বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত হলেও মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েক গুন। নেই খাদ্য। নেই বিশুদ্ধ পানি। নেই শৌচোকর্ম সারার সু-ব্যবস্থা। প্রকৃতির ডাক এলেই চরম ভোগান্তিতে পড়ে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। কারো ঘরে রান্না হলেও নেই তরকারী। ফলে শুকনো ভাত লবণ দিয়ে খাওয়া ছাড়া কোন গতি নেই। এ দর্ভোগ জেলার প্রায় সাড়ে ৮লাখ বানভাসি মানুষের।
পানি কমলেও কোন মানুষ এখনও ঘরে ফেরেনি। সরকারী ভাবে ত্রাণ শুরু হলেও বেশিরভাগ বানভাসীদের কাছে পৌছায়নি খাবার। বিশাল এক জনগোষ্টি পানি বন্দী হওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা চরম বিপাকে পড়েছেন। পানি বন্দী মানুষ তাদের কাছে ত্রান চাইছে। তাদের ভয়ে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্রহ্মপূত্র,ধরলা ও দুধকুমোর নদীর পানি এখানো বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নে পানিতে পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। রৌমারী সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য সুজাউল ইসলাম জানান, ঐ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মন্ডল পাড়া এলাকার খাইরুজ্জামান (৬৫) মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে ভেলায় করে বাড়ি ফেরার পথে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বন্যার পানিতে পড়ে মৃত্যু বরণ করেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪জনে।
গণকমিটির কেন্দ্রিয় সভাপতি কলামিষ্ট নাহিদ নলেজ বন্যার ভয়াবহতা ব্যাখ্যা করে বলেন, এ অঞ্চলের মানুষদের বাঁচাতে হলে সরকারকে এখনই চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হোক। কারণ এ তিনটি উপজেলার ৯৫ভাগ মানুষ এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে বানের পানিতে ভাসছে। ঘরে ঘরে খাদ্যের জন্য হাহাকার বিরাজ করছে। ঘটছে মানবিক বিপর্যয়। সাধারণ মানুষের একমাত্র সম্বল গবাদিপুশুও রক্ষা করতে পারছে না। কারণ গবাদিপশু রাখার জায়গা নেই। নেই গো-খাদ্য।
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বন্যার ফলে ৫৭টি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পরেছে। ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর। বন্যায় এক হাজার ২৪৫কিলোমিটার রাস্তা, ৪০ কি.মি বাঁধ ও ৪১টি ব্রীজ/কার্লভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নলকুপ ক্ষতিগস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৭৩৪টি। প্রায় ২লক্ষাধিক গবাদিপশু পানিবন্দি।
ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কারণে এখন পর্যন্ত ৭৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এরমধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২৮টি, মাদ্রাসা ৭০টি, মহাবিদ্যালয় ১৭টি এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৪০টি। অপরদিকে ১হাজার ২৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে ৫৩৬টি। নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে ৪টি। এতে ১ লাখ ৩৫ হাজার শিশুর পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত ৫ মে.টন জিআর চাল, ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৬ হাজার ৪২৮ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার ২৩ সেঃ মিঃ ব্রক্ষপুত্র নদের পানি বিপদ সীমার ৬৩ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।