করে রেলওয়ে। প্রকল্পটির নাম ছিল ‘কর্ণফুলীতে কনস্ট্রাকশন অব রেলওয়ে কাম রোড ব্রিজ’। কিন্তু অর্থায়ন জটিলতায় প্রকল্পটি থমকে ছিল দীর্ঘদিন। শেষ পর্যন্ত সেতুটি নির্মাণে ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা অর্থায়নে সম্মত হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (ইডিসি)। ২০১৮ সালের শুরুতে এ-সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই করে দুই সংস্থা। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগেই চলতি বছরের শুরুতে কালুরঘাট সেতুর স্থলে শুধু রেলের জন্য একটি বিশেষায়িত সেতু নির্মাণের নির্দেশনা আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে নতুন সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করতেই চলতি বছর পার হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এতে রেললাইন নির্মাণ শেষ হওয়ার আগে সেতু নির্মাণ সম্ভব নাও হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর নতুন করে রেলসেতু নির্মাণেও সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। আশা করছি চলতি বছরের মধ্যেই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রতিবেদন তৈরি হবে। এরপর আনুষাঙ্গিক কাজ শেষে অর্থায়নের বিষয়টি নিশ্চিত হলে তবেই রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হবে। কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন ২০২২ সালের মধ্যে নির্মাণ হয়ে গেলে ট্রেন চলাচল যাতে বিঘিœত না হয়, সে বিষয়ে দ্রæততার সঙ্গে সব কাজ করা হচ্ছে। বিকল্প উৎস থেকে অর্থ নিয়ে হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, কালুরঘাট সেতুতে রেলওয়ে কাম সড়ক সেতু নির্মাণের ডিপিপি তৈরির পরও অর্থায়ন জটিলতায় প্রকল্পটি আটকে ছিল দীর্ঘদিন। কুয়েতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দাতা সংস্থার বাংলাদেশে আসার কথা থাকলেও ওই সময় থমকে যায় প্রকল্পটি। পরে কোরিয়ান অর্থ সাহায্য পাওয়া গেলেও শুধু রেলসেতুর জন্য সংস্থাটি অর্থায়নে রাজি নয়। তবে কোরিয়ান সাহায্য পাওয়া না গেলেও দ্রæত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের দাতা সংস্থা এডিবির অর্থ সহায়তার চেষ্টা করবে রেলওয়ে।
রেলের সেতু প্রকৌশল বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ শেষ হলেও ট্রেন চালানো সম্ভব হবে না। কালুরঘাট সেতু দিয়ে পাঁচটি কোচের ট্রেন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যে কারণে নতুন সেতু নির্মাণ ছাড়া কোনো ধরনের আন্তঃনগর ট্রেন চালানো সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বাড়াতে দোহাজারী থেকে মিয়ানমারের গুনধুম সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পটি একনেকে পাস হয় ২০১০ সালে। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ ২৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদী প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।