ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৃতীয় দিনেও ভিসি
নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক পদে থাকা এক নেতাকে নতুন করে সহ-সভাপতি পদ দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে শাখা ছাত্রলীগ। অভিযুক্ত ছাত্রলীগের এ নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ রাইহান ওরফে জিসান। একই কমিটিতে একসাথে দুই পদ দেয়ায় শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। নেতাদের দাবি, শাস্তির পরিবর্তে তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
গতকাল রাতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ স্বাক্ষরিত ঐ ছাত্রলীগ নেতার কাছে পাঠানো এক চিঠির মাধ্যমে তার সহ-সভাপতি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। বর্তমানে এই ছাত্রনেতা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক পদে বহাল থাকলেও তা বাতিল না করেই নতুন পদ দেয়ার বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের এই নেতার নেতৃত্বে গভীর রাতে কাজী নজরুল ইসলাম হলের পাঁচ তলায় ৫০৬ নাম্বার কক্ষে মাদকের আসর বসে। রাতে কেউ ঐ রুমের সামনে দিয়ে গেলে মাদকের গন্ধ নাকে এসে লাগে। সময় ভেদে গাঁজা, (দেশি-বিদেশী) মদের গন্ধ পাওয়া যায়। এ নিয়ে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কয়েকবার ঝামেলাও পাকিয়েছেন তিনি। অতিরিক্ত মদ্যপানে অসুস্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালেও যেতে হয়েছে বিতর্কিত এই ছাত্রলীগ নেতাকে। এছাড়া এই নেতার বিরুদ্ধে হলের সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করার অভিযোগও রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই হলের বেশ কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হলে তার রুমে প্রায় প্রতি রাতেই মাদকের আসর বসানো হয় এটা সবাই জানে। কয়েকবার বিষয়টি নিয়ে অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু কেউ তাকে কিছু বলেনি। তাই সে যখন যা খুশি তাই করে বেড়ায়।’ এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিকবার সাংবাদিকদের সাথেও অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে।
মাদকসহ নানান অপরাধের সাথে জড়িত এই নেতা শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি হওয়ার বিষয়টি জানার পর থেকে কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলতে গেলে তারা জানান, ‘এতদিন সামান্য পদে থেকেই সে হলে নানান অপকর্ম করে বেড়িয়েছে। এখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি। আগে থেকে বেশি উশৃঙ্খল আচরণ করবে।’ তাদের প্রশ্ন ছাত্রলীগের মতো এমন সংগঠনে কিভাবে এমন মাদকসেবীকে সহ-সভাপতি করা হয়।
এদিকে অভিযুক্ত জিসান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক পদে বহাল থাকা অবস্থায় ওই পদে স্থগিতাদেশ না দিয়ে নতুন করে সহ-সভাপতি পদ দেয়া নিয়েও ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জিসান বলেন, ‘আমার নামে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও সাজানো। আমি পদ পাওয়াতে আমার প্রতিদ্বন্দ্বীরা এগুলো বলছে। মাদক সেবনে অসুস্থ হওয়ায় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা হিট স্টোক ছিলো।’
মাদকের সাথে জড়িত থাকার পরও সহ-সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার না করে সহ-সভাপতি করার বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া ম্যান্টেন করে কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে নতুন পদ দিয়েছি।’
এবিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীকে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।