বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বর্ষা মৌসুমে খুলনায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। আশঙ্কাজনকভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় উদ্বিগ্ন হচ্ছে নগরবাসী।
সোমবার পর্যন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একইসাথে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ অবস্থার মধ্যে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০ শয্যার ডেঙ্গু ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস এ তথ্য জানান।
ডা. প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার জন্য তিন সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার (ইএনটি) ডা. সোহানা সেলিমকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটিতে অন্যরা হচ্ছেন- মেডিক্যাল অফিসার ডা. শেখ মো. জাকারিয়া ও সহকারী রেজিস্ট্রার (মেডিসিন-২) ডা. পার্থপ্রতিম দেবনাথ। পাশাপাশি হাসপাতালে ১০ শয্যার একটি ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। এ হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের এনএসওয়ান-এজি টেস্ট ফ্রি করানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত এখানে ২৯ জন ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে খুলনার বেসরকারি হাসপাতালরে মধ্যে, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ডক্টরস পয়েন্ট, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আরো কয়েকটি ক্লিনিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন রয়েছে। খুলনায় প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন ও বিএমএসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বাড়তি সতর্কতা পালন করতে পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎকরা।
ডাঃ পার্থ প্রতীম দেবনাথ বলেন, খুমেকে এ পর্যন্ত ২৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পর অনেক রোগী বেসরকারি হাসপাতালে বা ঢাকায় চলে গেছেন। বহির্বিভাগে জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের মধ্যে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা গেছে। আমরা ভর্তি হবার পরামর্শ দিচ্ছি।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের (রোগ নিয়ন্ত্রণ) সূত্র মতে, ৩ জুলাই থেকে খুলনা বিভাগের ডেঙ্গু আক্রান্তদের মনিটরিংয়ের কাজ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৯ জন, সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩জন, বাগেরহাটে ৪ জন, সাতক্ষীরায় ৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছে ।
খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ এস এম কামাল বলেন, সাধারণত এডিস মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। এরা পরিষ্কার পানিতে জন্মায়, বিশেষত বাড়ির ছাদে বা আশেপাশে এমনকি ঘরের ভেতরেও ফ্রিজের জমা পানিতে, সোফার নিচেও জন্ম নিতে পারে। সুস্থ্য থাকতে হলে বাড়ির ভেতর পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি আশেপাশেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। একই স্থানে তিন থেকে পাঁচ দিন পানি জমে থাকলে সেখানে এডিস মশা ডিম পারে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এ কে এম আব্দুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতি ওয়ার্ডে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করা হচ্ছে। সচেতনতামূলক সভা, র্যালি ছাড়াও নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কনভারজেন্সি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে ডেঙ্গু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। খুলনায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে খুলনা জেলায় ১১৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি করে মেডিকেল টিম কাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।