পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রাইভেট হাসপাতালের অনৈতিক ব্যবসার লোভের কারণে দেশে সিজারে সন্তানপ্রসবের হার বাড়ার অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল রোববার বিচারপতি মো. মইনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আশরাফুল কামালের ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে আদালত প্রসূতির অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে নীতিমালা প্রণয়নেরও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬ মাসের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে একটি কমিটি করে এ নীতিমালা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। রিটের পরবর্তী শুনানি ৫ ডিসেম্বর।
এক সম্পূরক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে গত ২৫ জুন সুপ্রিম কোর্ট বারের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে জনস্বার্থে রিট করেন। গতকাল মূল রিট এবং সম্পূরক রিটের একত্রে শুনানি হয়। পিটিশনার ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রাস্ট-ব্লাস্ট’র পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।
আদালত থেকে বেরিয়ে রাশনা ইমাম বলেন, বিবিসিসহ জাতীয় দৈনিকে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে গত দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ। বিষয়টিকে ‘অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বিসিসি’র প্রতিবেদনে। এর ফলে বাবা মায়েদের সন্তান জন্মদানের অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। নবজাতকও ঝুঁকিতে পড়ছে। আমরা শুনানিকালে চীন এবং ব্রাজিলের দৃষ্টান্ত দিয়েছি। বলেছি, চায়নায় সিজারের বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ছিল। পরে তাদের সরকারি নীতিমালার কারণে সিজারের মাত্রা কমে যাচ্ছে। যেমনটি ব্রাজিলেও হয়েছে। তিনি বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে ৮৩ শতাংশ, সরকারি হাসপাতালে ৩৫ শতাংশ, এনজিও হাসপাতালে ৩৯ শতাংশ সিজার হয়ে থাকে। এভাবে সিজার বৃদ্ধি পাওয়া আমাদের জন্য সতর্ক সঙ্কেত। এটা থামানোর জন্যই মামলা করা।
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের রিটে উল্লেখ করা হয়, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’র তথ্য অনুসারে সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানে বেশকিছু ঝুঁকি রয়েছে। এটি প্রসূতি ও নবজাতক উভয়কেই ঝুঁকিতে ফেলে। অস্ত্রোপচারের ফলে ইনফেকশন ও মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অঙ্গহানি, জমাট রক্ত ইত্যাদির কারণে মায়েদের সুস্থতা ফিরে পেতে প্রাকৃতিক প্রসবের তুলনায় সময় বেশি লাগে। এছাড়া সিজারিয়ানের কারণে প্রাকৃতিক জন্মের লাভজনক দিকগুলোও বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। নবজাতক স্বাভাবিক প্রসবে হলে তার শরীর কিছু প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়া গ্রহণ করতে পারে। এসব ব্যাকটেরিয়া শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। অস্ত্রোপচারের ফলে এই ব্যাকটেরিয়া থেকে সে বঞ্চিত হয়। মায়ের বুকের দুধ পান করার জন্য মায়ের সঙ্গে নবজাতরে যে শারীরিক নৈকট্যে আসা দরকার সিজারিয়ান হলে সেটি বিলম্বে ঘটে। মায়ের সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে ওঠার জন্য নবাজাককে তখন কিছু সময় দূরে রাখা হয়। এ সময় মায়ের বুকের দুধও শিশুর জন্য উপকারি।
২০১৮ সালে বাংলাদেশে বাবা-মায়েরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানে খরচ করেছেন ৪ কোটি টাকারও বেশি। সিজারিয়ানে সন্তান জন্মদানের হার বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে মারাত্মক হারে বেড়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে যত শিশু জন্ম নেয় তার ৮০ শতাংশই হয় অপারেশনে। ২০১৮ সালে যত সিজার হয়েছে এর ৭৭ শতাংশই চিকিৎসাগতভাবে অপ্রয়োজনীয় ছিল। ২০০৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ৪ থেকে ৩১ শতাংশ বেড়েছে।
অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার ঠেকাতে ডাক্তারদের ওপর নজরদারির পরামর্শ দিয়েছে ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’। এ প্রবণতার জন্য সংস্থাটি আংশিকভাবে বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবা খাতের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে। সংস্থাটি বলছে, কিছু অসাধু চিকিৎসক এর জন্য দায়ী যাদের কাছে সিজারিয়ান একটি লাভজনক ব্যবসা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।