পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেগম খালেদা জিয়া কারামুক্ত হলেই অন্ধকারের কালো রাতের অবসান হবে বলে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বেগম জিয়া মুক্ত হলে মানুষ প্রাণখুলে কথা বলতে পারবে, গুমের ভয়-ক্রসফায়ারের ভয়-মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারের ভয় থেকে মুক্ত হতে তাদের মধ্যে সাহস সঞ্চারিত হবে। কোটি কোটি মানুষের এই আকাঙ্খা সরকার প্রধানের মনে ভীতি তৈরী করেছে। তাই তিনি বিচার-আচার-পুলিশ-প্রশাসনসহ সকল রাষ্ট্রযন্ত্রকে হাতের মুঠোয় নিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিসহ বিরোধী দল-মত-পথে বিশ্বাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে নীল নকশা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন। নিজের পথকে কন্টকমুক্ত করতেই সরকার প্রধান কারাগারে আটকিয়ে রেখেছেন বেগম জিয়াকে।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণতন্ত্র ও বেগম খালেদা জিয়া যেন অভিন্ন সত্ত্বা। দেশের মানুষ আজ সকল অধিকারহারা হয়ে এক ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে প্রতিনিয়ত দেশনেত্রীর মুক্তির প্রহর গুনছে। কারণ পাশবিক নারী-শিশু নির্যাতন, কুপিয়ে হত্যা, আগুনে পুড়িয়ে লোমহর্ষক হত্যা, নারী নির্যাতনের পর পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়াসহ দেশ অনাচার অবিচারে ভরে উঠেছে গোটা দেশ। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা বেগম জিয়ার মুক্তি মাধ্যমে সম্ভব।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সাহেব বলেছেন-‘প্রধান বিচারপতি থাকার পরেও বিচার পাইনি, আর এখন তো ন্যায় বিচার পাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।’ একজন প্রধান বিচারপতি তাঁর স্বাধীন বিচারকর্মের কারণে তাঁকে প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। এখন তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে যে মামলা দেয়া হয়েছে তা গোটা বিচার বিভাগের জন্য সরকারের সতর্ক সঙ্কেত। সরকার প্রধান ও সরকারের কোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বললেই সেটিকে দেশদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলার কারণেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। সরকারের কুকীর্তি-অপকীর্তি এবং অনাচারে প্রতিবাদ করার জন্যই বেগম জিয়া কারাগারে। ক্ষমতার নেশায় মজে শেখ হাসিনা অন্যায়কে ন্যায় এবং ন্যায়কে অন্যায় হিসেবে প্রতিপন্ন করছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ঘোর বিরোধী সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী শেখ হাসিনা গায়ের জোরে বেগম জিয়াকে আটকিয়ে রেখেছেন। দেশের কৃষক-শ্রমিক-শিক্ষক-চিকিৎসক-প্রকৌশলী-সাংবাদিক সকলেই আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সোচ্চার। দেশের সকল জনগোষ্ঠী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই মূহুর্তে মুক্তি দিতে হবে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের পক্ষভুক্ত হওয়ার কারণে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতার প্রতিপক্ষ হয়ে দাড়িয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সরকার ঢাকার নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে ক্রীতদাসের মতো পন্যে পরিণত করার চেষ্টা করছে। শাশ্বত গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় সংবিধানেও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা স্বীকৃত। কিন্তু পুলিশ মিছিল দেখলেই নেতাকর্মীদেরকে ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার বানিজ্যে মেতে উঠেছে। থানায় গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ রিমান্ড পাওয়া না পাওয়া নিয়ে দরকষাকষি করা হয়। টাকা দিতে না পারলে জটিল মামলা দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হওয়ার পরে তাদেরকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর সৃষ্টি হয় এক বিষাদ ঘণঘোর পরিস্থিতি। পুলিশ স্টেশনগুলো যেন এখন দাসবাজারে পরিণত হয়েছে। আর এই দাস’রা হচ্ছেন বিএনপিসহ সাধারণ জনগণ।
বিএনপির এই নেতা সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করে বলেন, দেশের উন্নয়নের জোয়ার মানুষ দেখেনি, মানুষ দেখছে বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে শহর তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। এক মাসে চট্টগ্রাম নগরী ডুবেছে পাঁচ বার, আর রাজধানী ঢাকার মানুষ বৃষ্টির পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। উজানের পানি ও প্রবল বর্ষণে সারাদেশ এখন পানিতে ভাসছে। লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, জামলপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেটসহ তিন পার্বত্য জেলার বাসিন্দারা এখন পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বন্য বিস্তৃত হয়ে দেশের মধ্যভাগসহ প্রায় সকল জেলা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। একদিকে বসতবাটি তলিয়ে গেছে, গবাদি পশু ও ক্ষেতের ফসল ভেসে গেছে। অন্যদিকে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকটে হাহাকার করছে। ত্রাণের জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও কোন ত্রাণ পাচ্ছে না বন্যাকবলিত মানুষ। গত দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী তাদের দলীয় সভায় বন্যা দূর্গতদের পাশে থাকার ঘোষনা দিলেও এখনও পর্যন্ত্র ত্রাণ তৎপরতার কোন উদ্যোগই দেখা যায়নি। মিথ্যা চিৎকারসর্বস্ব দল আওয়ামী লীগ। অসংযমী ভাষণ, উদ্ভট মন্তব্য, অনাবশ্যক কটুকথা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি। সুতরাং দুর্ভিক্ষ, দুর্যোগ, দুর্বিপাক ও দুর্নীতি ছাড়া জনস্বার্থে ভাল কিছু করার ঐতিহ্য আওয়ামী লীগের নেই। আওয়ামী নেতারা শুনে কম, কিন্তু বলে বেশী। তারা দেশব্যাপী মহাপ্লাবনের বিপর্যয় নিয়ে ছলচাতুরী করছেন।
তিনি বিএনপি নেতাকর্মীসহ দেশের বিত্তবান মানুষদেরকে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় অসহায় মানুষদের পাশে যার যার সামর্থ অনুযায়ী দাঁড়ানোর জন্য আহবান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।