Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাদরাসাছাত্র সম্পর্কে ধারণা ভুল ছিল

সেমিনারে সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৯, ১২:২৪ এএম

ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার ধারণা ছিল মাদরাসার ছাত্ররা একটু ভিন্ন ধরনের লাইফ লিড করে। ইন্টারনেটের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই। আমার ভুল ধারণা ছিল। আমি ভুল জানতাম। তিনি বলেন, আমি মনে করতাম ইন্টারনেটের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই। সাইবার স্পেস কী জিনিস, এটা বোঝে না। কিন্তু ৬ মাস ধরে ইউএনডিপির সহায়তায় আমরা একটা কাজ করেছিলাম সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে। অনেকগুলো ওয়ার্কশপ, সেমিনার করেছি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এসেছিল। তখন আমি জানতে পারি, মাদরাসার ছাত্রদের নিয়ে আমরা যেটা মনে করি, সেটা ভুল ধারণা ছিল। আমি ভুল জানতাম। গতকাল (রোববার) দুপুর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মুভ ফাউন্ডেশনের ‘বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাক্ষরতা’র গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ ও সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, এ জরিপটি যদি ৬ মাস আগে পরিচালনা করা হতো আমি খুব আশ্চর্য হতাম। কেননা ৬ মাস আগে আমার ধারণা ছিল, মাদরাসার ছাত্ররা একটু ভিন্ন ধরনের লাইফ লিড করে। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে রেডিক্যাল ছবি, ভিডিও, তথ্যের জন্য আমরা কিছু লোককে সার্বিলেন্সের আওতায় আনি। এরপর কাউকে আমরা নিয়ে আসে, সেখানের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকে জানেই না যে এটা অপরাধ। ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, কিন্তু সাইবার আইনে যে অফেন্স এটা তারা জানে না। কেউ কেউ কৌতূহলবশত লাইক, শেয়ার দিয়েছে বা কমেন্ট করেছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকে মানুষ বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আমাদের সিটিটিসিতে ৪টা বিভাগ আছে, এর মধ্যে সাইবার ক্রাইম ডিভিশন রয়েছে। তিনটা ডিভিশনে এক মাসে যে লোকজন আসেন, সাইবার ক্রাইম ডিভিশনে তিন দিনে সে তার চেয়ে বেশি মানুষ সেবা নিতে আসেন। তারা সাইবার ক্রাইমের ভিকটিম। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ মানুষ আসেন ফেসবুকে হয়রানির শিকার হয়ে।
সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান বলেন, মাদরাসা শিক্ষাকে আমরা সাধারণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। কিন্তু মাদরাসা শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। এ জায়গায় আমাদের চিন্তা করা প্রয়োজন। আগে গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হতো না। ইদানীং ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে টকশো হয়, আলোচনা হয়। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের জীবন আচার পরিবর্তন হয়েছে। আধুনিক জীবন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি। মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বিচ্ছিন্ন নয়। তারাও ইন্টারনেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা বুঝেশুনে চিন্তা করে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করে কি না। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের দায়িত্ব রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বোঝানোর দরকার রয়েছে। মাদরাসা শিক্ষা সমাজে বড় ধরনের অংশগ্রহণ রয়েছে। এটাকে বিচ্ছিন্ন করে দেখার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ কানাডার হাইকমিশনের কন্সুলার ব্রাডলি কোটস বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক ধরনের উপকারিতা আছে। কিন্ত একই সঙ্গে সহিংসতাও ছড়াতে পারে। এটি নেতিবাচক দিক। সকলের সচেতন থাকলে ইতিবাচক দিকগুলো শক্তিশালী হবে।
অনুষ্ঠানে মুভ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট সাইফুল হক পরীক্ষামূলক গবেষণার সারসংক্ষেপে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৪২ শতাংশ কওমি ছাত্র এবং ৫৮ শতাংশ আলিয়ার ছাত্রছাত্রী মোবাইল ফোনে এবং ৫ শতাংশ কওমি ছাত্র ও ১০ শতাংশ আলিয়া ছাত্রছাত্রী কম্পিউটারে নেট ব্যবহার করেন।
জরিপে অংশগ্রহণকারী কওমি ছাত্রীদের কেউ কম্পিউটার ব্যবহার করার সুযোগ পান না, যদিও তাদের শতকরা ৭০ ভাগ মোবাইল বা ট্যাব ব্যবহার করে থাকেন। এর মধ্যে মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ কওমিছাত্রীর ইন্টারনেট সংযোগ আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ