পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিধি ভেঙে স্বাস্থ্য সেবার নামে রমরমা ব্যবসা চলছে যশোরে। নিয়ম রয়েছে সরকারি হাসপাতালের কমপক্ষে ৫০০ গজের মধ্যে কোন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন করা যাবে না। অথচ নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যশোর ২৫০ বেড হাসপাতাল ঘিরে গড়ে উঠেছে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। হাসপাতালের গেটের সামনেই রয়েছে ১৫টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক। এসবের দূরত্ব হবে মাত্র ১৪ থেকে ১৫ গজ। আর প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ গজের মধ্যে রয়েছে আরো ১৩টি।
এসব বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অধিকাংশের বিরুদ্ধে রোগীদের সাথে প্রতারণা, দালালের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালের রোগী ধরার ফাঁদ পাতা ও স্বাস্থ্য সেবার নামে নানামুখী ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। সরকারি হাসপাতালের অধিকাংশ ডাক্তার এসব বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডিউটি করেন। কোন কোন ডাক্তার বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবসায়িক পার্টনারও।
স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা এসব জানেন দেখেন শোনেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিজেদের চোখ এমনভাবে ঘুরিয়ে রাখেন যেন কিছুই হয়নি। যশোর সিভিল সার্জন দফতর সূত্র জানায়, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপনে শুধু ৫০০ গজের মধ্যেই করার বিষয় নয়, অনেক নিয়ম কানুন আছে। কিন্তু কেউই তা মানে না।
সিভিল সার্জন ডা. দিলিপ কুমার রায় জানান, এ ব্যাপারে বিজি প্রেসের রুলস এ্যান্ড রেগুলেশনে সুনির্দিষ্ট কিছু নেই। তবে বিএসআর বইয়ে পরিস্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৫০০ গজের মধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক স্থাপন করা যাবে না। সরকারি হাসপাতালের গা ঘেষে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক স্থাপনের ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত।
তিনি জানান, সিভিল সার্জন অফিস থেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ব্যাপারে ডিজি অফিসের নির্ধারিত ফরম পূরণ করে মতামত দেওয়া হয়। তাতে লোকেশন ফাইন্ড আউটের একটা ক্লজ আছে। সরেজমিন তদন্তপূর্বক ফরমটি পূরণের কথা। ডিজি অফিস লাইসেন্স দেওয়ার মালিক। তারা কোথায় কিভাবে দিয়েছে তার জবাব আমি দিতে পারবো না। বর্তমানে সরকার টোটাল বিষয়টি একটা সিষ্টেমে আনার জন্য নতুন নিয়মে কাজ শুরু করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) অনলাইনে লাইসেন্স প্রদান করবে। তাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নতুন ও পুরাতন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সবকিছুই এসে যাবে। নতুন নিয়মে বিধিবহির্ভুত বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক উচ্ছেদ বা বাতিল হবে কিনা সেটি বলা যাচ্ছে না। সূত্র মতে, যশোরের মতো সরকারি হাসপাতাল ঘিরে এত অধিক সংখ্যায় বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন নজিরবিহীন।
শুধু তাই নয়, ৩০ লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র আধুনিক চিকিৎসাস্থল যশোর ২৫০ বেড হাসপাতালেরও সেবার মান একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। চরম অনিয়ম ও অব্যবস্থার কারণে রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ডাক্তারের বদলে ইটার্ন ডাক্তাররা বেশীরভাগ সময় রোগী দেখেন।
সূত্র জানায়, ২৫০ বেড হাসপাতালে মোট ৩৯ জন ডাক্তার কর্মরত রয়েছেন। তার মধ্যে ২/৪ জন বাদে সবাই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের নামে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগী দেখেন। সূত্র মতে, বাস স্ট্যান্ডগুলোর কলারম্যানের ভ‚মিকা পালন করছে হাসপাতালের দালালরা। হাসপাতালে রোগী আসা মাত্রই নানা কৌশলে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। একইভাবে ডাক্তাররাও রোগীদের বলেন ‘হাতের কাছেই অত্যাধুনিক বেসরকারি হাসপাতাল আছে। টেস্ট হয় ভালো, যান ওখানে।’ এতে যথারীতি ওই ডাক্তারের নামে চলে যায় নির্দিষ্ট অঙ্কের কমিশন।
যশোর শহরের ঘোপে হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা ইকরাম হোসেন জানালেন, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না রোগীরা। বেসরকারি হাসপাতালেও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। স্বাস্থ্য সেবার নামে চলছে রীতিমতো ব্যবসা।
২৫০ বেড হাসপাতালের সিংহভাগ রোগী ডাক্তারদের স্লিপ হাতে নিয়ে হাসপাতাল গেটের সামনের ইবনে সিনা, কিংস, দেশ, ইউনিক, জেস, স্ক্যান ও লাইফ কেয়ারসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে টেস্ট করছেন। অভিযোগ, ইবনে সিনা ২৫% ছাড়ে স্বাস্থ্য সেবার চটকদারি প্রচার চালিয়ে ‘গলাকাটা’ দাম হাঁকছে। বেবি নিডল, এ্যালকোপ্যাড, ইনজ্যুরি প্যাড যার দাম ৬/৭ টাকা সেটি নানা কৌশলে আদায় করছে শতাধিক টাকা।
অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও প্রায় একই অবস্থা। মাগুরা সদর উপজেলার ছয়চার গ্রামের তবিবর মোল্যা এসেছিলেন ইবনে সিনায় হরমোন টেস্ট করতে। স্লিপ করা হয় দুই হাজার ৭০০ টাকা। তিনি সেই একই টেস্ট করান ন্যাশনাল প্যাথলজিতে ৯০০ টাকায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।