Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রামে ঘরে ঘরে পানি : দুর্ভোগ চরমে

ব্রহ্মপূত্র ১২৪ ও ধরলা ১১৭ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৯, ৩:০৬ পিএম

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপূত্র ও ধরলা নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় জলমগ্ন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। রৌমারীতে বাঁধ ভেঙে নতুন করে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে রৌমারীর কর্ত্তিমারীতে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পানিতে পরে সাইফুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবক নিখোঁজ হয়ে যায়। এনিয়ে দু’দিনে জেলায় এক প্রতিবন্ধীসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার ফলে পানিবন্দী মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও আশ্রয়ের সংকটে ভুগছেন তারা। চরাঞ্চলে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সারাদিন পানিতে চলাফেরা করায় বানভাসীরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বেড়ে গিয়ে ১২৪ সে.মিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯৪ সে.মি এবং ধরলা নদীর পানি ব্রীজ পয়েন্টে ১১৭ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার উলিপুর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন সাহেবের আলগা’র মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিক হোসেন এই প্রতিবেদককে জানান। এই ইউনিয়নে মোট ৫ হাজার ৩৭০টি পরিবারের মধ্যে ৪ হাজার ৩শ’ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পরেছে। ১৪টি উচুঁ জায়গায় অবস্থান নিয়েছে ১৮শ’ পরিবারের লোকজন। এছাড়াও নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে ৮শ’ পরিবার।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, এই ইউনিয়নের ৩৫ হাজার মানুষের মধ্যে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি এবং চারদিকে পানি ওঠায় লোকজন রান্নাবান্না করতে না পেরে এক প্রকার না খেয়ে রয়েছে। এছাড়াও দিন মজুর শ্রেণির লোকেরা কর্মসংকটের কারণে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। জরুরী ভিত্তিতে তাদেরকে ত্রাণ সহায়তার কথা জানালেন তিনি।
উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, ঘরে ধান আছে কিন্তু ভাঙতে না পারায় খেতে পারছে না বানভাসিরা। এখানে জরুরী ভিত্তিতে শুকনো খাবার প্রয়োজন। এই ইউনিয়নের ২৪ হাজার মানুষের মধ্যে ২২ হাজার মানুষ পানিবন্দী।
রৌমারীর যাচুর চর ইউনিয়নের কর্ত্তিমারী চাকতাবাড়ী এলাকায় গত রাতে (১৫ জুলাই) ওয়াপদা বাঁধ ভেঙ্গে নতুন করে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এখানে কর্ত্তিমারী মাস্টারপাড়ায় বাঁধের ৭০ ফিট অংশ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পরে। এতে ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ যাদুরচর ডিগ্রি কলেজ, যাদুরচর মডেল কলেজ এবং এমএ হাকিম আইডয়াল মহিলা কলেজসহ ১০টি গ্রাম এখন পানির নীচে অবস্থান করছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী। একই অবস্থা বিরাজ করছে পুরো জেলা জুড়ে।
কুড়িগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো: হাফিজুর রহমান জানান, বন্যার্তদের সহায়তায় নতুন করে ৩ মে.টন চাল ও ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা পরিস্থিতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ