Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান

ঢাবিতে বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভায় ড. আতিউর রহমান

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৯, ১২:২৪ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি বৃৃদ্ধির হারে সবচেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। এ ধারা অব্যাহত রাখতে এটাকে টেকসই করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন কর্মমুখী শিক্ষা। আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান। সরকারি চাকরির সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এজন্য ব্যক্তিখাতকে গুরুত্ব দিতে হবে।
গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সেমিনার কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট পরবর্তী এক সভায় সম্মানীয় অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাাপন করেন প্রফেসর ড. এম আবু ইউসুফ। রিডিং ক্লাব ট্রাস্টের সহযোগিতায় ‘বাজেট পরবর্তী আলোচনা ২০১৯: প্রসঙ্গ উচ্চশিক্ষা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাবি সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসি।
ঢাবি ট্রেজারার ও সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো: কামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভার উদ্বোধক ছিলেন ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান। মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তৃতা রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
বক্তরা বলেন, প্রতি অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য বাজেট বরাদ্দদানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানসমূহের কোন খাতে কতটা প্রয়োজন তা বিবেচনা না করে একটি গতানুগতিক হারে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য প্রদত্ত এই বার্ষিক সরকারি বরাদ্দ বিশ^বিদ্যালয়ের গুণগতমান ও কাঠামোগত ঐতিহ্য বজায় রাখা ও ক্রমাগত উন্নতি করার জন্য যথেষ্ট নয়। যদিও গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের পরিমাণ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে এবং এই বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ক্রমাধারা বজায় রেখেছে কিন্তু সেটিও প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত সামান্য।
প্রফেসর ড. আতিউর রহমান বলেন, আমরা বাজেটে সাধ এবং সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করার চেষ্টা করছি। আমাদের মূল বাজেটে প্রতি বছর যে ঘাটতি রয়েছে তা ৫%-এর বেশি নয়। এটি একটি আশার দিক। গবেষণা নিয়ে তিনি বলেন, আমরা গবেষণায় যত টাকা বরাদ্দ পাচ্ছি তাও সঠিকভাবে সমন্বয় করছি কি-না তাও দেখতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে প্রফেসর ড. এম আবু ইউসুফ বলেন, আমাদের অবকাঠামোগত বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সেই সাথে সকল পর্যায়ে শিক্ষার সংখ্যাবাচক সাফল্যের সাথে গুণগতমান ও নিশ্চিত করার জন্য টেকসই পদক্ষেপে নিতে হবে। সেই লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা পাঠ্যক্রমকে এমনভাবে রূপায়ণ করতে হবে যেন জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রায়োগিক শিক্ষাও সম্পন্ন হয়। স্নাতক সম্পন্ন করার পর কর্মক্ষেত্রে তারা যেন সত্যিকারের অবদান রাখতে পারে।
এসময় তিনি টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষার উন্নয়ন ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তা হলো- উচ্চশিক্ষার জন্য উল্লেখযোগ্য হারে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি; উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিল্প ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাঝে কার্যকরী সংযোগ স্থাপন; কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এর মান ও আওতা বৃদ্ধি করা; বেসরকারি খাতকে সহায়ক ভূমিকায় সংযুক্ত করা; শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উচ্চশিক্ষা অর্জন ও জ্ঞান চর্চার জন্য আর্থিক সাহায্য ও প্রণোদনা প্রদান; গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হারে অর্থায়ন করা; উচ্চশিক্ষিত তরুণদের মাঝে উদ্যোক্তা হবার আগ্রহ সৃষ্টি ও তাদের কাজের উপযোগী পরিবেশ প্রদান ও কাঠামোগত সহায়তা প্রদান এবং নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে উচ্চশিক্ষায় উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে ইতিবাচক সহায়তা প্রদান।
উদ্বোধকের বক্তব্যে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে আগের থেকে ধারাবাহিকভাবে বাজেটের অঙ্ক বাড়ছে। এটা আশাব্যঞ্জক। আমি বিশ্বাস করি এটা অব্যাহত থাকলে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। তিনি বলেন, বাজেটে আমরা কাঠামোগত পদ্ধতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছি। যদি এর পরিবর্তন আনতে হয় তাহলে নীতি-নির্ধারণীতে বা পলিসিতে পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদেরকে কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ