Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশ করবে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

 

ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে বয়সসীমা তুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করে বিলুপ্ত কমিটির বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা। তাদের আন্দোলনের সময় লাঞ্ছিত করা হয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ একাধিক সিনিয়র নেতাকে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলটির শীর্ষ নেতারা। এর পরপরই আন্দোলনকারী ছাত্রদলের ১২জনকে বহিষ্কারও করা হয়। যদিও পরবর্তীতে তারা এই ঘটনার সাথে জড়িত না বলে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে এবং অপ্রীতিকর ঘটনার তদন্ত দাবি করে।
এরই মধ্যে ছাত্রদলের সঙ্কট নিরসনের জন্য স্থায়ী কমিটির দুইজন সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দায়িত্ব দেয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এজন্য আন্দোলনকারীরা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মাধ্যমে তদন্ত কমিটি গঠনসহ ৭ দফা দাবি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে তাদের দাবি উত্থাপন করেন। তদন্ত কমিটি গঠনে বিলম্ব দেখে এবার আন্দোলনে ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ সেই নেতারা।
আন্দোলনকারী ছাত্র নেতাদের কয়েকজন জানান, কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতাদের দিয়ে গঠিত সার্চ কমিটির একাধিক নেতাসহ বিএনপিরও সিনিয়র অনেকের চাওয়া ছিল নয়াপল্টনে অপ্রীতিকর ঘটনা। এজন্য তারা ইন্ধন যুগিয়েছেন যাতে যেকোনভাবে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। তাদের মূল চাওয়া ছিল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে কার্যালয়ের দখল নেয়া। এসব ইন্ধনদাতাদের নাম প্রমাণসহ জনসম্মুখে প্রকাশ করার কথা জানিয়েছেন বিক্ষুদ্ধ ছাত্রদল নেতারা। আগামী দু-একদিনের মধ্যে সংকট সমাধান না হলে সংবাদ সম্মেলন করে ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ ছাত্রদলের একাধিক নেতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের সাবেক এক সহ-সভাপতি বলেন, সার্চ কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা আমাদের বলেছিলেন, রুহুল কবির রিজভীকে কার্যালয় থেকে জোর করে বের করে দিতে। তারা বলেছিলেন নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দিতে, ভাঙচুর করতে। কিন্তু আমরা যারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি আমরা তা হতে দেইনি। উল্টো আন্দোলন চলাকালে কার্যালয়ে মূল গেইটে পাহারা দিয়েছি। যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তিনি আরও বলেন, আমরা জেনেছি, ওইদিন রিজভীকে বের করতে এ্যাম্বুলেন্সও এনেছিল সার্চ কমিটি, এ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার বিল দিয়েছেন সার্চ কমিটির এক নেতা। তারা ওই নেতাকে খুঁজতে চেষ্টা করছেন।’ সেই ইন্ধনদাতারাই আজ আবার ছাত্রদল নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি। সংকট সমাধানের পরিবর্তে ইন্ধনদাতারাই সংকট আরও ঘনীভ‚ত করছেন বলেও জানান ওই ছাত্রদল নেতা।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছাত্রদলের সংকট সহসাই কাটছে না। ক্ষুব্ধ নেতাদের দাবি অনুযায়ী আহŸায়ক কমিটি গঠনে রাজি হননি সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সমন্বয়ে গঠিত সার্চ কমিটির নেতারা। এ অবস্থায় ফের আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্ষুব্ধ নেতারা। ছাত্রদলের সংকট সমাধানে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থায়ী কমিটির দুই নেতা মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সরে দাঁড়াতে চাইছেন। সার্চ কমিটির নেতাদের আচরণ ‘সম্মানজনক’ না হওয়ায় তারা সরে দাঁড়াতে চাইছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্কাইপের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ছাত্রদলের চলমান সংকট নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন। গতকালও বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গেও তারা বৈঠক করেছেন।
ছাত্রদলের ক্ষুব্ধ নেতারা বলেন, সার্চ কমিটির নেতাদের প্রতি আমাদের কোনো আস্থা নেই। আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থায়ী কমিটির দুই নেতার মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে লাঞ্ছিত করাসহ প্রতিটি অপ্রীতিকর ঘটনার তদন্ত দাবি করেছি। ওই ঘটনায় সার্চ কমিটিতে থাকা একাধিক নেতাসহ বিএনপিরও সিনিয়র অনেকের ইন্ধন ছিল, যা খুঁজে বের করতে হবে।
সার্চ কমিটির অন্যতম নেতা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, ছাত্রদলের কাউন্সিলের জন্য তিনটি কমিটি করা হয়েছে। নির্বাচনের শিডিউলও ঘোষণা করা হয়েছে। যেহেতু ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে আবার আহŸায়ক কমিটি করলে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হবে। এটি গঠনতন্ত্রের পরিপন্থীর পর্যায়েও। তার পর আবার এখানে কে আহŸায়ক হবে, কে ভোটার হবে তা নিয়েও অনেক সমস্যা। এসব নিয়ে অমরা অনেক পর্যালোচনা করেই এখন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। ক্ষুব্ধ নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা, আগামী দিনে দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনে, মূল দলে, এলাকায় যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদের অবশ্যই সব জায়গায় মূল্যায়িত করা হবে। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রদল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ