পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। লুটপাটের রাজত্ব দেশে সৃষ্টি করা হয়েছে। মেগা প্রজেক্ট করা হয়েছে শুধু মেগা লুটপাটের জন্য, মেগা দুর্নীতির জন্য। এলএনজি আমদানির নামে সরকার তাদের লোকজনকে অর্থ পাইয়ে দিতে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতীকী অনশনে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রতীকী অনশনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদÑ বিএসপিপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, যেহেতু সরকারের জবাবদিহিতা নেই, তাই তারা একে একে দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে, প্রশাসন, মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে, তারা সেনাবাহিনীকে পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এভাবে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, তাদের প্রতিপক্ষ করে, শুধু রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সফল হওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, আজকে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। কী কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো? এর একমাত্র কারণ হচ্ছেÑ এই যে এলএনজি আমদানি করা হবে, তাদের লোকগুলোকে সেখানে পয়সা পাওয়ানোর জন্য। দুর্নীতিকে পাকাপোক্ত করানোর জন্য আজকে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে এবং সেটার ভর্তুকিÑ যে বেশি দাম দিতে হচ্ছে, সেই ভর্তুকি জনগণের কাছ থেকে এই গ্যাসের দাম বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে।
গত ৩০ জুন সরকার গ্যাসের মূল্য গড়ে ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়, যা কার্যকর হয়েছে জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকেই। আবাসিক গ্রাহকদের এক চুলার জন্য মাসে ৯২৫ টাকা ও দুই চুলার জন্য ৯৭৫ টাকা দিতে হবে, যা এতদিন ছিল যথাক্রমে ৭৫০ টাকা ও ৮০০ টাকা।
দেশের লুণ্ঠনের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছেÑ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে অর্থনীতি শেষ করেছে। আপনারা সবাই জানেন, অর্থনীতি শুধু অপেক্ষা করে আছে কবে মুখ থুবড়ে পড়বে। সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যে, অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। লুটপাটের রাজত্ব দেশে সৃষ্টি করা হয়েছে। মেগা প্রজেক্ট করা হয়েছে শুধু মেগা লুটপাটের জন্য, মেগা দুর্নীতির জন্য।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সাধারণ জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়ানোর সমালোচনা করে অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ফখরুল বলেন, ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে ভ্যাটের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। একটাই মাত্র উদ্দেশ্য জনগণের পকেট কেটে আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী ও সুবিধা ভোগকারী ব্যক্তি আছেন, তাদের পকেট ভারী করার জন্য এই বাজেট তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আজকে কোথাও মানুষের কোনো শান্তি নেই, স্বস্তি নেই। প্রতিটি মানুষ এখন এই অস্বস্তিকর দমবন্ধ করা পরিবেশ থেকে, এই অগণতান্ত্রিক পরিবেশ থেকে মুক্তি চায়।
ফখরুল বলেন, এই মুক্তি এখন পুরোপুরি একাকার হয়ে গেছে এদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা বারবার বলছি, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আমরা যে যেখানে আছি সেখানে নিজেদেরকে শক্তিশালী করি, সংগঠন শক্তিশালী করি। জনগণের কাছে যাই, তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই ভয়াবহ দানব যে আমাদের বুকের ওপর বসে আমাদের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যারা মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তাদেরকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র, একটা সত্যিকার অর্থে জবাবদিহিমূলক সরকার আমরা গঠন করি।
খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় আটকে রাখা হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে প্রমাণিত হয়েছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে এ বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন নয়, এই বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরি আওয়ামী লীগের করাত্ব হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া গণতেন্ত্রর প্রতীক। যদি তিনি মুক্তি পান তাহলেই গণতন্ত্র মুক্তি হবে। সেই মুক্তির জন্য শুধু আইনি লড়াইয়ের ওপর নির্ভর করলে হবে না, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, সমস্ত মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আজকে আমরা একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য কাজ করছি, জনগণের ঐক্য নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো এবং এই সরকারের পতন ঘটাব।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই প্রতীক অনশন হয়। সকাল ৯ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই প্রতীক অনশনে বিএনপি সমর্থিত বিভিন্ন পেশার নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মাহমুদুর রহমান মান্না অনশনকারীদের অনশন ভঙ্গ করান।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহŸায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় এই কর্মসূচিতে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহŸায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিব, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ড্যাবের ফরহাদ হালিম ডোনার, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক শামসুল আলম, এ্যাবের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, অ্যাসোসিয়েশন অব এগ্রিকালচারিস্টের শামীমুর রহমান শামীম. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, মহিলা দলের বিলকিস ইসলাম, ফরিদা ইয়াসমীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।