কৌতুকের ঝাঁপি
কী বল উল্টা-পাল্টা শিক্ষক : বল তো সার্ক (ঝঐঅজঈ) কী?ছাত্র : সার্ক (ঝঐঅজঈ) একটা হাঙ্গর?শিক্ষক : কী বল উল্টা-পাল্টা। পারলে না। এবার বল সার্কের জন্মদাতা কোন
মুহাম্মদ বশির উল্লাহ
আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। প্রচ- গরম। শুধু গরম আর গরম। সহ্য করাই দায়। আমার খুব কষ্ট হয়। অন্য বছরের চেয়ে এবার গরম অনেক বেশি। জামা গায় রাখা যায় না। ক্লান্ত হয়ে যাই। পড়ালেখায় মন বসে না। খাওয়া-দাওয়া ভালো লাগে না। রাতে ঘুমানো যায় না। সর্বদাই অসুস্থতার ভাব। আমার সাহস একটু বেশি। তাই ভাবছি আজ মাঠে, গাছের ছায়ায়, সবুজ কার্পেটে ঘুমাবো। যেই ভাবা সেই কাজ। একটি চাটাই আর একটি বালিশ নিয়ে চলে গেলাম মাঠে। মাঠের এক পাশে ছিল কিছু শিউলি ফুলের গাছ। ফুলে ছেয়ে আছে শিউলিতলা। মিষ্টি একটা গহৃহাওয়ার সঙ্গে মিতালি করছে সারাক্ষণ। শিউলি ফুলের আর সবুজের একাকারে মিলিত কার্পেটেই চাটাই বিছিয়ে, তিন টাকার একটি কয়েল জ্বালিয়ে সটান হয়ে শুয়ে পরি। আহ! কি মজা। ভরা পূর্ণিমার রাত। চাঁদ তাঁর আলোর পরসা নিয়ে উদার আকাশে নিয়ে আসে অপার সৌন্দর্য। রাতের অন্দকারে জ্যো¯œার এই অপরূপ সৌন্দর্য আমার মন কেরে নেয়। এরূপ একটি জ্যো¯œা রাত পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। রাত গভীর থেকে গভীরতর হয়। আমার চোখে ঘুম নেই। কিছুটা ভয় পেয়ে, ভয় পাওয়ার আনন্দে কিছটা। একাই শুয়ে আছি। মনে হচ্ছে অনন্তকাল বসে রাতের এ সিগ্ধ আলোক সুধা পান করি। চাঁদ উঠেছে। মাথার উপর বিশার আকাশ। জ্যো¯œার আলোতে পৃথিবী প্লাবিত হয়ে আছে। নিজেকে প্রশ্ন করি জ্যো¯œা রাতে এরূপ সৌন্দর্য চাঁদ পেলো কোথায়। কোন সে মহান সত্তা চাঁদকে এত সুন্দর্য করে সৃষ্টি করে পুরো জগতে তার আলো ছরিয়ে দেন? তিনিই বা কত সুন্দর? এ অপূর্ব সৌন্দর্যের স্রষ্টা মহান শিল্পী আল্লাহ। যিনি সমগ্র বিশ্ব জাহানকে অপরূপ সৌন্দর্যে সৃষ্টি করেছেন। আমার মনে প্রবল আনন্দ। আনন্দে মন নেচে উঠে। গান জানি না। তবুও গানের কলির সুর টানতে লাগলাম। আমি যেন ডুবে যাচ্ছি আলোর মধ্যে। শুধু আলো আর আলো; চারদিক নিস্তব্দ। গভীর রজনী। সকলেই ঘুমিয়েছে। কোথাও কারো কোনো সারা সব্দ নেই। গাছ পালাও ঘুমাচ্ছে। পাখি গুলো নিশ্চুপ, যেন ঘুমাচ্ছে। নিথর রাতের বুকে আমি একাই শুধু জেগে আছি। দূরের নদীতে কলকল ধ্বনিতে স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। মাঝে মাঝে শো শো শব্দে শিউলি পাতা আমাকে বাতাশ করছে। জ্যো¯œার আলোতে আমার চোখ যেন ক্লান্ত হয়ে আসছে। আমি শুয়ে আছি, যেন অনন্তকাল ধরে শুয়ে আছি চন্দোলোকের সর্বগ্রাসী মোহে।
আমার অনুভূতি গরমের পাখা ঘুটছে আজ। তারায় তারায় ভরা আকাশের নিচে পৃথিবীর বুকে বৃক্ষলতা আমার মনের গোপন কুঠিরে যে শান্তির রসিক মন লুকিয়ে ছিল, তা যেন প্রকাশ ঘটেছে আজ। ক্রমেই রাত্রি তার সমাপনী লগ্নে উপনীত হলো। কমে এলো আকাশের আলো। মসজিদের মিনারে ভেসে উঠলো আযানের সুমধুর র্ধ্বনি। আমার মন সারা দিলো তাতে। একটু পরই ভোর হবে। উঠবে রক্ত মাখা সূর্য। ভরাক্রান্ত হৃদয়ে আত্মসমর্পণ করলাম আল্লাহর দরবারে।
দ্বিতীয় দিন। দিনের শেষ। সূর্য পশ্চিম আকাশে ডুবতে থাকে। কর্মক্লান্ত মানুষ ঘরে আর পাখিরা নিরে ফিরে যায়। রাখাল গরুর পাল নিয়ে বাড়ির দিকে রওয়ানা দেয়। সূর্য যেন কালো চাদরে ঢাকা পরেছে। মসজিদ থেকে মুয়াজ্জিনের সুললিত কণ্ঠে ভেসে উঠলো আযানের ধ্বনি। এসব কিছুই সন্ধার আগমনি বার্তা। সন্ধার আগমনের সঙ্গে সঙ্গে আমার প্রেরণা সবুজ কার্পেটে। চাটাই আর বালিশ নিয়ে সবুজের মঝে। আজ খোলা মাঠে। যাতে জ্যো¯œার আলো পুরটা অনুভব করতে পারি। জ্যো¯œার আলোতে চারদিকে আলোকিত। মন কেমন উদাস হয়ে যায়। চারদিক তাকাই। না! কেউ নেই। সটান হয়ে শুয়ে পড়ি। মনে কি যে আনন্দ। যা প্রকাশ করা অসম্ভব। গুণ গুণ গান গাইতে গাইতে কোন সময় যেন ঘুমিয়ে পড়ি।
খট খট, ঠক ঠক, মক মক, চিক চিক, ঝিক ঝিক সব শব্দে ঘুম ভাঙ্গে আমার। কেমন যেন ভয় ভয় করছে। না! আশে পাশে কেউ নেই। পিছন ফিরে তাকাই। শরীরের পশম কাটা দিল। সাদা পোশাকে একটি বুড়ো মানুষ। আমার ভয় আরও বেড়ে গেল। এটা মানুষ না ভুত। যাই হোক যেয়ে দেখি, আস্তে আস্তে উঠে দাড়ালাম। প্রশ্ন করি কে ওখানে? কোন আওয়াজ নেই। সামনে পা বাড়ালাম। অমনি গায়েব হয়ে গেল। সামনে কোথাও আর তাকে দেখা গেল না। এতোক্ষণে আমার পশম কাটা দিল। পিছন ফিরে দেখি আমার চটাইয়ে কে যেন শুয়ে আছে। যেয়ে দেখি একটি লাশ। মূহুত্তের মধ্যে অনেক গুলো ভুত আমাকে ঘিরে ফেললো। আমি চিৎকার দিয়ে উঠি। আব্বু-আম্মু দৌড়ে আসলেন। কেরোসিনের প্রদীপ জ্বালালেন। ততক্ষণে আমার সমস্ত শরীর কাঁপতে ছিল। চারদিক তাকাই, না! মাঠে ঘাটে নয়। নিজের খাটেই শুয়ে আছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।