Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৯, ৪:৪৪ পিএম

অবিরাম বৃষ্টি আর পাহাড়ী ঢলের কারণে ধরলা,তিস্তা,দুধকুমোর,ব্রক্ষপুত্র সহ ১৬নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ছে চর-দ্বীপচরসহ নদ-নদী তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৪শ গ্রামে প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ। ঘর-বাড়ি ছেড়ে বন্যা দুর্গতরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও গবাদি প্রাণি নিয়ে পাকা সড়ক এবং উঁচু বাধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে নলকুপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি বসত ঘর ও রান্না ঘরে পানি প্রবেশ করায় রান্না বাড়ার কাজ বন্ধ রয়েছে বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে। ফলে শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে কাঁচা পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। গ্রামীন সড়ক গুলি পানির নীচে তলিয়ে থাকার কারণে মানুষজন ছোট ছোট নৌকা আর ভেলাতে চলাচল করছে।
বন্যার পাশাপাশি নদী ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়েছে ৭শ২৫টি পরিবার। এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, কাঁচা-পাকা রাস্তা, ব্রীজ ও কালভাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যা পরিস্তিতি মোকাবেলায় সকল বিভাগকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে ছুটি। খোলা হয়েছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম।
সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার,তিন্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২২ সেঃমি ও দুধকুমোর নদীর পানি ৩৫ সেঃমিঃ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর, রাজারহাট ও নাগেশ্বরীসহ জেলার সবকটি উপজেলার নদ-নদী তীরবর্তী চরাঞ্চাল ও নি¤œাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এসব এলাকার অন্তত প্রায় তিন লাখ মানুষ। তলিয়ে গেছে গ্রামীন রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, শাক সবজিসহ আমন বীজতলা।
বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার বন্যা কবলিত পরিবারগুলো ঘর-বাড়ি ছেড়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও গরু ছাগল নিয়ে উঁচু সড়কে অবস্থান নিতে শুরু করেছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: দেলওয়ার হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নে মোট ৪১ হাজার মানুষ বসবাস করছে। এরমধ্যে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ৫ হাজার পানি বন্দী পরিবারের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। হয়েছে। ত্রান সহায়তা পেলে বন্যা কবলিতদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
বন্যার্তদের মাঝে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ত্রান তৎপরতা শুরু না হলেও জেলা প্রশাসন অফিস সুত্রে জানা গেছে বন্যার্তদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। তালিকার কাজ শেষ হলে এলাকাগুলো ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে।
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: হাফিজুর রহমান জানান, আমাদের স্টকে থাকা ২শ মেট্রিক টন চালের মধ্যে ৫০ মেট্রিক টন চাল বন্যা কবলিতদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া আছে। শুকনো খাবার বরাদ্দ চেয়ে চিঠি লেখা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আরো বেশি জাহিদা থাকলে সেটা দ্রুত জানাতে বলা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ‘ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা তিস্তা,দুধকুমোর সহ প্রতিটি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা পরিস্থিতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ