পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে জুডিশিয়াল এনার্কি চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ঈশ্বরদীর রেল স্টেশনে সেই ’৯৪ সালে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৬ বছর পরে বুধবার পাবনার আদালতে যে রায় দেয়া হয়েছে, এটাতে সমস্ত জাতি বিস্মিত হয়েছে। এটা কোন ধরনের রায়? দুইটা গুলির শব্দ হয়েছে, গুলির শব্দটা কারা করেছেন, গুলি কে করেছে সেটাও এই যে কনট্রোভারশিয়াল না। রেন্টু (মতিউর রহমান রেন্টু) তো ‘আমার ফাঁসি চাই’ বইয়ের মধ্যে বলেই গেছে যে, কারা গুলি করেছে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৯ জনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ কি! ইটস এ ট্রিয়ানি। জুডিশিয়াল এনার্কি চলছে দেশের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর আহবায়ক কমিটির উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা শুধু হতাশ নই, আমরা বিক্ষুব্ধ এই রায়ে। ওই রায় প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশে কোনো বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা নেই। তিনি বলেন, এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে, সচেতনভাবে বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছে। তারা সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দিয়েছে। অর্থনীতি চরম বিপর্যয়ের মুখে। মুখে লম্বা লম্বা কথা আর হাজার হাজার বিলিয়ন ডলার দেখবেন-সব তাদের পকেট ভারী করার জন্যে। দেশের অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক কোনো প্রভাব পড়ছে না। আর কিছু পরে দেখবেন যে, এটা কলাপস করবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থা তো একেবারে শেষ। চুরি করে, ডাকাতি করে তাদের লোকজনকে নিয়ে ওটাকে আমাদের দেশী কথায় বলে ফোকলা করে দিয়েছে। আজকে তাদের নিজস্ব লোকজনেরা এভাবে তারা ব্যাংকগুলোকে তাদের একটা শোষণের যন্ত্রে পরিণত করেছে।
মেগা প্রকল্পকে মেগা চুরির প্রকল্প আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মেগা প্রজেক্টের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মেগা চুরি, মেগা দুর্নীতি। এই টাকাগুলো চুরি করে তারা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। বিদেশে নিয়ে নিয়ে বাড়ি-ঘর, ওই কানাডায় বেগমগঞ্জ, মালয়েশিয়া-লন্ডনে ওইসব বাড়িঘর করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, এদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা বলতে আর কিছু নাই, কিচ্ছু নাই এবং ইসির ওপরে জনগণের আস্থাও কমে গেছে। জনগণ এখন আর ভোট দিতে যায় না। ভোট দিতে গেলে কী অবস্থা হয় দেখেন। বগুড়াতে উপ-নির্বাচন হয়েছে ইভিএমে। ইভিএমে দেখা গেছে যে, ৪০ শতাংশের বেশি ভোটার ভোট দিতে যায়নি। ওখানে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের ভোট একাদশ নির্বাচনে আমার সঙ্গে যিনি প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন তার চেয়েও কমে গেছে। এজন্য তারা (আওয়ামী লীগ) ভোট করতে চায় না, তারা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভোট করতে চায়। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য একটাই- দেশে একদলীয শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। কারণ বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা থাকলে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব না।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলার কী অবস্থা দেখুন? ডিআইজি - সে দুদককে ঘুষ দেয়। ওসি (সোনাগাজী) সে নুসরাতের (অগ্নিদগ্ধে নিহত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান) ভিডিও ক্লিপ বাইরে ছেড়ে দেয়। আজকে আবার আরেকটা ছবি বেরিয়েছে -এক ওসি সে নর্তকীর সঙ্গে নাঁচছে, নতর্কীর ছবিটা দেয়নি। দি ইজ দ্যা সিচুয়েশন। তাদের কোনো জবাবদিহিতা বলে কিছু না, ওরা কাউকে পরোয়াও করে না। ওরা বলে যে ভাই, এই সরকার তো আমরা তৈরি করেছি, এই সংসদে যারা গেছে তারা আমাদের জন্য গেছে। কারণ আমরাই সরকার, আমরাই রাষ্ট্র, আমরাই সব। তাহলে রাষ্ট্রটা টিকবে কিসের ওপরে। যে রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস, যে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ধ্বংস, যে রাষ্ট্রের বুরোক্রেসি ধ্বংস, যে রাষ্ট্রের মিডিয়া পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত- এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী চীনে গেছেন ভাল কথা। কার দাওয়াতে গেছেন? একটা অর্থনৈতিক ফোরামের দাওয়াতে গেছেন, চীনের সরকারের দাওয়াতে যান নাই। আমরা খুব খুশি হতাম যদি দেখতাম যে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি পুরোপুরি চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসে ওটাকে প্রধান প্রায়োরিটি দিয়ে সেই কাজটি করছেন। অনেকগুলো চুক্তি সই হয়েছে দেখলাম। সেই চুক্তিগুলো হচ্ছে মেগা প্রজেক্ট চুক্তি, মেগা দুর্নীতি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সরকার বন্দি করে রেখে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীকে এই সরকার ভয় পায়। এই নেত্রী যদি একবার বের হন তাহলে যে গণতন্ত্র বাঁশী তিনি বাজাতে শুরু করবেন, তাতে যে জনস্রোত বেরিয়ে আসবে এটাকে রোখ করা সম্ভব হবে। সেই কারনেই দেশনেত্রীকে তারা (সরকার) বের হতে দিতে চায় না। বাংলাদেশের মানুষ এটা কখনো মেনে নেবে না, কখনো মেনে নেয়নি। শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। দেশ পরিবর্তন আনতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তরুন সমাজসসহ দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান ফখরুল।
সংগঠনের আহŸায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ওবায়দুল কবির খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ড্যাবের নবনির্বাচিত সভাপতি ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব ডা. আব্দুস সালাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।