পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রফিট বোনাস আটকে রেখে ৬০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের প্রমাণ পেয়েছে পেট্রোবাংলা গঠিত তদন্ত কমিটি। তদন্তে কোম্পানী পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির প্রমাণও মিলেছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে দায়িদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এনিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। ফলে দেশের একমাত্র এই কয়লা খনির কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে সম্প্রতি ওই প্রতিবেদনটি জমা হয়েছে। এরআগে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমানের নির্দেশে প্রফিট বোনাস আটকে রেখে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকলের কাছ থেকে মাথাপিছু ৪০ হাজার টাকা করে প্রায় ৬০ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনা গণমাধ্যমে ফাঁস হলে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত ২৯ জানুয়ারি পেট্রোবাংলার জিএম (মাইন অপরেশন) ডি এম জোবায়েদ হোসেন’কে প্রধান করে গঠিত ওই কমিটিতে গত ৩ মার্চ পেট্রোবাংলার উপ-মহাব্যবস্থাপক (নিরীক্ষা) শামীম হাসানকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। কমিটি ওই কোম্পানির ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ৬ মে তদন্ত প্রতিবেদন চ‚ড়ান্ত করেছে। প্রতিবেদনটি সংসদীয় কমিটির আগামী বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানাগেছে।
কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক কয়লা খনির উৎপাদন পরিকল্পনা ও সুষ্ঠুভাবে কোম্পানি পরিচালনা কাজে মনোনিবেশ না করে কোন ছাড়াই বদলি, শো’কজ, পরামর্শপত্র, সতর্কতাপত্র ও এসিআর খারাপ দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এসব কারণে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ক্ষোভ যেকোন সময় বিস্ফোরণে রূপ নিতে পারে। ইতোমধ্যে এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একাধিকবার বিক্ষোভ সমাবেশও করেছে। এতোকিছুর পরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান’র বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে শুধুমাত্র ব্যাখ্যা চেয়েছে পেট্রোবাংলা।
এবিষয়ে সংসদীয় কমিটির সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ইনকিলাবকে জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির অনিয়ম-দূর্নীতি নিয়ে আগেও কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তী বৈঠকে তদন্ত প্রতিবেদনটি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ফজলুর রহমান গত বছর আগস্টে বড়পুকুরিয়া কয়লা কোম্পানিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে চলতি দায়িত্ব নিয়েই অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি প্রফিট বোনাস আটকে রেখে উপর মহলকে দেওয়ার নাম করে কয়লা খনি কোম্পানির স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে মাথাপিছু এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপত্তির মুখে টাকার অংক কমিয়ে মাথাপিছু ৬০ হাজার টাকা ধার্য্য করেন। এতেও কর্মকর্তা-কর্মচারিরা আপত্তি জানালে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকে ৪০ হাজার টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। এছাড়া চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চুক্তি লংঘন করে একের পর এক অবৈধ সুবিধা প্রদানসহ কোম্পানিতে নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আনা হয়।
সূত্র জানায়, বারবার অনিয়ম-দুর্নীতি করলেও মূলত: চার খুঁটির জোরে রক্ষা পাচ্ছেন ফজলুর রহমান। এদের একজন মন্ত্রণালয়ের এবং আরেকজন পেট্রোবাংলার শীর্ষ কর্মকর্তা। এর বাইরে বাকি দুই কর্মকর্তা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতেই কর্মরত। তাদের একজন জিএম- প্রশাসন (চলতি দায়িত্ব) সাইফুল ইসলাম দিপু এবং অন্যজন ম্যানেজার (মাইনিং) মোশাররফ হোসেন। এর মধ্যে সাইফুল ইসলাম দিপু পেট্রোবাংলার পরিচালক প্রশাসনের বন্ধু। মুলত: তিনিই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থেকে ফজলুর রহমানকে রক্ষা করছেন। এর বিনিময়ে সাইফুল ইসলাম দিপুকে বড়পুকুরিয়া কয়লা কোম্পানির এমডি বিভিন্নভাবে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। পুরস্কার স্বরূপ কোম্পানি সচিব হিসেবে তাকে অতিরিক্ত দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। তিনি অবৈধভাবে কোম্পানির চারটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করে নিচ্ছেন বাড়তি টিএ-ডিএ। জিএম (প্রশাসন) হবার পরই সাইফুল ইসলাম দিপু বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে পূর্বে চাকরিচ্যুত গাড়ি চালক রফিকুল ইসলামের চাকরি ফিরিয়ে দেন। অথচ তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের পর কোস্পানির তদন্তে তার সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন দুর্নীতি মামলার আসামি ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন সরকার। সম্প্রতি তাকে জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।