বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
মহান রাব্বুল আলামিন যুগে যুগে, কালে কালে, বিভিন্ন নবী ও রাসূলগণের কাছে একশত খানা সহিফা বা ক্ষুদ্র পুস্তিকা এবং চারখানা বড় কিতাব বা বৃহৎ সংবিধানগ্রন্থ নাজিল করেছেন। তন্মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হচ্ছে আল কোরআন, যা পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর নাজিল হয়েছে। কোরআনুল কারিমে কোরআন শব্দটির উপস্থিতি একটি বিস্ময়ের ব্যাপার। লক্ষ করলে দেখা যায়, আল কোরআনে কোরআন শব্দটি ৩৬টি সূরায় সর্বমোট ৬৩ বার এসেছে। আসুন এবার সেদিকে নজর দেয়া যাক।
১. সূরা বাকারাহর ১৮৫ নং আয়াতে কোরআন শব্দটি ১ বার এসেছে। ২. সূরা নিসার ৮২ নং আয়াতে কোরআন শব্দটি এসেছে ১ বার। ৩. সূরা মায়িদাহর ১০১ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ৪. সূরা আনআমের ১৯ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ৫. সূরা আরাফের ২০৪ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ৬. সূরা তাওবাহর ১১১ নং আয়াতে এসছে ১ বার। ৭. সূরা ইউনুসের ১৫, ৩৭ ও ৬১ নং আয়াতে মোট ৩ বার এসেছে। ৮. সূরা ইউসুফের ৩ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ৯. সূরা রাদের ৩১ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ১০. সূরা হিজরের ১, ৮৭ ও ৯১ নং আয়াতে মোট এসেছে ৩ বার।
২.
১১. সূরা নাহলের ৯৮ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ১২ সূরা বনী ইসরাঈলের ৯, ৪১, ৪৫, ৪৬, ৮২, ৮৮, ৮৯ ও ১০৬ নং আয়াতে সর্বমোট ৮ বার এসেছে। ১৩ সূরা কাহফের ৫৪ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ১৪. সূরা তাহার ২, ১১৩ ও ১২৪ নং আয়াতে সর্বমোট এসেছে ৩ বার। ১৫. সূরা ফুরকানের ৩০ ও ৩২ নং আয়াতে এসেছে মোট ২ বার। ১৬. সূরা নামলের ১, ৬, ৭৬ ও ৯২ নং আয়াতে এসেছে মোট ৪ বার। ১৭. সূরা কাসাসের ৮৫ নং আয়াতে ১ বার। ১৮. সূরা রূমের ৫৮ নং আয়াতে ১ বার। ১৯. সূরা ইয়াসীনের ২ ও ৬৯ নং আয়াতে এসেছে মোট ২ বার। ২০. সূরা সাদের ১ নং আয়াতে ১ বার।
২১. সূরা যুমারের ২৭ ও ২৮ নং আয়াতে মোট এসেছে ২ বার। ২২. সূরা হা-মীম সাজদাহর ৩, ২৬ ও ৪৪ নং আয়াতে এসেছে মোট ৩ বার। ২৩. সূরা শুরার ৭ নং আয়াতে ১ বার। ২৪. সূরা আহকাফের ২৯ নং আয়াতে ১ বার। ২৫. সূরা মুহাম্মাদের ২৪ নং আয়াতে ১ বার। ২৬. সূরা কাফের ১ ও ৪৫ নং আয়াতে এসেছে মোট ২ বার। ২৭. সূরা কামারের ১৭, ২২, ৩২ ও ৪০ নং আয়াতে সর্বমোট ৪ বার এসেছে। ২৮. সূরা আর রাহমানের ২ নং আয়াতে ১ বার। ২৯. সূরা ওয়াকিয়ার ৭৭ নং আয়াতে ১ বার। ৩০. সূরা হাশরের ২১ নং আয়াতে ১ বার।
৩১. সূরা জিনের ১ নং আয়াতে ১ বার। ৩২. সূরা মুযযাম্মিলের ৪ ও ২০ নং আয়াতে মোট ২ বার এসেছে। ৩৩. সূরা কিয়ামাহর ১৭ ও ১৮ নং আয়াতে মোট ২ বার এসেছে। ৩৪. সূরা দাহরের ২৩ নং আয়াতে ১ বার। ৩৫. সূরা ইনশিকাকের ২৬ নং আয়াতে ১ বার। ৩৬. সূরা বুরুজের ২১ আয়াতে ১ বার এসেছে। মোটকথা, সর্বমোট ৩৬টি সূরায় কোরআন শব্দটি সর্বমোট ৬৩ বার এসেছে।
আমরা আরো লক্ষ করেছি যে, সূরা ইউসূফের ২ নং আয়াতে এবং সূরা যুখরুফের ৩ নং আয়াতে কোরআন শব্দের বানানে আলিফের স্থলে হামযা রয়েছে। এজন্য তা গণনায় আনা হয়নি। কারণ, আমরাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ‘কোরআন’ শব্দের পরিসংখ্যান ভিত্তিক একটি নতুন দিগন্তের সন্ধান করা। নতুন দিগন্তটি হলো ৬৩ সংখ্যাটি। এ সংখ্যাটি বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর দুনিয়ার হায়াতের ৬৩ বছরের প্রতিই ইঙ্গিত প্রদান করে।
আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আমি কোরআনকে উপদেশ গ্রহণ করার জন্য সহজ করে দিয়েছি। তা হতে উপদেশ গ্রহণ করার কেউ আছে কি? বস্তুত বিশ্বজগতের ¯্রষ্টার ভালোবাসার সৃষ্টি মানুষ যাতে পৃথিবীতে তার প্রতিনিধিত্বসুলভ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারে, তাদের চলার পথ যাতে সত্যের আলোকে উদ্ভাসিত হয়, সেজন্য দয়াময় পরম দয়ালু বিশ্বজগতের প্রতিপালক তার সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ বার্তাবাহক বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর মাধ্যমে দিশারী আল কোরআন নাজিল করেছেন। ওহিয়ে মাতলু হিসেবে স্বীকৃত ও পঠিত আল কোরআনের জীবন্ত রূপ ছিলেন মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)। আল কোরআনে বিধৃত কোরআন শব্দের পরিসংখ্যান এ কথার সাক্ষ্যই চিরকাল প্রদান করবে। সুবহানাল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।