Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবারও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি

উপযুক্ত মূল্য ও পানি সঙ্কটে দক্ষিণ-পশ্চিমে কমছে পাট চাষ

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

প্রতিটি মৌসুমে পাট চাষি সোনালি আঁশ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনরাত পরিশ্রম করেন পাট উৎপাদনে। হারানো ঐতিহ্য ফেরানোর প্রত্যাশা করেন পাটচাষিরা। কিন্তু পাটের উপযুক্ত মূল্য না পাওয়া, পাট পঁচানো পানির অভাব, বোরো ধান উঠার পর পাট বপনের সময় না পাওয়া ও বাজার বিশৃঙ্খলা পাট আবাদে চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সূত্র জানায়, গত মৌসুমেও লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হয়নি। ক্রমাগত পাট আবাদ ও উৎপাদন কমলে পাটকলগুলো কাঁচাপাটের সঙ্কট তৈরি ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমে যাবার শঙ্কা থাকবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর রিজিয়নের উপ-পরিচালক সুধেন্দু শেখর হালদার জানান, এ অঞ্চলের ৬ জেলায় ১ লাখ ৬১ হাজার ৪ শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ১ শ’ ৮৬ হেক্টর। তিনি বলেন, পাট পচানোর পানির অভাবে পাটের রং কালো হয়ে যাওয়ায় চাষিরা উপযুক্ত মূল্য পান না। তাছাড়া বোরো ধান কাটার পর পাট বপনের সময়ও পান না চাষিরা। তার কথা, চাষিরা জমি ফেলে রাখেন না। যে ফসলে ভালো দাম পান সেই ফসলের দিকে ঝুকে পড়েন। নানা কারণে আসলে পাট আবাদ কমছে।

অধিদপ্তরের খুলনা রিজিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান জানান, খুলনা রিজিয়নে ৪ জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজান ৭ শ’ ৪৫ হেক্টর। সেখানে আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৫ হেক্টর। অল্প লক্ষ্যমাত্রা তবুও সেখানে পুরণ হয়নি। কারণ গোটা অঞ্চলে প্রায় একই।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কারণ হিসেবে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ব্যাখ্যা আবহাওয়ার হেরফেরে আবাদের সময় প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হয় না। এতে অনেক চাষি পাট বপন করতে পারেনি। চাষিদের বক্তব্য, বৃষ্টি ও পানির অভাবতো আছেই সবচেয়ে যে বিষয়টি চাষিদের মনোকষ্ট তা হচ্ছে পাটের বাজার ব্যবস্থাপনার অভাবে হাট-বাজারে বিশৃঙ্খলায় উপযুক্ত মূল্য পাওয়া যায় না। পর্যবেক্ষকদের কথা, ক্রমাগতভাবে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। প্রবল হচ্ছে সোনালি আঁশের স্বর্ণযুগ ফেরার স্বপ্নভঙের আশঙ্কা।

কৃষি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদগণ ও চাষিসহ সংশিষ্টদের মন্তব্য, বিরাট সম্ভাবনাময় ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম কৃষির এই খাতটির দিকে সামগ্রিকভাবে নজর দেয়া জরুরি। পাটচাষিদের আবাদে অনাগ্রহের কারণ চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ