Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সন্ত্রাস উইপোকার মতো রাষ্ট্র-সমাজকে খেয়ে ফেলছে

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

সন্ত্রাস উইপোকার মতো রাষ্ট্র-সমাজকে ভেতর থেকে খেয়ে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশে আইন শৃঙ্খলার কী ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। কুমিল্লা আদালতে বিচারকের খাস কামরায় কী ভয়াবহ নজিরবিহীন নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটেছে। আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, পুলিশ, আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীদের সামনে একজন আসামি আরেকজন আসামিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আদালতের বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস বলেছেন, এই হত্যার শিকার আমিও হতাম কিংবা এটির শিকার আমার কোনো সহযোগী বা কোনও আইনজীবীও হতে পারতেন। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? দেশে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হলে একজন বিচারক এজলাসে তার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এমন আতঙ্কবোধ করছেন। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশজুড়ে কেবল গুম, খুন, ধর্ষণ, হামলা-মামলা, নারী-শিশুদের ওপর পাশবিক নির্যাতন, প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা, আগুনে পুড়িয়ে লোমহর্ষক কায়দায় হত্যাসহ দেশ ভরে উঠেছে অনাচার অবিচারের মহামারিতে। আর অবৈধ সরকার ব্যস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে। তিনি বলেন, এই রাষ্ট্র কার্যতঃ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি দেখে মনে হয় দেশে কোন সরকারই নেই। তাই তিনি সরকারকে ব্যর্থ দাবি করে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান। রিজভী বলেন, ক্ষমতা জোর করে বেশি দিন ধরে রাখা যায় না, জোর জবরদস্তির পরিণতি বড় করুণ এবং ভয়ঙ্কর, তাই ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।
তথ্যমন্ত্রী উস্কানীমূলক কথা বলছেন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় শহরে মহাসমাবেশের প্রস্তুতি চলছে। শান্তিপূর্ণ এসব মহাসমাবেশে যোগ দিতে মানুষের আগ্রহের কোন কমতি নেই। মহাসমাবেশ ঘিরে সাধারণ জনগণের অভাবনীয় সাড়া দেখে সরকারের চিত্তচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশের নামে অতীতের মতো কোনো বিশৃঙ্খলা বা ভাঙচুর সহ্য করা হবে না। জনগণ ও রাষ্ট্রের যে কোনো ক্ষতিসাধনের বিরূদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তথ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, আপনি যে বিশৃঙ্খলার কথা বলছেন, সেটিই তো উস্কানিমূলক, একটা অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই এ ধরনের বক্তব্য রাখছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ না থাকলে তো কোন সমাবেশই হবে না, নিজেদের আয়োজনে নিজেরাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবো এই কথা কি কেউ বিশ্বাস করবে? এসব কথা বলে পরিবেশ তিক্ত করছেন তথ্যমন্ত্রী নিজেই। পুলিশী তান্ডব, মাস্তানদের তান্ডবের মাধ্যমে বিরোধী দলের সভা পন্ড করার ইতিহাস ঐতিহ্য আপনাদেরই। বিশৃংখলা সৃষ্টি করেন আপনারা। আমাদের সব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল, আছে এবং থাকবে। কোন উস্কানিমূলক কথা বলে আমাদের নিবৃত্ত করতে পারবেন না। দম বন্ধ করা বাকশালী শাসনের বহমান অন্ধকার সময়ের অবসান ঘটিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা জনগণকে সাথে নিয়ে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে।
শেয়ার বাজার আবারো দৈন্য-দশাগ্রস্ত অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা মানে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারী, লুটপাটের মহোৎসব। আওয়ামী সরকার আর শেয়ার বাজার এক সাথে চলতে পারে না। দেশের অর্থনীতি দুর্নীতির বেড়াজাল দিয়ে ঘেরা বলেই বারবার শেয়ার বাজারে ধ্বস নামছে।
তিনি বলেন, পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারী বলছেন, ২০১০ সালে যে শক্তিশালী চক্র শেয়ারবাজার থেকে পরিকল্পিতভাবে প্রায় ১০ লাখ বিনিয়োগকারির মূলধন হাতিয়ে নিয়ে পথে বসিয়ে দিয়েছিল, সেই চক্রই আবার বাজারে সক্রিয় হয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবেই এমন অবস্থার সৃষ্টি করছে। লুটপাটের জন্য পাতানো খেলার মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম প্রভাব ফেলা হচ্ছে। ২০১১ সালে গঠিত খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্তে যাদের নাম উঠে এসেছিল, ধরাছোয়ার বাইরে থাকা সেই ‘রাঘব বোয়ালরা’ আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। #



 

Show all comments

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ