Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পেঁয়াজের ঝাঁজ বাড়ছেই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ১০ জুলাই, ২০১৯

রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। খুচরা বাজারে এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়লেও তিনদিনের মধ্যে পাইকারিতে পেঁয়াজের দামের দু’দফা উত্থান-পতন হয়েছে। এদিকে পেঁয়াজের পাশাপাশি খেটে খাওয়া মানুষের অন্যতম খাদ্য পণ্য ডিমের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। মাছ-গোশত কেনার সাধ্য নেই গরিব মানুষের, তাই আমিষের নির্ভরতা মূলত ডিমের ওপরই। সেই ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁররা পড়ে গেছেন বেকায়দায়।

কারওয়ানবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শুক্রবার ব্যবসায়ীরা এক পাল্লা (৫ কেজি) দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেন ১৩৫-১৪০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম পড়ে ২৭-২৮ টাকা। সেই পেঁয়াজের দাম গতকাল মঙ্গলবার ৪৫ টাকা কেজি দরে ২২৫ টাকায় বিক্রি হয়। এদিকে খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মানভেদে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা। গত রোববার থেকে এই দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। তবে গত শুক্রবার প্রতি কেজি ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩০-৩৫ টাকা। অর্থাৎ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ টাকা।

রোববার পাইকারিতে দাম বাড়ার প্রভাবে ওই দিন থেকেই খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামে বড় ধরনের উত্থান হলেও, গতকাল মঙ্গলবার পাইকারিতে দাম কমার প্রভাব এখনও খুচরা বাজারে পড়েনি। খুচরা বাজারে এখনও বাড়তি দামেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ানবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, বৃষ্টির কারণে গত দুদিনে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে যায়। ওই সময় আমাদের প্রতি মণ পেঁয়াজ কেনা পড়ে এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৫৫০ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম পড়ে ৩৮-৩৯ টাকা। এর সঙ্গে খরচ যোগ করে আমাদের ৪৫ টাকা দামে বিক্রি করতে হয়েছে। তবে আজ (গতকাল) বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি মণ কেনা পড়ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৩০-৩২ টাকা। এই পেঁয়াজ আমরা ৩৫-৩৬ টাকা কেজি বিক্রি করছি। এ হিসাবে আজ পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে কমেছে ১০ টাকা করে’-বলেন রুবেল মিয়া।
এদিকে শান্তিনগর গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৫৫ টাকায়। একই দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে খিলগাঁও এবং সেগুনবাগিচায়।

পেঁয়াজের বাড়তি দামের বিষয়ে শান্তিনগরের ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, বৃষ্টির কারণে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির খরচ বাড়ার একটি প্রভাব রয়েছে। পাইকারিতে দাম বাড়ার কারণে আমাদের বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কারওয়ানবাজারে তো আজ পেঁয়াজের দাম কমেছে, তাহলে আপনারা কমাচ্ছেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এই ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের কাছে যে পেঁয়াজ রয়েছে, তা বাড়তি দামে কিনে আনা। আমরা পাইকারি থেকে আবার কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারলে দাম কমিয়ে দেব।
বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়ে একধরনের মন্তব্য করেন খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. সবুর। তিনি বলেন, গত শুক্রবার অপ্রত্যাশিতভাবে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্ত সোমবার পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। পাইকারিতে দাম বাড়ার কারণে আমরাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

এদিকে পিঁয়াজের দামের পাশাপাশি ডিমের দাম বাড়ছেই। চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে ডিমের দাম বেশ কম ছিল। তখন ১০০ ডিমের পাইকারি দাম ছিল ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা। অর্থাৎ, ৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে শুরু করে সাড়ে ৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ২০ জুনের পর দাম বাড়তে থাকে। বর্তমানে খুচরা বাজারে ৯ থেকে ১০টাকায় প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের একটি খাবার হোটেলের মালিক জসীম উদ্দিন ডিম কিনতে আসেন তেজগাঁও। তিনি এক শ ডিম কিনে নিয়ে যান ৮৩০ টাকা দিয়ে। কাপ্তান বাজার ও তেজগাঁও পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীদের খাতাপত্রের হিসাব অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিল যে ডিমের দাম ৫ টাকা ৭০ পয়সায় কিনেছেন সেই ডিম ৩০ জুন ৮ টাকা ২০ পয়সা, এবং ৩ জুলাই দাম ৮ টাকা ৩০ পয়সা। পাইকারিভাবে এই দামে ডিম বিক্রি হলেও স্থানীয় দোকানদারেরা বর্তমানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ৯ টাকা থেকে সাড়ে ৯ টাকায়। এলাকাভেদে এক হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪০ টাকা দরে।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেঁয়াজ

১৩ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ