পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবশেষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে চীনের অর্থায়নে জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না হারবারের ঘুষ কেলেঙ্কারির পর তা বতিল করা হয়। পরে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সবশেষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স¤প্রতি এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
এর আগে চীনের অর্থায়নে জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০১৫ সালে। পরের বছর সরকারের অর্থনৈতিক ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না হারবারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করা হয়। তবে প্রকল্প ব্যয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কোনোভাবেই সমঝোতা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ঢাকা-সিলেট ২২৬ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে নির্মাণে ৫৮ শতাংশ বেশি দরপ্রস্তাব করেছিল চায়না হারবার। পরে তা কমিয়ে ৪৩ শতাংশ বাড়তি দর প্রস্তাব করা হয়। তাতেও সওজের প্রস্তাবিত দরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তৃতীয় আরেকটি প্রস্তাব দেয় চায়না হারবার। এতে দুই প্রস্তাবের মধ্যে এক হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা বা ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর পার্থক্য থেকে যায়। যদিও ৪৩ শতাংশ বেশি ব্যয়েই কাজটি দেওয়ার জন্য ২০১৭ সালের মে মাসে সুপারিশ করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রীকে পাঠানো চায়না হারবারের এক চিঠিতে প্রকল্পটি দ্রæত অনুমোদনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে অনুরোধ করা হয়। এজন্য চায়না হারবারের পাঠানো ওই প্রস্তাবের ওপর অর্থমন্ত্রী লেখেন, ‘প্লিজ রিলিজ দিস ইস্যু অ্যাট ইউর আর্লিয়েস্ট কনভেনিয়েন্স।’
যদিও অর্থমন্ত্রীর ওই সুপারিশেও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রকল্পটি অনুমোদনে সম্মত হয়নি। পরবর্তীকালে সড়ক বিভাগের সচিব পরিবর্তন হলে নতুন সচিবকে এক লাখ ডলার ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করে চায়না হারবার। তবে ঘুষের অর্থ ফেরত দিয়ে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দেন সড়ক বিভাগের সচিব। এতে প্রকল্পটি থেকে বাদ দেওয়া হয় চায়না হারবারকে। সে সময় নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
সূত্র জানায়, স¤প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে দেশটির অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করে দুই দেশ। তবে সে আলোচনায় ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প ছিল না। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তার পরামর্শে চীনের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হয়। এদিকে সাসেক (সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন) করিডোরভুক্ত হওয়ায় ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ দেখিয়েছে এডিবি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে এডিবির অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট চার লেন বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে।
সওজের তথ্যমতে, ঢাকা-সিলেট রুটে ২১৪ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা ছাড়াও উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া পুরো চার লেনের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো সরলীকরণ করা হবে, যাতে ৮০ কিলোমিটার গতিতে যান চলাচল করতে পারে। এছাড়া প্রকল্পটির আওতায় ৩২১টি কালভার্ট, ৭০টি ছোট-মাঝারি সেতু, পাঁচটি রেল ওভারপাস, চারটি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস ও ৪২টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, চীনের অর্থায়নে জিটুজিতে ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন করা হয়েছিল। তাই এখন চাইলেই তা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেওয়া হবে। এরপর এডিবির অর্থায়নের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে।
জানা গেছে, নিজস্ব অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট চার লেন বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৬১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এছাড়া ঢাকা-সিলেট-তামাবিল পর্যন্ত চার লেন নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের জন্য পৃথক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে এডিবির অর্থায়ন নিশ্চিত হওয়া গেলে দ্রæত চার লেন নির্মাণ শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।