কুড়িগ্রামে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। সেই সাথে বেড়েছে দুর্ভোগ। এখনো ঘরে ফিরতে পরছে না দুর্গতরা। গত ১১দিনে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। বানভাসীদের জন্য অপ্রতুল ত্রাণের কারণে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। বিশাল এলাকা জুড়ে বন্যা হওয়ায় জনপ্রতিনিধিরা পরেছে চরম বিপাকে। তারা পৌছাতে পারেনি সবার কাছেই।
এদিকে পানিতে পরে সীমা খাতুন নামে দেড় বছরের একটি শিশু মারা গেছে। সে উলিপুর পৌরসভার খাওনারদরগা গ্রামের ভাটিয়াপাড়ার সাদেক মিয়ার কন্যা। এনিয়ে গত ১১ দিনে পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩জনে।
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বন্যার ফলে ৫৭টি ইউনিয়নের ৮৯৪টি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পরেছে। এতে প্রায় ২ লাখ পরিবারের ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে প্রায় ২ লাখ। ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর। বন্যায় ৫শ কিলোমিটার রাস্তা, ৪০ কি.মি বাঁধ ও ৪১টি ব্রিজ/কার্লভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৪ হাজার মানুষ ১৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৭৩৪টি।
সকাল থেকে হু-হু করে পানি নেমে যাচ্ছিল বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। এরমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৯ সে.মি কমে গিয়ে৯০ সে.মি এবং ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ২৬ সে.মি কমে গিয়ে বিপদসীমার ৫৯সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা দুর্গতদের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ৫টি ওয়াটার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও স্যালাইন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে বলে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা:এসএম আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো: হাফিজুর রহমান জানান, সকল বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত ৮শ’ মে.টন জিআর চাল, ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৬ হাজার ৪২৮ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।