পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রস্তাবিত বাজেটে ইনপুট ক্রেডিট সুবিধাসহ অপ্রক্রিয়াজাত তামাকের রপ্তানীশুল্ক শূণ্য করা হয়েছে। মূল্যস্তরে সামান্য দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে তামাক কোম্পানীর লাভ বৃদ্ধি পাবে। কার্যকর ভাবে করারোপ করা হলে ৬ হাজার ৬৮০ কোটি থেকে ১১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার মধ্যে (জিডিপি’র শূণ্য দশমিক ৪ শতাংশ পর্যন্ত) অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। এই অতিরিক্ত রাজস্ব তামাক ব্যবহারের ক্ষতি হ্রাস, অকালমৃত্যু রোধ এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে ব্যয় করা সম্ভব হবে। যুব সমাজকে তামাক থেকে বিরত রাখতে তামাক কোম্পানীর প্রদত্ত সুবিধা বাতিলের পাশাপাশি রাজস্ব বাড়াতে সুনিদিষ্ট করারোপ জরুরি। রোববার (২৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি এবং বাংলাদেশ নেটওর্য়াক ফর ট্যোবাকো ট্যাক্স পলিসির সম্মিলিত আয়োজনে ‘তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপ : প্রত্যাশা ও প্রতিফলন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়ক সাইফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন, দ্যা ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এ্যড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস-বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ম্যানেজার নাসির উদ্দিন শেখ প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক এসএম আবদুল্লাহ। সভাটি সঞ্চালনা করেন প্রফেসর ডা. গোলাম মহিউদ্দিন।
প্রবন্ধে এসএম আবদুল্লাহ বলেন, তামাকের কর বৃদ্ধির মূল উদ্দেশ্য যুব সমাজকে তামাক হতে বিরত রাখা এবং তামাক সেবিদের তামাক ত্যাগ করতে উৎসাহী করা। বাংলাদেশের ৭২ শতাংশ মানুষ নি¤œস্তরের সিগারেট সেবন করে। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে এ স্তরের সিগারেটের প্রতি শলাকার দাম বেড়েছে মাত্র ২৯ পয়সা। এ স্বল্প হারের কর বৃদ্ধি পক্ষান্তরে তামাক কোম্পানীর মুনাফা বৃদ্ধি করবে। তামাক সেবনকারী ও যুবকদের তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহীতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে না। তামাক পাতা রপ্তানিতে শুল্ক মুক্ত সুবিধা রেখে নতুন করে জমিতে তামাক চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যা দেশের খাদ্যের সয়ংসম্পূর্ণতাকে হুমকির মধ্যে ফেলবে।
সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাকের ব্যবহার কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকপণ্যের মূল্য বাড়ানো। কার্যকরভাবে কর বাড়ালে তামাকপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পায় এবং সহজলভ্যতা হ্রাস পায়। উচ্চমূল্য তরুণদের তামাক ব্যবহার শুরু নিরুৎসাহিত করে এবং বর্তমান ব্যবহারকারীদেরকে তামাক ছাড়তে উৎসাহিত করে। তামাকের উপর কর বাড়িয়ে প্রায় ৩.২ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে।
মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে আরোপিত সম্পুরক শুল্কের হার অপরিবর্তিত থাকায় এবং কোন সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ না করায় বর্ধিত মূল্যের একটি অংশ তামাক কোম্পানীর ঘরে উঠবে ফলে তামাক কোম্পানী আগের চেয়ে বেশী লাভবান হবে। সরকারের এই পদক্ষেপে বিগত বছরের তুলনায় মূল্যস্তরভেদে তামাক কোম্পানিগুলোর আয় ৩১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।
এ্যড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, অপ্রক্রিয়াজাত তামাকের বিদ্যমান ১০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক তুলে দেয়ার পাশপাপাশি প্রক্রিয়াজাত তামাকপণ্য রপ্তানি উৎসাহিত করতে শূন্য শতাংশ রপ্তানি শুল্ক প্রস্তাবিত বাজেটেও অব্যাহত রাখা হয়েছে, যা সম্পুর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং চরম জনস্বাস্থ্যবিরোধী পদক্ষেপ। বহুজাতিক ও দেশীয় তামাক কোম্পানিগুলো এখন বাংলাদেশকে তামাক উৎপাদন ভূমি হিসেবে ব্যবহার করায় তামাক চাষ বৃদ্ধি পাবে ফলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। প্রস্তাবিত অর্থ বিল ২০১৯ এর ধারা ৭৬ এ ২০১২ সালের ভ্যাট আইনের ধারা ৪৬ সংশোধনের মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে ইনপুট ক্রেডিট সুবিধা প্রদান করা হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের পরিপন্থি।
নাসির উদ্দিন শেখ বলেন, সিগারেটের মূল্যস্তর অপরির্তিত থাকায় দাম বাড়ার কোন সুফল পাওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা ব্রান্ড পরিবর্তন করে নি¤œ ব্রান্ডে চলে আসবে ফলে দাম বাড়ার পরও ব্যবহারকারী কমবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।