পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রিয়া সাহা যে বক্তব্য দিয়েছেন তা স¤পূর্ণ অসত্য, মিথ্যা ও বানোয়াট। এ বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের উস্কানিম‚লক বক্তব্যে উগ্রবাদীদের উৎসাহিত করে। এ ছাড়া তার এ বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহী। দেশদ্রোহী হিসেবে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিম‚লক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গতকাল শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংখ্যালঘুদের নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার দেয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রিয়া সাহার বক্তব্য প্রসঙ্গে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তার এ কথার সঙ্গে কেউ একমত নন। বাংলাদেশে সা¤প্রদায়িকতাকে উস্কে দিতে তিনি এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ সা¤প্রদায়িকতাকে ঘৃণা করে। তিনি বলেন, দেশদ্রোহী হিসেবে প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ প্রসেস শুরু হয়ে গেছে। এ সময় সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে অনেক মানুষ চলাচল করে। সবাইকে তো চেনা সম্ভব না। কেউ যদি ভিড়ের মধ্যে কোনো নেতার সঙ্গে ছবি তোলে তাহলে কি আওয়ামী লীগ নেতার দোষ? এটা একান্তই তার নিজস্ব বিষয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ১৬ দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এ সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও।
তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেন, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। তিনি আরো বলেন, এখন সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা আমাদের ভ‚মি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি। তার এ বক্তব্য নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন। ওই সম্মেলনে অংশ নেয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই মিথ্যা। বিশেষ মতলবে এমন উদ্ভট কথা বলেছেন তিনি।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই বক্তব্যটি (প্রিয়া সাহার অভিযোগ) সস্পূর্ণ অসত্য ও কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি একটি নিন্দনীয় অপরাধই শুশু নয়। এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য দেশের অভ্যন্তরে লুক্কায়িত মতলববাজ ও সা¤প্রদায়িক গোষ্ঠীকে সহায়তা করবে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, বাংলাদেশের কোনো বিবেকবার দেশপ্রেমিক হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের সদস্য প্রিয়া সাহার বক্তব্যের সাথে কোনোভাবেই একমত হবে না। আমি পারসোনালি অনেকের সাথে আলাপ করেছি, তারা এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে। কাদের বলেন, এমনকি মার্কিন রাষ্ট্রদূত, তিনিও বলেছেন, এই ধরনের বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই। বাংলাদেশের সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির চমৎকার একটা পরিবেশ বিরাজ করছে। এই বক্তব্য দেয়ার পর এনিয়ে আর কোনো দ্বিধা-দ্ব›দ্ব থাকার অবকাশ থাকতে পারে না।
প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কথা সরকার ভাবছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই দেশের নাগরিক হয়ে দেশের বিরুদ্ধে এই ধরনের অসত্য উদ্দেশ্যমূলক এবং দেশদ্রোহী বক্তব্য রেখেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে এবং সেই প্রক্রিয়া চলছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রিয়া সাহার সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্নে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই। আমাদের কোনো সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যও নয়। অনেক অনুষ্ঠানে আমরা যাই, সেখানে অনেককে চিনিও না। অনেকে এসে ছবি তোলে। ছবি তুললেই তো সে আমাদের লোক হয়ে গেল না। এটা কোনো ষড়যন্ত্র মনে করছেন কি না- প্রশ্নে কাদের বলেন, ষড়যন্ত্র হতে পারে।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের যারা সহযোগিতা করেছেন এমন ২০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের। তিনি বলেন, দুইশ’ জনের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ২৮ জুলাই থেকে বহিষ্কার ও শোকজ নোটিসের কার্যকারিতা শুরু হবে। কাদের বলেন, যারা জাতীয় নির্বাচনে বিদ্রোহ করেছে ধরে নিতে পারেন আগামী নির্বাচনে তাদের নমিনেশন পাওয়ার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হবে না। শাস্তি শুধু বহিষ্কার করলে হয় এমনটা নয়, দলের শাস্তি অন্যভাবেও দেয়া যায়।
একে যৌথসভার পর অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে কাদেরের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।