রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে হাটে পশু ওঠতে শুরু করছে। তবে বেচা-বিক্রি তেমনটা শুরু হয়নি। হাটে দর্শক আছে। ক্রেতা নেই। যশোরের কেশবপুরে কুরবানি উপলক্ষে পশু হাটে ক্রেতা না থাকায় লোকশানের আশঙ্কায় খামারিরা। দিনাজপুরের বিরামপুরে এবার কুরবানির পশুর দাম চড়া। চট্টগ্রামের চন্দনাইশে কুরবানির পশুর বাজার জমতে শুরু করেছে। গফরগাঁওয়ে কুরবানিহাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। তবে আশানুরুপ বিক্রি শুরু হয়নি। এ বিষয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
কেশবপুর থেকে রূহুল কুদ্দুস জানান, কেশবপুরে কুরবানির উপলক্ষে পশুহাটে ক্রেতা না থাকায় লোকশানের আশঙ্কায় খামারিরা। কুরবানিরর আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কেশবপুর সপ্তাহে সোম ও বুধবার পশুরহাট বসে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কেশবপুরে পশুহাটে গরু ও ছাগলের আমদানী হয়েছে প্রচুর। কয়েকজন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, চলতি বছর কেশবপুরে পশুর উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়েছে যার কারণে ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশুর আমদানীও হয়েছে প্রচুর। দেশের বৃহৎ অঞ্চল বন্যায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে বাইরের বেপারির আগমন না ঘটায় বিক্রি খুব কম। এদিকে কেশবপুরে ধানের মূল্য কম থাকায় ক্রেতার আগমনো খুব কম। গরু ব্যবসায়ী মজিদপুর গ্রামের আজিজুর রহমান জানান, চলতি বছর গরু হাটে কোন বেচা বিক্রি নাই। দুই এক জন যাও আছে তারাও পশু হাট থেকে পশু না কিনে গ্রামের খামারিদের কাছ থেকে পশু ক্রয় করছেন।
কেশবপুর প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরের সাধারণ চাষি ও ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করে ও সার্বক্ষনিক তদারকির কারণে কেশবপুরে পশু উৎপাদিত হয়েছে প্রচুর। ওই সূত্র জানান, চলতি বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষে ষাড় উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৪ শত ২২ টি ও ছাগল উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৫ শত ৩৮ টি। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি। এদিকে কেশবপুরের বেশ কয়েকটি পশু খামার রয়েছে। এর মধ্যে গৌরিঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমানের খামারের গরুর সংখ্যা ৫২ টি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪৪ লাখ টাকা। কেশবপুর সদর ইউনিয়নের সদস্য কামাল হোসেনের সততা মৎস্য খামারের অংশ হিসাবে একটি সমবায় গরুর খামার রয়েছে। তার গরুর সংখ্যা ৩২ টি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২৫ লাখ টাকা। খামারির মালিকরা জানান, কুরবানির উপলক্ষে গরু উৎপাদনের কারণে কেশবপুরের উৎপাদিত পশু রয়েছে প্রচুর। এরপরও ভারত থেকে গরুর আমদানী ঘটায় আমাদের উৎপাদিত গরুর মূল্য খুব কম। নায্য মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কায় খামারিদের উৎপাদিত পশু কুরবানির উপলক্ষে কেউ পশু হাটে বিক্রির জন্য আমদানী করছে না। এদিকে কেশবপুরের পশু হাট এজারাদার কেশবপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবজাল হোসেন বাবু ও সাঈদ জাবেদ হোসেন জুয়েল আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, উচ্চ মূল্য দিয়ে আমরা কেশবপুর পশু হাট ইজারা নিয়েছি। ভারত থেকে গরু আমদানী হওয়ায় এবছর হাটে দেশী গরুর ব্যাপক আমদানী ঘটলেও কাঙ্খিত মূল্য না পেয়ে আমদানী এবং ক্রেতা কম। কেশবপুর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র মন্ডল জানান, কেশবপুর পশু অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ও সার্বক্ষনিক তদারকিতে কেশবপুর খামারি ও কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক পশু উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু নায্য মূল্য না পাওয়ায় খামারি ও কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহিন জানান, কুরবানিরর পশুর হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণের যাবতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও জাল টাকা ব্যবসায়ী চক্রদেরকে সনাক্ত করতে জাল টাকা পরীক্ষার জন্য মেশিন বসানো হয়েছে।
বিরামপুর (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী বিরামপুর পৌরসভা গরুরহাট ও নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জ গরুর হাট ও পার্বতীপুরের আমবাড়ি গরুরহাটে চলছে ভিন্ন আমেজে গরু বেচা-কেনা। ক্রেতা-বিক্রেতার ভীড়ে পশুরহাটগুলিতে বিক্রি শুরু হয়েছে! তবে কুরবানিরর পশুর দাম এ মৌসুমে চড়া!
জানা যায়, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, উপজেলার হাজার হাজার গরু-ছাগলগুলিকে কুরবানির জন্য প্রস্তুত করে মালিকেরা কুরবানিরপশু হিসাবে বিক্রী করছেন এসব হাটে। কুরবানি পশু কেনা বেচার জন্য বিরামপুর হাটসহ ঐসব হাটগুলিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা গরু কিনতে হাটগুলিতে আসছেন। প্রাকৃতিক উপায়ে গেরস্তের মোটাতাজা করণ করা গরু ছাগলগুলি কদর একটু বেশি হবার কারনে এসব হাটে ভিড় বাড়ছে দূর দুরন্ত থেকে আসা পাইকাড় ও ব্যাপারী। বিরামপুরসহ এসব এলাকার গরু খামারী কাম ছোট ছোট গ্রাম গঞ্জের গেরস্থরা তাদের পোষা ও আদর যতেœ গড়ে তোলা গরু-ছাগলগুলিকে ঈদ মৌমুসের জন্য নিজ নিজ বাড়িতে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটা তাজা করে কুরবানির উপযোগী করে পশু গুলিকে হাটে বিক্রী করছেন।
হাটগুলিতে ঘুরে জানা যায়, ছোট একটি গরু ৩০হাজার থেকে বড় গরু ৭ লক্ষ টাকা পযন্ত কেনা বেচা হচ্ছে বলে খামারি ও গরু মালিকের জানান। অন্য দিকে চাকরিজীবিদের ঈদ বোনাস পাওয়ায় গরুর হাটে কেনা বেচা মাত্র শুরু হয়েছে। গরুর হাটে ভিড়ের কারনে বাড়ছে মলম পাটি ওপকেট মারদের দৌরত্ব। অন্যদিকে গরু ব্যবসায়ীদের অভিযোগে জানা যায়, পথে পথে গরু ভর্তি ট্রেকে চলছে বিভিন্ন সংস্থান নামে ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি। তার চাদা বন্ধের দাবি জানান। বিরামপুর প্রানী সম্পাদ অফিসের ভেটেরিনারি সাজন ডা. মোছা. সোয়াইবা আখতার নেতেৃত্বে মেডিকেল টিম এসব হাটে সুস্থ প্রাণী পরীক্ষা করে ক্রেতা বিক্রেদের কাছে বিক্রি করার জন্য কাজ করছে বলে জানা যায়।
বিরামপুর উপজেলা প্রাণী সম্পাদ কমকর্তা ইদ্রীস আলী জানান, বিরামপুর উপজেলায় ১৪ হাজার গরু-ছাগল কুরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন খামারীরা।
চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) থেকে মো. আবু মোহাসিন জানান, কুরবানি ঈদকে ঘিরে চন্দনাইশে কুরবানির বাজার জমতে শুরু করেছে। কৃষক, খামারি, বেপারিরা বিক্রির জন্য রাখা গরু, মহিষ ও ছাগলকে দিবানিশি খাদ্য যোগানে ব্যস্ত।
এ দিকে চন্দনাইশের রাজীব ডেইরি ফার্মের মালিক জানান, গত মাসের বন্যায় কবলিত এলাকায় ফসিল জমি, রাস্তার পাশের ঘাস-খড় দীর্ঘ সময় পানিতে ডুবে থাকায় পশু খাবার যোগাতে হিমশিম খাচ্ছি। তাছাড়া গরু, মহিষের বাড়তি খাদ্য সামগ্রীর দাম কয়েক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে এসব পশু পালনের মালিকের জানান। বন্যার কারনে কোরবানি জন্য রাখা এ সব পশু অনেকটা শুকিয়ে গেছে। কোরবানি বাজারে এসব পশু বিক্রি করে তারা উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন কিনা তা শংকায় আছেন। চট্টগ্রামের চন্দনাইশে কোরবানির প্রসিদ্ব পশু বিক্রির হাটগুলি হচ্ছে, দোহাজারী হাজারীহাট, গাছবাড়িয়া খানহাট, কাঞ্চনাবাদে রৌশনহাট, বরকল মৌলভি হাট, বরমা ধামির হাট, সাতবাড়িয়া নাজির হাট, চন্দনাইশ সদর ছাড়া ও চন্দনাইশের বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জে ছোট ছোট হাটবাজার রয়েছে। মধ্যবৃত্ত পরিবারে কোরবানিদাতা সংখ্যা তুলনা মূলক বেশি থাকে বিধায় মাঝারি আকারের গরু, মহিষে চাহিদা বেশি। আবার কয়েক পরিবার মিলে যৌথভাবে মাঝারি বা তার চেয়ে বড় ধরনের কোরবানিরপশু ক্রয় করে থাকেন। দেশিয় ছাড়া বাইরের গরু মহিষও ছাগল বাজারে নামলে দাম ছড়া থাকেনা, ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতায় থাকে তবে ক্ষেত্রে দেশীয় গরুর দাম কমে যেতে পারার আশংকা থাকে বলে অভিজ্ঞ মহল জানান। এবারে ছাগলের দাম তুলনা মূলক বেশি বলে জানান ক্রেতা সাধারণ। ফলে নিম্নবর্গের পরিরারে নানাভাবে হিমশিম খাচ্ছেন। চাকরিজীবী অনেকে বেতন ভাতা পাওয়া অপেক্ষায় আছেন।
গফরগাঁও থেকে মো. আতিকুল্লাহ জানান, এবার কুরবানিরর পশুরহাটে তেজিভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দক্ষিণ ময়মনসিংহের ঐহিত্যবাহী গরু হাট, গফরগাঁও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রধান প্রধান হাট-বাজারে জমে উঠেছে বেচ কেনা। গফরগাঁও পৌর শহরসহ ছোট বড় বেম কয়েকটি হাটে এবার তুলনামূলকভাবে ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড় বেড়েই চলছে। গতবারের চেয়ে এবার দামও বেড়েছে। গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া, পালের বাজার, গাভীশিমূল বাজার, কান্দিপাড়া, দত্তেরবাজার, শিবগঞ্জ বাজার, রসুলপুর আমরীতলা বাজার ও গয়েশপুর বাজারসহ আশে পাশের উপজেলা ও চরাঞ্চল থেকে প্রচুর গরু ছাগল উঠে। নামকরা বাজার গুলোতে পাইকাররা দূর দূরান্ত থেকে ও গরু আমদানী হয়। গফরগাঁও পৌরসভার সালটিয়া বাজারে গরু কিনতে আসা মো. ফয়জুল্লাহ জানান , গরুর দামের সাথে এবার ক্রেতার সংখ্যা ও বেড়েছে। ২০ হাজার টাকা থেকে লাখ টাকা দামের গরু বাজারে উঠেছে। অনেক দর দাম করলেও গরু কেনা যাচ্ছে না ঈদের শেষ বাজার গত সোমবার প্রচুর গরু-ছাগল ওঠে। সাধারণ মানুষ দামের কারনে গরু কিনতে না পেরে শেয়ারে গরু কিনছে। এবার শেয়ারে কুরবানির দেয়ার কথা জানান, চরশিলাসী গ্রামের মো. সোহাগ। কুরবানির হাট ছাড়াও ঈদের মার্কেটিং জমজমাট হয়ে উঠেছে। একদিকে চলছে ঈদের আমেজ অন্যদিকে সাধারণ নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষ ঈদ করতে পারবে কিনা এ নিয়ে সংশয়ে রয়েছে। অনেকেই ঋণ বা সুদে টাকা খুজছেন। গফরগাঁও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাকরিজীবি, ব্যবসায়ী ও বিত্তশালী কৃষক এবং প্রবাসীরা পশুর হাটে ভিড় জমালে ও সাধারণ মানুষের টার্গেট খাসি ক্রয় করার জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।