পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুই দেশের সীমান্তে নিহতের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে বলে স্বীকার করলেও একে হত্যাকাণ্ড বলতে নারাজ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক (ডিজি) রজনীকান্ত মিশ্র। তার মতে, এটা অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু।
গতকাল শনিবার পিলখানা সদর দপ্তরে বিজিবি ও বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে চার দিনব্যাপী বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রথম পাঁচ মাসে সীমান্তে সংঘটিত ১৫টি হত্যাকাণ্ডের কারণ কী- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে এমন মন্তব্য করেন বিএসএফ প্রধান।
বিএসএফ প্রধান বলেন, হত্যাকাণ্ড শব্দের সঙ্গে তিনি একমত নন। সীমান্তে অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু হচ্ছে। সম্প্রতি এই মৃত্যুর সংখ্যা কিছু বেড়েছে।
পিলখানার এ বৈঠকটি বিজিবি-বিএসএফের মধ্যকার ৪৮তম সম্মেলন। এতে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বিএসএফ প্রধান আরো বলেন, যখন কোনো বিকল্প থাকে না, প্রাণ বাঁচাতে বিএসএফ প্রতিহত করে শুধু। মানুষের জীবন তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সব ক’টি ঘটনাই ভারতীয় ভূমিতে ঘটেছে, আর তাতে বিএসএফ সদস্যরাও প্রাণ হারিয়েছেন।
তার ভাষ্য, গত বছর ভারতীয় ভূমিতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের একজন বাংলাদেশি, ছয়জন ভারতীয়। একজন জওয়ানও মারা গেছেন, ৩৯ জন আহত হয়েছেন। এ বছরও তিনজন নিহত হয়েছেন। তারা প্রতিটি ঘটনায় নিয়মমাফিক থানায় মামলা করেছেন এবং তদন্ত করেছেন। ভারতীয় ভূমিতে দুর্বৃত্তদের সহযোগীদের গ্রেফতার করেছেন। বিজিবি ও বিএসএফকে সীমান্তের যেসব জায়গা দুর্বল সেসব জায়গা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন। এতে করে অবৈধ অনুপ্রবেশের মতো ঘটনা ঘটবে না। মাস কয়েক আগে সাতক্ষীরা সীমান্তের কাছে এক যুবকের মুখ ও পায়ুপথে বিএসএফ পেট্রল ঢেলে হত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিএসএফ প্রধান যুবক সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, সীমান্তে মারণাস্ত্র ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত রয়েছে তাদের। বিএসএফকে এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি মাঝে মধ্যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দুর্বৃত্তরা বিএসএফের ওপর পাথর ছুড়েছে, লাঠিপেটা করেছে, কখনো কখনো দা দিয়ে হামলা করেছে। কোনো বিকল্প না থাকায় প্রাণে বাঁচাতে খুব অল্প কিছু ঘটনায় বিএসএফ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
ফেলানী হত্যাকাণ্ড ও মেহেরপুরে আম পাড়তে গিয়ে এক বালকের বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার পর বিচার হয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিএসএফের সর্বোচ্চ গুরুত্ব রয়েছে এ বিষয়গুলোর প্রতি। ফেলানীর বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আদালতে ট্রায়াল চলছে।
ভারত থেকে ইয়াবা বাংলাদেশে ঢুকছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ ডিজি বলেন, ইয়াবা আসছে তৃতীয় একটি দেশ থেকে। তবে এর মধ্যে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ৫০ হাজার ইয়াবাসহ দুই নারী প্রবেশ করেছিল। তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিজিবি মহাপরিচালক মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, কিছু বিষয়ে তারা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। দুই পক্ষ মাদকদ্রব্য চোরাচালান, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালান ও নকল টাকা রোধ নিয়ে আলোচনা করেছে। দু’টি বাহিনীর কেউ যেন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম না করে, সে ব্যাপারেও কথাবার্তা হয়েছে।
ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে জোরদার করতে বিএসএফ দিল্লি থেকে একটি মোটরসাইকেল র্যালি নিয়ে চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর বিজিবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাকায় পৌঁছবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন করে আবারো ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। ভারত জানিয়েছে, বাংলাদেশ এ ধরনের সব ঘাঁটি নির্মূল করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে এবং এতে তারা সন্তুষ্ট।
বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারতে জেএমবিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে বিএসএফ কী বলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈঠকে এ নিয়ে সে অর্থে আলোচনা হয়নি। তবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হয় না।
ভারতে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছিল। এর সত্যতা কতটুকু এমন প্রশ্নে বিজিবির প্রধান বলেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাজ সীমান্ত পেরিয়ে কেউ এদিক-ওদিক গেল কি না দেখা। সঙ্গে আরো কিছু বিষয় নজরদারি করা হয়। এ বৈঠকে জঙ্গি হামলা নিয়ে আলোচনার সুযোগ ছিল না।
গত বুধবার থেকে বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে চার দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন শুরু হয়। গতকাল তা শেষ হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।