Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেনী-ডাকাতিয়া নদীর উপর নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো

নিয়মিত ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে জনসাধারণ

ফেনী থেকে মো. ওমর ফারুক | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

ফেনীর দাগনভ‚ইয়ার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের একাংশে ছোট ফেনী নদী ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের একাংশে ডাকাতিয়া নদীর উপর অবস্থিত প্রায় ৩০০ ফুট লম্বা একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো অবস্থিত। সাঁকোর পাশের তিন ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাঁকোর ওপর দিয়ে সিন্দুরপুর ইউনিয়নের উত্তর কৈখালী, দক্ষিণ কৈখালী, কৌশল্যা, নারায়ণপুর, সাদেকপুর, সেকান্দরপুর, ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের উত্তর আবুপুর, দক্ষিণ আবুপুর, এলাহিগঞ্জ; কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের বাকগ্রাম, দক্ষিণ বান্দেরজলা, উত্তর বান্দেরজলা, ধোপাখিলা, নারায়ণকুরি এবং গুণবতী ইউনিয়নের আকদিয়া, চাঁপালিয়াপাড়া, বৈধড়া, খাডরা, গুণবতী গ্রামের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পার হয়।

স্থানীয়রা আরো জানান, গত ৮ বছর আগে জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে এলাকার সবাই মিলে চাঁদা তুলে এই সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের স্্েরাতে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো ভেসে যায়। বর্ষা শেষে আবার আশপাশের গ্রামের লোকজন চাঁদা তুলে সাঁকোটি পূর্ণ নির্মাণ করে। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর।

দুই বছর আগে এই সাঁকো পার হওয়ার সময় একজন মাদরাসা ছাত্র পড়ে মারা যায় এবং সাঁকো পারাপারে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এখানে সাঁকোর পরে আরেকটি বিকল্প পথ হচ্ছে একটিমাত্র নৌকা। কিন্তু এই নৌকাটি ব্যবহার করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। নদী পারাপারে নৌকার মাঝি জনপ্রতি নিচ্ছেন ১০ টাকা করে। তাই জনসাধারণ নৌকায় না উঠে বাঁশের সাঁকোকে বেচে নিয়েছেন। এখানে জনসাধারণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত দুই বছর আগে কুমিল্লা-চৌদ্দগ্রামের কৃতিসন্তান সাবেক রেলমন্ত্রী মজিবুল হক নদীর উপর বাঁশের সাঁকোর স্থানটি পরিদর্শন করে গেছেন।

তিনি তখন তিন উপজেলার যৌথ উদ্যোগে এখানে একটি সেতু নির্মাণ করার প্রতিশ্রæতি দেন। এখানে আরো পরিদর্শনে আসেন ফেনী সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের বর্তমান এমপি মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী যিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণাকালে সেতুটি নির্মাণের ব্যাপারে জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেতু নির্মাণের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

সাঁকোর জায়গায় সেতু নির্মাণ করা হলে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বক্সগঞ্জ এলাকার মানুষও সেতুটি ব্যবহার করে সহজে ফেনী যাতায়াত করতে পারবে।

এ বিষয়ে সিন্দুরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল জানান, সাঁকোটি রেলমন্ত্রী মজিবুল হক নিজে সরেজমিনে পরিদর্শন করে গেছেন। পরে তিনি দুইবার ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়েছেন তারা এখানে জরিপ করে গেছেন। এখানে একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পরে অদৃশ্য কারণে আর হয়নি। তবে এব্যাপারে পূনরায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন জমা দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন বলেন, তিনি ছোট ফেনী নদীতে বাঁশের সাঁকো সম্পর্কে অবগত না তবে তিনি সেখানে সরেজমিন পরিদর্শনে যাবেন। এলাকাবাসী যদি চায় তিনি এবিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ